Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় শ্বশুরবাড়িতে ঈদ করতে এসে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন ঢাকার চাঞ্চল্যকর বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আলাউদ্দিন (৩৬)।
শুক্রবার (১৫ জুলাই) দিনগত রাতে শিবগঞ্জ থানার পুলিশ উপজেলার মোকামতলা বাজার সংলগ্ন তার শ্বশুরবাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে।
আলাউদ্দিন পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার ছোট ধাপ গ্রামের হবিবুর রহমানের ছেলে। তিনি ২০১২ সালে বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পলাতক ছিলেন।
গ্রেফতারের বিষয়ে শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক কুমার দাস বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার ভোর রাতে মোকামতলায় আলাউদ্দিনের শ্বশুর কাজী নুরুল ইসলামের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
শ্বশুরবাড়িতে ঈদ উদযাপন করতে বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) রাতে স্ত্রীসহ বেড়াতে আসেন তিনি। শুক্রবার রাতে তিনি কর্মস্থল কক্সবাজার জেলার টেকনাফে চলে যেতেন। আলাউদ্দিন টেকনাফে এনজিও ব্রাকে চাকরি করেন। তার স্ত্রী নাহিদ ফেরদৌস টেকনাফে একটি বিদেশি সাহায্য সংস্থায় চাকরি করেন। সেখানেই আলাউদ্দিনের সঙ্গে পরিচয় হলে ২০১৬ সালে তারা বিয়ে করেন।
এর আগে, আলাউদ্দিন গাজীপুরে একটি পোল্ট্রি ফার্মে চাকরি করতেন। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতেন এবং ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
২০১২ সালে আলাউদ্দিন যখন বিশ্বিদ্যালয়ের ৩য় বর্ষের ছাত্র ছিলেন তখন সেই বছরের ৯ ডিসেম্বর আলাউদ্দিনসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে প্রকাশ্যে দর্জি দোকান কর্মচারী বিশ্বজিৎ দাসকে হত্যা (২২) করেন। কোনো কারণ ছাড়াই হত্যা করা হয় বিশ্বজিৎকে। ঘটনার সময় সাংবাদিক, পুলিশ, শত-শত মানুষ হত্যাকাণ্ড দেখলেও কেউ বিশ্বিজৎকে উদ্ধারে এগিয়ে আসতে পারেননি। কারণ বিশ্বজিৎকে ঘিরে ছিলেন ২০/২৫ জন অস্ত্রধারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মী।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিশ্বজিতের ভাই উত্তম দাস ঢাকার সূত্রাপুর থানায় মামলা করেন। মামলা তদন্ত শেষে পুলিশ চার্জশিট দাখিল করলে ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ২১ জন আসামির মধ্যে আট জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারদণ্ড প্রদান করেন। ২১ জন আসামির মধ্যে আটজন পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় এবং অপর ১৩ জন ঘটনার পর থেকেই পলাতক।
পরে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের পক্ষে আপিল করা হলে হাইকোর্ট দু’জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন এবং চার জনের মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন সাজা এবং দু’জনকে খালাস দেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের মধ্যে আলাউদ্দিন একজন। বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের সময় তার বয়স ছিল ২৬ বছর। মামলার এজাহারে আলাউদ্দিন ৪নং আসামি ছিলেন।
বগুড়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ড এবং রায় ঘোষণার পর থেকেই আলাউদ্দীন বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে পালিয়ে ছিলেন। অবশেষে তাকে ধরা গেল।