জাতীয়

শান্তার ওপর এ কেমন বর্বরতা!


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

ছোট্ট আরিয়ান আর তমার কান্নায় সার্জারি ওয়ার্ডের বাতাস ভারী। তাদের মা শান্তা আক্তার হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছে। শান্তার সারা শরীরে অসংখ্য ক্ষত। সেই যন্ত্রণায় যেন তিনি বাকরুদ্ধ। তারই চাচা হুমায়ুন মিয়ার নির্মম অত্যাচারের কারণে শরীরে পড়েছে একাধিক সেলাই। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নে ঘটেছে এমনই এক ভয়ানক ঘটনা।

শান্তা অমানবিকতা আর পাষণ্ডতার শিকার হয়েছেন। হাত, পা, মাথায় ব্লেডের অসংখ্য ক্ষত করে দিয়েছেন তারই চাচা। ছোটদের ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাচা হুমায়ুন মিয়া লোকজন নিয়ে এসে শান্তাকে বেঁধে তার ওপর অমানবিক নির্যাতন চলান। শান্তার ওপর এ কেমন বর্বরতা!

শান্তা আক্তার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের শিলাউর এলাকার আইয়ুব মিয়ার মেয়ে। রবিবার রাতে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে এসে ভর্তি হন শান্তা। সেখানেই সার্জারি ওয়ার্ডে তার চিকিৎসা চলছে। কাছে থাকা ছয়-সাত বছর বয়সী সন্তানেরা মায়ের এমন অবস্থা দেখে কোনোভাবেই নিজেদেরকে সামলাতে পারছেন না। 

চিকিৎসরা জানিয়েছেন, ব্লেডের আঘাতে শান্তার সারা শরীরেই ক্ষত রয়েছে। ক্ষতগুলো শুকাতে সময় লাগবে। মাথায় সেলাই লেগেছে। তবে তিনি শঙ্কামুক্ত। চিকিৎসায় তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। হাসপাতাল থেকে সব ধরনের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।

শিলাউর গ্রামের রাজমিস্ত্রী রাসেল মিয়ার স্ত্রী শান্তা আক্তারের দুই সন্তান। এর মধ্যে আরিয়ান তারই এক খেলার সাথীকে খেলার ছলে আঁচার কাটে। এরই জের ধরে শান্তার ওপর বর্বরোচিত হামলা হয় বলে পরিবারের লোকজন অভিযোগ করেছেন। শান্তার মা রৌশনা বেগম বলেন, ‘সোমবার বিকেলে শান্তার খুব মাথা ব্যথা করছিল। ডাক্তার দেখানোর জন্য নিজ বাড়ি থেকে জেলা সদরে যাওয়ার সময় শান্তার আপন চাচা হুমায়ুন কয়েকজন যুবককে নিয়ে এসে তার নাক-মুখ কাপড় দিয়ে বেঁধে ফেলেন। একপর্যায়ে দুই হাত, পা, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্লেড দিয়ে নির্যাতন চালান।’

তিনি জানান, এর আগে হুমায়ুন মিয়ার ছেলের সাথে আরিয়ানের ঝগড়া হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রায়ই তাদেরকে হুমকি ধামকি দেওয়া হতো। এরই জের ধরে এ ধরনের বর্বরোচিত হামলা করা হয়েছে। এ ঘটনার তারা মামলা দায়ের করবেন।

হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা শান্তা আক্তার ভালোভাবে কথা বলতে পারছিলেন না। অস্পষ্ট ভাষায় তিনি বলেন, ‘ধাপন চাচা আমারে মারছে। সারা শরীরে ব্লেড দিয়া পুছাইছে। আমার সারা শরীর দিয়ে রক্ত বাইর হইছে।’

২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো শওকত হোসেন বলেন, ‘ওই নারীর অবস্থা স্থিতিশীল আছে। দুই একদিনের মধ্যে তার অবস্থা সম্পর্কে আরো নিশ্চিত হওয়া যাবে। হাসপাতাল থেকে সব ধরনের সেবা দেওয়া হচ্ছে।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুর রহিম সোমবার সন্ধ্যায় জানান, এ ধরনের ঘটনার কথা শুনে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে থানায় লিখিত কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।