জাতীয়

শিক্ষকের প্রতি ভালোবাসা: অধ্যক্ষকে গাড়ি উপহার দিলেন শিক্ষার্থীরা


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

শিক্ষকের প্রতি ভালোবাসা বা আন্তরিকতার অনন্য নজির দেখালেন শিক্ষার্থীরা। ৪২ বছর শিক্ষকতা করার পর সম্প্রতি অবসরে যান অধ্যক্ষ সুলতান মাহমুদ।তার বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ১৫ লাখ টাকার গাড়ি উপহার দিয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।  

সুলতান মাহমুদ বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের চড়কগাছিয়া এতিম মঞ্জিল আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আল মাহমুদ প্রাক্তন ছাত্র ফোরামের ব্যানারে তাকে এ গাড়ি উপহার দেয়া হয়।

এর আগে শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এ উপলক্ষে মাদরাসা প্রাঙ্গণে আড়ম্বরপূর্ণ এক বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় প্রাক্তন ছাত্ররা উপস্থিত থেকে সুলতান মাহমুদকে গাড়ি হস্তান্তর করেন।

নলী-চরকগাছিয়া এতিম মঞ্জিল আলিম মাদরাসার সাবেক ছাত্র গোলাম কিবরিয়া। তিনি বর্তমানে ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের রাজাপুর শাখায় ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত। তিনি বলেন, অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন ক্যাডারে বিসিএস উত্তীর্ণ হয়ে দেশের সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। এই প্রতিষ্ঠানটি থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সুনামের সঙ্গে কর্মরত রয়েছেন।

তিনি বলেন, স্যারকে আমরা পিতার মতো শ্রদ্ধা করি। তিনি আমাদের সন্তানের মতো করে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করেছেন। মাদরাসাকে একদিকে যেমন টেনে তুলেছেন পরম যত্নে, তেমনি শিক্ষার্থীদের ভালো-মন্দে সবসময় পাশে থেকেছেন। আমরা স্যারের জন্য গর্বিত।

চরকগাছিয়া মাদরাসার প্রাক্তন ছাত্র মো. জাকারিয়া। তিনি ভোলা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ। প্রিয় শিক্ষকের বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তিনি। তিনি বলেন, অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মাওলানা সুলতান মাহমুদ এমন একজন শিক্ষক, যিনি প্রতিষ্ঠানটিকে ভালোবেসেছেন মায়ের মতো করে। শিক্ষার্থীদের শুধু পড়াশোনাই নয়, সন্তানের মতো যত্নে লালন করে আদর্শ ও নৈতিকতা সম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়েছেন। মহান এই শিক্ষকের বিদায়ে আমরা তাকে উপহার দেব এমন কিছু নেই। তবুও সবার পরামর্শে তাকে আমরা একটি গাড়ি উপহার দিয়েছি।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজক আল মাহমুদ প্রাক্তন ছাত্র ফোরামের সভাপতি আবু হানিফ নেসারী বলেন, আমরা প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা উদ্যোগ নিয়ে স্যারকে ১৫ লাখ টাকায় গাড়িটি কিনে উপহার দিয়েছি। স্যারের কারণে মাদরাসার শিক্ষার্থীরা আজ আলোকিত মানুষ। স্যারকে আমাদের দেয়ার কিছুই নেই। শুধুমাত্র সম্মানিত করার চেষ্টা করেছি। এজন্যই আমাদের আয়োজন ছিল।

চড়কগাছিয়া এতিম মঞ্জিল আলিম মাদরাসার বিদায়ী অধ্যক্ষ সুলতান মাহমুদ বলেন, একজন শিক্ষকের জন্য পরম পাওয়া একজন ছাত্রকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের আমি সন্তানের মতো দেখেছি। মাদরাসাকে মায়ের মতো মনে করেছি। বিদায়ের এ ক্ষণে আমি অভিভূত। আমার ছাত্ররা দেশের কল্যাণে নিবেদিত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, চড়কগাছিয়া এতিম মঞ্জিল আলিম মাদরাসাটি বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের প্রত্যন্ত নলী চরকগাছিয়া এলাকায় অবস্থিত। ১৯৭৫ সালে মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। আর ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বর মাসে সুলতান মাহমুদ মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। দীর্ঘ ৪২ বছর ২ মাস ধরে মাদরাসার শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন এই অধ্যক্ষ।