জাতীয়

শীত থাকবে মাসজুড়ে, বৃষ্টিও হতে পারে


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

সারাদেশে শীতের তীব্রতা বাড়ছে। সবচেয়ে বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে শীতল অঞ্চল হিসেবে পরিচিত চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গলে। এ ছাড়া বিভিন্ন অঞ্চলে বইছে শৈত্যপ্রবাহ। এমন পরিস্থিতিতে বেড়েছে নিম্নআয়ের ছিন্নমূল মানুষের দুর্ভোগ।

গত সপ্তাহের মাঝামাঝিতে দেশে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়। শৈত্যপ্রবাহ শেষ হলেও শীতকালীন অবস্থা পুরো মাসজুড়েই থাকতে পারে। তবে ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামার সম্ভাবনা নেই। এসব তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের কার্যালয়ের আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘এখন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। বিশেষ করে দিনাজপুর, নীলফামারী, বগুড়া, নওগাঁ এবং শ্রীমঙ্গল অঞ্চলে মৃদ্যু শৈত্যপ্রবাহ আছে এবং তা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা আছে।’

‘২০-২১ তারিখের দিকে কিন্তু হালকা বৃষ্টি হতে পারে। চার-পাঁচদিনে দেখা যাবে শীতের প্রবণতা কমে যাবে’, যোগ করেন এই আবহাওয়াবিদ।

রোববার (১৭ জানুয়ারি) দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল সিলেট বিভাগের শ্রীমঙ্গলে ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে গত ২০ ও ২৯ ডিসেম্বর এই অঞ্চলে ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। এটিই চলতি শীত মৌসুমে শ্রীমঙ্গলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে রোববার ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৬, ময়মনসিংহে ১১ দশমিক ৫, চট্টগ্রামে ১৪, সিলেটে ১২, রাজশাহীতে ১০ দশমিক ৬, রংপুরে ১১, খুলনায় ১২ দশমিক ৬ এবং বরিশালে ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে কনকনে ঠান্ডায় সকাল ১০টা পর্যন্ত শহর ও আশপাশের এলাকায় ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন ছিল। শহরের রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা কম। গাড়ি চলছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বল্প আয়ের ছিন্নমূল মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।

শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, জেলাজুড়ে বইছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে। আরও কয়েকদিন শীত থাকতে পারে বলে জানান তিনি।

সোমবার থেকে তাপমাত্রা বাড়তে পারে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান বলেন, যেহেতু কুয়াশা আছে, সূর্যের দেখা মিলছে না, এ জন্য শীতের অনুভূতি থাকবে। আর মঙ্গলবার অথবা বুধবার থেকে শৈত্যপ্রবাহ কাটতে শুরু করবে। জানুয়ারি মাসের পুরোটাই শীতকাল। তাই এই মাসে শৈত্যপ্রবাহ থাকুক আর নাই থাকুক শীত থাকবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, তিন দিন ধরে চলমান শৈত্যপ্রবাহ এ মাসের বাকি সময়জুড়ে অব্যাহত থাকতে পারে। মাঝে ১৮ ও ১৯ জানুয়ারি বাতাসে জলীয় বাস্প ও আকাশে মেঘ বেড়ে যেতে পারে। ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে কুয়াশা ও হালকা বৃষ্টি হতে পারে, তাপমাত্রাও কিছুটা বাড়তে পারে। এরপর তাপমাত্রা আবারও কমতে থাকবে।

ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশালের মতো বড় শহরগুলোতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামার সম্ভাবনা নেই বলে জানান অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক। তিনি বলেন, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলসহ দেশের মধ্যাঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ মাসের শেষ সপ্তাহে ছড়িয়ে পড়তে পারে। কিন্তু বড় শহরগুলোতে ধুলার সঙ্গে আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগর থেকে আসা বাতাসে জলীয় বাস্পমিশ্রিত ধুলা মিশে তাপমাত্রাকে কিছুটা বাড়িয়ে দেবে। আবহাওয়ার এমন আচরণকে অস্বাভাবিক বা প্রকৃতির বিরূপ আচরণ বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।

এ প্রসঙ্গে আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, চলতি বছর এখনও ঢাকায় শৈত্যপ্রবাহ হয়নি। এবার ঢাকায় শৈত্যপ্রবাহ হওয়ার সম্ভাবনাও কম। এমনটা প্রতি বছর হয় না।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ৬ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং এর নিচে নামলে তা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।