চট্টগ্রাম

বৃষ্টির সাথে জোয়ার, ডুবল নগরী


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ফের তলিয়ে গেছে নগরীর বিস্তীর্ণ এলাকা। গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় পা পিছলে ড্রেনের পানিতে ডুবে যান এক ব্যক্তি। রাত পর্যন্ত তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়াও, নগরীর বিভিন্ন এলাকার ড্রেন ও গর্তে পড়ে অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত ১১০ মিলিমিটার বৃষ্টির সাথে যোগ হয়েছে জোয়ারের পানি।

এতেই তলিয়ে যায় অধিকাংশ নিচু এলাকা। এত পানি নগরবাসী আগে দেখেনি বলে অভিযোগ করেন কেউ কেউ। সকাল থেকে নগরীর সড়কগুলো কোমর থেকে হাঁটু পানিতে ডুবে ছিল। চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের ৫৫ শতাংশ অগ্রগতির পরও সুফল না মিলায় হতাশ নগরবাসী। তবে অল্প সময়ের মধ্যে প্রচুর বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় সাময়িক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের।

বৃষ্টি ও জোয়ারের পানির কারণে সড়কে যানবাহন না পেয়ে একদিকে মানুষ যেমন দুর্ভোগে পড়েছে, অন্যদিকে পানিতে ডুবে ইঞ্জিল বিকল হয়েছে বেশ কিছু যানবাহনের। এরফলে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকাসমূহে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে পানি সরে গেলেও কিছু কিছু নিচু এলাকায় বিকেল পর্যন্ত পানি জমে থাকতে দেখা যায়। গৃহবন্দী হয়ে পড়েন নগরীর নিচু এলাকার বাসিন্দারা। এছাড়া, দোকান ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন ব্যবসায়ীরা।

নগরীর মুরাদপুর, ২ নং গেট, বহদ্দারহাট, চকবাজার, শুলকবহর, কাতালগঞ্জ, বাকলিয়া, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ, আগ্রাবাদ, হালিশহরসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কের কোথাও হাঁটু ও কোমর পানির জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। অতিরিক্ত পানির কারণে এসব এলাকার বাসিন্দারা পানিবন্দী হয়ে পড়েন।

সাইফুল ইসলাম নামের এপিক হেলথ কেয়ারের মার্কেটিংয়ের এক কর্মকর্তা জানান, অফিসের কাজে বাসা থেকে বের হয়ে দেখছি যাওয়ার কোন অবস্থা নেই। মোটারসাইকেল বের করে আবার মোটরসাইকেল বাসায় রেখে এসেছি। এরপর রিকশা ও পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে হয়েছে। চকবাজারসহ নগরীর বিভিন্ন সড়ক ও অলিগলি পানিতে ডুবে ছিল। এতে মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। জলাবদ্ধতা থেকে যে মানুষ কখন মুক্তি পাবে একমাত্র আল্লাহই জানে।

নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) প্রায় সাত হাজার ৯২৬ কোটি টাকায় দু’টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এরমধ্যে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন হচ্ছে ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ প্রকল্প। অন্যদিকে, দুই হাজার ৩১০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করছে ‘কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু হতে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ’ প্রকল্প। সভায় সিডিএ’র পক্ষ থেকে দু’বছর মেয়াদ বাড়ানোর কথা বললেও আইএমই বিভাগ এক বছরের মেয়াদ বৃদ্ধি করে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সিডিএ’র ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয় একনেক। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) স্বাক্ষর করে সিডিএ। এরপর ২৮ এপ্রিল প্রকল্পের কাজ শুরু হয়।

এছাড়াও, দুই হাজার ৩১০ কোটি টাকা ব্যয়ে চলছে ‘কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু হতে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ’ প্রকল্প।