জাতীয়

র‌্যাব পরিচয়ে অর্থ আত্মসাৎ, র‌্যাবের হাতেই ধরা!


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

পরিকল্পিতভাবে নারীদের দিয়ে ফাঁদ পেতে কৌশলে মানুষকে জিম্মি করে র‌্যাব পরিচয় দিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রতারক চক্রের তিন নারী ও দুই পুরুষকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১ এর সিপিসি-২। এসময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত র‌্যাবের জ্যাকেট জব্দ করা হয়।

মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব জানায়, গত ৬ জানুয়ারি এক ভুক্তভোগী মৌখিকভাবে র‌্যাব-১১ এর সিপিসি-২, কুমিল্লা ক্যাম্পে একটি অভিযোগ দেন। এতে ওই ভুক্তভোগী  জানায়, র‌্যাবের পরিচয়ে একটি প্রতারক চক্র তার কাছ থেকে প্রায় ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে ১০ জানুয়ারি রাতে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের সক্রিয় তিন নারীসহ মোট পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার দক্ষিণ চর্থার শাহজাহান মিয়ার ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন (৩৫),  আড়াইওড়া গ্রামের মুছা মিয়ার মেয়ে হাসি আক্তার (২৪) ও তার ছোট বোন মিন্নি আক্তার (১৮), সদর দক্ষিণ উপজেলার দিশাবন্দের সাহেব আলীর ছেলে জুম্মন মিয়া (২৫) এবং চান্দিনা থানার অম্বলপুর গ্রামের মৃত আলী আজগরের মেয়ে জোসনা আক্তার (২৫)।

র‌্যাব-১১, সিপিসি-২ কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধান ও জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, জুম্মন মিয়া একজন মাছ ব্যবসায়ী। তিনি মাছ ব্যবসার সুবাদে বিভিন্ন পেশার মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে পরবর্তীতে সহজ-সরল ব্যক্তিদের টার্গেট করে নারীর প্রলোভন দেখাতেন। প্রতারক চক্রের সক্রিয় নারী সদস্য ও ভুক্তভোগী পুরুষকে একান্তে সময় কাটানোর ব্যবস্থা করতেন। যখনই তারা একান্তে সময় কাটাতো, ঠিক তখনই জুম্মন মিয়া প্রতারক চক্রের অন্য সদস্য মো. আনোয়ার হোসেনসহ ৩-৪ জনকে নিয়ে সেখানে উপস্থিত হতেন। এরপর স্থিরচিত্র ও ভিডিও ধারণ করে নিজেদের র‌্যাবের পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীর সঙ্গে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিতেন।

তিনি আরও জানান, শুধু তাই নয়, গ্রেফতারকৃতরা পরবর্তীতে ভুক্তভোগীকে জোরপূর্বক তোলা স্থিরচিত্র ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া ও মামলার ভয় দেখিয়ে ধাপে ধাপে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতেন। প্রতারকরা আরও স্বীকার করেছেন, তারা বিভিন্ন সময়ে র‌্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা ক্যাম্পে অভিযোগ দেওয়ার নাম করে ভিতরে ঢুকে বিভিন্ন ভুক্তভোগীকে ফোন করে র‌্যাব অফিসের সামনে আসতে বলতেন। ভুক্তভোগী ব্যক্তি র‌্যাব অফিসের সামনে আসলে ভিতর থেকে বের হয়ে বলতো স্যার ব্যস্ত আছেন, পরে কথা বলবেন। আমি এখন অফিসের কাজে বাইরে যাচ্ছি, অন্য আরেকদিন কথা বলব। বিভিন্ন সময়ে অফিসের বাইরে সেলফি তুলে সেগুলো ভুক্তভোগীদের কাছে পাঠাতো এবং তাদের কাছে নিজেকে র‌্যাব হিসেবে বিশ্বাস স্থাপন করাতো। ভুক্তভোগীরা র‌্যাব অফিসের মধ্যে টাকা দিতে চাইলে সে বলতো অফিসের মধ্যে টাকা দিলে সে সব র‌্যাব সদস্য বিষয়টি জেনে যাবে এবং এতে করে তাকে চার-পাঁচগুণ টাকা বেশি দিতে হবে। এঅবস্থায় ভুক্তভোগীরা সামাজিক মর্যাদা ও মানসম্মানের ভয়ে বিষয়টি অন্য কারো সঙ্গে শেয়ার করতে পারতো না। ফলেবাধ্য হয়েই তাদেরকে টাকা প্রদান করতো।

তিনি আরও জানান, গ্রেফতারকৃত প্রতারকচক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে কুমিল্লা জেলার কোতয়ালি থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। প্রতারক চক্রকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে।