প্রধান পাতা

‘বেপরোয়া’ মেয়েকে পথে ফেরাতে না পেরেই হত্যার পরিকল্পনা


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

মেয়ে ববিতা ইয়াসমিনের বেপরোয়া চলাফেরা মেনে নিতে পারেননি বাবা বজলুর রহমান। তাকে সঠিক পথে ফেরানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েই হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি।

পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ববিতার মাথায় আঘাত করে হত্যা করেন তিনি। পরে বস্তাবন্দি করে মরদেহ ভৈরব নদে ফেলে দেন।  

শনিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় মেহেরপুর সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) রাসুল সামদানি এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে সকালে মেয়ের খুনি বজলুর রহমানকে সদর থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম অভিযান চালিয়ে আটক করেন। পরে থানায় এনে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মেয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেন তিনি।

পরে বিকেলে মেহেরপুর আদালতে তোলা হলে ম্যাজিস্ট্রেট বেগম রাফিয়া সুলতানার কাছে মেয়ে ববিতাকে হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন বজলুর রহমান। জবানবন্দি শেষে বজলুর রহমানকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

বজলুর রহমান মেহেরপুর সদর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের মৃত আওলাদ হোসেনের ছেলে।

সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) রাসুল সামদানি আজাদ বলেন, ববিতার মা রেহেনা বেগম মমতাজ দীর্ঘ ৫ বছর ধরে প্রবাসে (মরিশাস) থাকেন। সেই থেকে ববিতা (২২) নিজের ইচ্ছামত চলাফেরা করতো। তার বেপরোয়া চালচলনে অতিষ্ঠ ছিল পুরো পরিবার। তাকে সঠিক পথে ফেরাতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন বজলুর রহমান।  ঘটনার দিন ববিতা তার এক আত্মীয় বাড়িতে ছিলেন। এসময় কৌশলে তার বাবা তাকে সেই আত্মীয়ের বাড়ি থেকে নিয়ে আসেন। পরিকল্পনামতে পথিমধ্যে ববিতাকে পেছন থেকে সজোরে হাত দিয়ে মাথায় আঘাত করেন তিনি। এতে ববিতা অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে একটি কলা বাগানে ফেলে রেখে বাড়িতে চলে যান বজলুর রহমান। রাত ১১টার দিকে সেই কলা বাগানে গিয়ে দেখেন মেয়ের মরদেহ শক্ত হয়ে গেছে। পরে তিনি বাড়ি ফিরে গিয়ে প্লাস্টিকের বস্তা নিয়ে এসে মরদেহ বস্তাবন্দি করে পার্শ্ববর্তী ভৈরব নদে ফেলে দেন।

তিনি আরো বলেন, এ হত্যার ঘটনায় আমাদের হাতে তেমন কোনো ক্লু ছিল না। শুধুমাত্র মেয়ের পরনে থাকা সালোয়ার কামিজের মাধ্যমে অপরাধীকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি।  

রাসুল সামদানি আজাদ আরো বলেন, ওই তরুণীর গলিত মরদেহ উদ্ধারের পর এলাকার লোকজন পরনের সালোয়ার কামিজ দেখে তাকে ববিতা বলে শনাক্ত করলেও তার বাবা তাকে নিজের মেয়ে বলে শনাক্ত করেনি। এই সূত্র ধরে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়। পরে দুই মাসের তদন্তে উঠে আসে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য।

মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ দারা খান বলেন, কোনো রকম ক্লু না থাকায় অপরাধীকে শনাক্ত করতে আমাদের অনেক বেগ পেতে হয়েছে। থানা পুলিশের একটি চৌকস টিমের ব্যাপক অনুসন্ধানে এটা সম্ভব হয়েছে। আসামীকে বজলুর রহমানকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৫ মার্চ সদর থানার কুলবাড়িয়া গ্রামের হামেশতলা পাড়া সংলগ্ন ভৈরব নদ থেকে এক তরুণীর বস্তাবন্দি অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে সদর থানা পুলিশ। সেসময় পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় ময়নাতদন্ত শেষে মেহেরপুর পৌর কবরস্থানে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে তাকে দাফন করা হয়।