জাতীয়

শাহবাগে মশাল মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জ, আহত ১৫


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

কারাবন্দী লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে আয়োজিত মশাল মিছিল পুলিশের লাঠিপেটায় ছত্রভঙ্গ হয়ে গেছে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফেডারেশনসহ প্রগতিশীল ছাত্রজোটের মিছিলে লাঠিপেটা করে পুলিশ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সন্ধ্যা ৭টার দিকে ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে মশাল মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে যাচ্ছিলেন। মিছিল শহবাগ মোড়ে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে মিছিলে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করে। পুলিশের লাঠিপেটায় পিছু হটে আন্দোলনকারীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন তারা। পুলিশ কেন্দ্রীয় মসজিদের গেটে এসে আন্দোলকারীদের আরেক দফা লাঠিপেটা করে ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। এতে অন্তত ১৫ জন আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাগীব নাঈম বলেন, আমরা মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে যাচ্ছিলাম। জাদুঘরের সামনে গেলে পুলিশ হঠাৎ আমাদের লাঠিপেটা শুরু করে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার বলেন, ‘মশাল মিছিল নিয়ে শাহবাগের পাবলিক লাইব্রেরির সামনে গেলে সেখানে বাধা দেয় পুলিশ। বিক্ষোভকারীরা এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে।’

রাশেদ শাহরিয়ারের দাবি, লাঠিচার্জে তাদের অন্তত ১৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।

আহতদের চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান রাশেদ। তিনি জানান, লাঠিচার্জের পর মশাল মিছিলে অংশ নেওয়া বিক্ষোভকারীরা শাহবাগ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান নেন। পরে পুলিশ সেখানে গেলে তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় এবং একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়ে।

পুলিশ সেখানে আবার লাঠিচার্জ করে বলে জানান রাশেদ শাহরিয়ার। তখন পাঁচ মিনিট ধরে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে।

পরে পুলিশ শাহবাগের দিকে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে বলে জানান রাশেদ।

ছাত্রফ্রন্টের ঢাবি শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা মশাল মিছিল নিয়ে শাহবাগ যাচ্ছিলাম। পুলিশ ব্যারিকেড দিলে তা সরিয়ে আমরা সায়েন্সল্যাব যেতে চাইলে পুলিশ অতর্কিতভাবে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমাদের তিন নেতাকর্মীকে আটক করেছে। প্রায় ১৫ জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।’

তিনি বলেন, ‘আগামীকাল সকাল ১১টায় পুলিশি হামলার প্রতিবাদে আমরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করবো।’

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন উর রশীদ বলেন, ‘প্রথমে বিক্ষোভকারীরা আমাদের লক্ষ্য করে মশাল ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে আমাদের ৬-৭ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ তাদের প্রতিহত করে।’

রমনা থানার ডিসি সাজ্জাদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘মিছিল নিয়ে তারা শাহবাগ এলে তাদেরকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখন তারা পেছনে সরে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছোড়ে। আমি নিজেসহ আমাদের ১২-১৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তারা (আন্দোলনকারীরা) আহত হয়েছে কি-না জানি না। কিন্তু তাদের ইট পাটকেলে আমরা আহত হয়েছি।’

আটকের বিষয়ে ডিসি বলেন, ‘তাদের দুয়েকজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। যাচাই-বাছাই করে তারা যদি জড়িত না থাকে, তাহলে ছেড়ে দেওয়া হবে। তাদের নাম ঠিকানা এখন জানানো সম্ভব হচ্ছে না।’