জাতীয়

শিশুর কান্নায় আদালতে বিয়ের আসর


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

জামিন শুনানির সময় মায়ের কোলে কেঁদে ওঠে ছয় মাস বয়সী ফুটফুটে একটি শিশু। তার কান্না আদালতের নজর কাড়ে। সেই মায়ের বয়স ১৮-১৯ বছর। কাঠগড়ায় উপস্থিত শিশুটির বাবার বয়স ২২-২৩ বছর।

জিজ্ঞাসাবাদে আদালত জানতে পারেন সামান্য ভুল বোঝাবুঝির কারণে আট মাস আগে তাদের সংসার ভেঙে যায়। তালাকও কার্যকর হয়েছে। আইনি জটিলতায় জড়িয়ে তাদের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছিল। এ অবস্থায় আদালতের একটি মানবিক উদ্যোগে আদালত কক্ষেই বাসানো হয় বিয়ের আসর। মাত্র দুই কার্যদিবসেই মামলাও নিষ্পত্তি হয়ে যায়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, রেলওয়ে কর্মচারী শিমুল পারভেজের সঙ্গে ২০২১ সালের ২ এপ্রিল জান্নাত ফেরদৌসের বিয়ে হয়। তাদের বাড়ি রাজশাহীর পবা উপজেলার কাটাখালী পৌর এলাকার সমসাদিপুর মহল্লায়। সংসার ভেঙে যাওয়ার কয়েকদিন পরে গত ১২ অক্টোবর মেয়েটির মা আদালতে মামলা করেন।

বৃহস্পতিবার আদালতে সেই মামলার জামিন শুনানিকালে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদুজজামান লক্ষ্য করেন সাক্ষীর কাঠগড়ায় মামলার বাদী জান্নাত ফেরদৌস অর্থাৎ সদ্য সাবালিকা মেয়েটির কোলে ৬ মাসের ফুটফুটে একটি শিশু কাঁদছে। আসামির কাঠগড়ায় ২২-২৩ বছরের একটি তরুণ শিমুল পারভেজ-যার সঙ্গে বাদীর ৮ মাস আগে বিয়ের পরে সামান্য ভুল বোঝাবুঝিতে আসামি তার স্ত্রী জান্নাত ফেরদৌসকে তালাক দিয়েছে। ইতোমধ্যে তা কার্যকরও হয়েছে। আদালতে জান্নাতের বাবা-মা এবং শিমুলের বাবা উপস্থিত ছিলেন। শুনানিকালে জান্নাতের চোখে পানি ছিল এবং শিমুলও মাথা নিচু করে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। দুই পক্ষের আইনজীবী পক্ষে-বিপক্ষে তাদের বক্তব্য রাখছেন কিন্তু আদালতের দৃষ্টি পড়ে থাকে অসহায় শিশুটির দিকে।

আদালত জানতে চান শিশুটির ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে বাদী ও আসামি আপোষ করতে চায় কি না। তখন জান্নাত ও শিমুল পরষ্পরের কিছু দোষ ত্রুটি উল্লেখ করতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে আদালত নিজ দ্বায়িতে সামাজিক প্রেক্ষাপটে তাদের উদ্দেশে কিছু উপদেশমূলক কথা বলেন। এক পর্যায়ে তারা দুজনই আপোষ করতে রাজি হন। কিন্তু তা অবশ্যই আদালতের মধ্যস্থতায় করতে চান। এ সময় দুই পক্ষের আইনজীবীর অনুরোধে আদালত তার বিচারকার্য শেষে আদালতে কক্ষের ভেতরেই উভয়পক্ষের আইনজীবী, অভিভাবকগণ ও বার সমিতির সম্মানিত সেক্রেটারির উপস্থিতিতে কাজী ডাকেন।

আদালতের ভেতরেই ১ লাখ টাকা দেনমোহর নির্ধারণ করে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক পুনরায় তাদের বিয়ে দেওয়া হয়। আদালত সবাইকে মিষ্টিমুখ করান।

বাদীপক্ষের আইনজীবী রেবেকা সুলতানা জানান, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদুজ্জামানের আন্তরিক প্রচেষ্টায় আদালত কক্ষে এই ব্যতিক্রমী বিয়ের আয়োজনের মাধ্যমে একটি সংসার জোড়া লাগলো এবং একটি শিশুর ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত হল।