আন্তর্জাতিক

ভারতে করোনার টিকাদান কর্মসূচি শুরু


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

ভারতে মহামারি করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার কর্মসূচি শুরু করেছে ভারত । শনিবার (১৬ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

এ সময় নরেন্দ্র মোদি বলেন, ভ্যাকসিন তৈরি হতে অনেক সময় লাগে। কিন্তু দেশের বিজ্ঞানিরা দিন-রাত এক করে পরিশ্রম করেছেন। তাদের প্রশংসা প্রাপ্য। ৩ কোটি স্বাস্থ্যকর্মীকে ভারত সরকার বিনামূল্যে টিকা দেবে। করোনার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া কর্মীদের আগে টিকা দিয়ে দেশ ঋণ শোধ করবে। দ্বিতীয় দফায় ৩০ কোটি মানুষ টিকা পাবেন। ধীরে ধীরে সবাইকেই টিকা দেওয়া হবে।

নরেন্দ্র মোদি বলেন, ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ রয়েছে। এক মাসের মধ্যেই এই দুটি ডোজ নিতে হবে। ভ্রান্তির কোনো স্থান নেই। প্রথম ডোজ দুই সপ্তাহের মধ্যেই কাজ করবে।

টিকা দেওয়া শুরু হলেও দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তিনি বলেন, ‘টিকাকরণের পরও মাস্ক পড়তে হবে। ২ গজের দূরত্ববিধি মানতে হবে। গা ঢিলে দিলে পরিণতি কঠিন হতে পারে।’

এছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ২৪ ঘণ্টাব্যাপী একটি হেল্পলাইন চালু করা হয়েছে। ওই নম্বরে যোগাযোগ করলে প্রতিষেধক সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জানা যাবে। তবে টিকাকরণ শুরু হলেও সংক্রমণ থেকে বাঁচতে আগের মতোই সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

তিনি বলেন, ‘আমার অনুরোধ, টিকাদান শুরু হয়েছে বলেই মাস্ক খুলে ফেলা বা সামাজিক দূরত্ব বিধি লঙ্ঘনের ভুল করবেন না আপনারা। প্রথম ডোজ নেওয়ার পরেও সতর্ক থাকতে হবে। কারণ দ্বিতীয় ডোজ না নেওয়া পর্যন্ত শরীরে পুরোপুরি প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে না। তাই দাওয়াই এবং কঠোর নিয়মানুবর্তিতা, দুই নীতি মেনেই চলতে হবে আমাদের।’

ভারতে এতো বিশাল আকারের টিকাদান কর্মসূচি আগে কখনও দেখা যায়নি বলেও মন্তব্য করেন মোদি। তবে রেকর্ড সময়ে প্রতিষেধক আবিষ্কারের জন্য বিজ্ঞানী এবং গবেষকদের ধন্যবাদ জানান তিনি।

মোদি বলেন, ‘প্রতিষেধক কবে আসবে, সে দিকেই তাকিয়ে ছিলেন সমস্ত দেশবাসী। আর কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিশ্বের সর্ববৃহৎ টিকাকরণ কর্মসূচির শুরু হতে চলেছে। এর জন্য বিজ্ঞানী এবং গবেষকদের প্রশংসা প্রাপ্য। দিন রাত এক করে পরিশ্রম করেছেন তারা। প্রতিষেধক তৈরি সাধারণত সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। কিন্তু এক্ষেত্রে রেকর্ড সময়ে আমাদের হাতে জোড়া প্রতিষেধক এসে পৌঁছেছে।’

প্রথম দফায় স্বাস্থ্যকর্মীসহ সামনের সারির তিন কোটি মানুষকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়া হবে। এ পর্ব শেষ করতে কয়েক মাস লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরপর কয়েক ভাগে বাকি নাগরিকদের টিকার আওতায় আনা হবে।

পশ্চিমবঙ্গে প্রথম দিনে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় টিকা কেন্দ্রগুলোকে নবান্ন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিষেধক প্রয়োগের প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্তদের এবং টিকা গ্রহণকারীদের সঙ্গেও কথা বলতে পারেন তিনি। কলকাতার সাত জন বিশিষ্ট চিকিৎসককেও প্রথম দিনের প্রতিষেধক নেওয়ার তালিকায় যুক্ত করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। রাজ্যের প্রতিটি কেন্দ্রে থাকছে ‘ওয়েব কাস্টিং’ এর ব্যবস্থা।

এরইমধ্যে ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে ভ্যাকসিন পৌঁছে গেছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। প্রতিটি কেন্দ্রেই প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা থাকছে। প্রতিটি কেন্দ্রে রিউমার রেজিস্টার রাখা হচ্ছে। প্রতিষেধকের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াসহ কোনও বিষয়ে গুজব ছড়ালে কারা, কোন মাধ্যমে ছড়াচ্ছে তা ওই রেজিস্টারে লিখে রাখা হবে। প্রতিষেধক গ্রহীতাদের কোনও মতামত থাকলে তা-ও লিখে রাখা হবে। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা এইএফআই (অ্যাডভার্স ইভেন্টস ফলোয়িং ইমিউনাইজেশন) সংক্রান্ত বিষয়টি দেখভালের জন্য থাকবেন একজন চিকিৎসক। তিনি ছাড়া প্রতিষেধক নিয়ে অন্য কেউ প্রতিক্রিয়া দেবেন না। সূত্র: আনন্দবাজার, বিবিসি।

ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বর্তমানে ভারত সরকারের হাতে সেরাম ইনস্টিটিউটের উৎপাদিত এক কোটি ১০ লাখ ডোজ এবং ভারত বায়োটেক উৎপাদিত ৫৫ লাখ ডোজ টিকা আছে। মোট ৩০০৬ কেন্দ্রে টিকা দেওয়ার কাজ হচ্ছে। প্রত্যেক কেন্দ্রে ১০০ জনকে করোনার টিকা দেওয়া হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে দেশব্যাপী মোট ৩ কোটি মানুষ টিকা পাবে। তারা প্রত্যেকেই করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে সামিল স্বাস্থ্যকর্মী ও ফ্রন্টলাইন কর্মী।