জাতীয়

স্ত্রীকে হত্যার পর মরদেহে আগুন দিয়ে নামাজে যান রেজাউল!


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

 হত্যার পর আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ডেউয়াতলী এলাকার গৃহবধূ ইয়াসমিন আক্তারের শরীরে (২২ )। আগুন লাগিয়ে ফজরের নামাজ পড়তে যান তার স্বামী রেজাউল।

হত্যার ১৮ দিন পর এই রহস্য উন্মোচন করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে স্বামী রেজাউল করিমকে।  

মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন র‍্যাব ১১ কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন।

তিনি বলেন, আমরা জানতে পারি ২০১৭ সালের শুরুতে রেজাউল করিম ইয়াসমিন আক্তারের বাড়ির (চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ থানার ডিংগাভাঙ্গা) এলাকায় একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন। ওই সংস্থা থেকে ঋণ নেওয়ার সুবাদে রেজাউল করিমের সঙ্গে ইয়াসমিনের মা বেবী আক্তারের পরিচয় হয়। সেই সুবাদে আসামি রেজাউল ঋণের কিস্তির টাকা নিতে ইয়াসমিনদের বাড়িতে আসা যাওয়া করতেন। একপর্যায়ে ইয়াসমিনের সঙ্গে রেজাউলের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাদের এই সম্পর্ক এলাকায় জানাজানি হলে ইয়াসমিনের আগের স্বামী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে তালাক হয়ে যায়। তাই খুব অল্প সময়ে কোনো প্রকার কাবিন ও ইসলামিক প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই রেজাউল বিয়ে করতে বাধ্য হয় ইয়াসমিনকে । বিয়ে করে তিনি মালদ্বীপ চলে যান।

চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি রেজাউল মালদ্বীপ থেকে দেশে ফিরে আসে এবং পরিবারের অমতে গত ১০ জানুয়ারি ইয়াসমিনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর ইয়াসমিনকে তার বাড়ি বরুড়ার ডেউয়াতলী গ্রামে নিয়ে আসে রেজাউল। একদিকে পরিবারের অমতে বিয়ে, অপরদিকে যৌতুকের চাপের কারণে তাদের পারিবারিক কলহ চরমে ওঠে।

রেজাউলের বরাত দিয়ে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, গত ১০ মার্চ বিকেলে স্বামীর সঙ্গে ইয়াসমিনের বিভিন্ন বিষয়ে কথা কাটাকাটি হলে রেজাউল তাকে চড়-থাপ্পড় দিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যান। রাত ১০টার সময় রেজাউলের বাবা-মা ঘুমিয়ে গেলে পুনরায় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রেজাউল ক্ষিপ্ত হয়ে ইয়াসমিনের গলা চেপে ধরলে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তার কিছুক্ষণ পরে রেজাউল তার গায়ে হাত দিয়ে দেখেন শরীর ঠাণ্ডা হয়ে আছে। পরে তিনি বুঝতে পারেন তার স্ত্রী আর বেঁচে নেই। এমতাবস্থায় তিনি সারারাত চিন্তা করতে থাকেন স্ত্রীর মৃত্যুর বিষয়টি পরিবার ও লোকমুখে জানাজানি হলে তিনি কি জবাব দেবেন। চিন্তা ভাবনার একপর্যায়ে ১১ মার্চ ভোর ৫টার দিকে তিনি তার স্ত্রী মৃত ইয়াসমিনের শরীরে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে প্রতিদিনের মতো ফজরের নামাজ পড়তে চলে যান। নামাজ শেষে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে আগুন লাগার বিষয়ে কোনো আওয়াজ না পাওয়ায় তিনি পারিবারিক কবরস্থান জিয়ারতের উদ্দেশে চলে যান। রেজাউল কবরস্থানে থাকা অবস্থায় স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে আগুন লাগার বিষয়ে জানতে পারেন এবং বাড়িতে আসেন। স্থানীয়দের সঙ্গে আগুন নেভানোর সময় রেজাউল বলতে থাকেন ঘরের ভেতর তার স্ত্রী ও তার বিদেশ যাওয়ার সব কাগজপত্রসহ টাকা-পয়সা রয়েছে। বিষয়টি বলতে বলতে রেজাউল জ্ঞান হারানোর ভান ধরে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন এবং তার স্ত্রীর জানাজা শেষে হাসপাতাল থেকে আত্মগোপনে চলে যান।

মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন জানিয়েছেন, গ্রেফতার আসামির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে কুমিল্লা জেলার বরুড়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।