ইসলামী ছাত্র শিবিরের মুখপত্র ‘ছাত্র সংবাদ’ এর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ তুলে পত্রিকার প্রকাশক ও নিবন্ধ লেখকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে প্রেরিত সংগঠনের কেন্দ্রীয় সংসদ সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা এবং সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিনের এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের বিরোধিতাকারী ও গণহত্যাকারী ছাত্র সংগঠন ‘ইসলামী ছাত্র সংঘ’ এর সরাসরি উত্তরসূরী ইসলামী ছাত্র শিবিরের মুখপত্র ‘ছাত্র সংবাদ’ এর গত ডিসেম্বর সংখ্যায় প্রকাশিত এক প্রবন্ধে মহান মুক্তিযুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ধৃষ্টতা দেখানো হয়েছে। ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতির সম্পাদনায় প্রকাশিত পত্রিকাটিতে- মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করায় মুক্তিযোদ্ধারা ইসলামের বিরুদ্ধাচারণ করেছেন- এমন মন্তব্য করে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের মূল উদ্দেশ্য ছিল ইসলামের ওপর আঘাত। এছাড়া প্রবন্ধটিতে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী নানা রাজনৈতিক দলকে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী আখ্যা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর অবস্থানকে সঠিক প্রমাণের অপচেষ্টা চালানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধ এই ভূখণ্ডের জাতীয় ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গৌরব। ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ বীরাঙ্গনার ত্যাগের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জিত হয়েছে এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে শুধুমাত্র পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নয়, তাদের সহযোগী আল বদর, আল শামস বাহিনীকেও পরাজিত করে এই বিজয় অর্জিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে ছাত্র ইউনিয়ন-ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টির সমন্বয়ে গঠিত নিজস্ব গেরিলা বাহিনী নিয়ে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম, ইসলামী ছাত্র সংঘ এ দেশের জনগণের মুক্তি সংগ্রামের বিরোধিতা করে গণহত্যা চালিয়েছে।
‘মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করলে এর ফল ভালো হবে না’- এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গণহত্যার দোসর ইসলামী ছাত্র শিবিরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার যেকোন প্রচেষ্টা ছাত্র ইউনিয়ন রুখে দেবে। জাতীয় গৌরব মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ছাত্র ইউনিয়ন বিন্দুমাত্র ছাড় কখনো দেয় নাই, ভবিষ্যতেও দেবে না।