জাতীয়

৩০ বছর পর ঘূর্ণিঝড় ও পূর্ণিমার মিলনের শঙ্কা


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

২৬ মে বিকাল বা সন্ধ্যায় আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। সেসময় পূর্ণিমা থাকায় জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এখন পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের গতিমুখ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যার দিকে। তবে কোনো কারণে এর গতিপথ পাল্টে গেলে এটি উপকূলে বড় ধরনের আঘাত হানতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চয় করছে। বাতাসের গতিবেগ ৬২ কিলোমিটার। যা ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ঝড়টি আইলা বা আম্পানের মতো সুপার সাইক্লোনে রূপ নেওয়ার সম্ভাবনা নেই।

বাংলাদেশের উপকূল থেকে ৬০০ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরে পাক খেতে থাকা ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ ঘণ্টায় চার কিলোমিটার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে উত্তর উত্তর-পশ্চিমে।

১৯৯১ সালের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়টি পূর্ণিমার সময় আঘাত হানায় ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে। ৩০ বছর পর আবারও ভরা পূর্ণিমায় ঘূর্ণিঝড় হতে পারে। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আবহাওয়াবিদরা। তারা বলছেন, পূর্ণিমায় এমনিতেই সাগরে জোয়ারের উচ্চতা অন্য সময়ের থেকে বেশি থাকে। ফলে এবারের ঘূর্ণিঝড় শক্তিশালী হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আতঙ্কে আছেন উপকূলের মানুষও। তবে ঝড় মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার। প্রস্তুত রয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। পর্যবেক্ষণ ও তথ্য সংগ্রহে কন্ট্রোল রুম চালু করেছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের খুলনা উপকূলে প্রবেশ করতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বার্তার সঙ্গে ভিন্নমত প্রকাশ করেন কানাডার সাসকাচুয়ান ইউনিভার্সিটির আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক বাংলাদেশি পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন, কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ উইন্ড শিয়ারের (উচ্চতার সঙ্গে বায়ুপ্রবাহের দিকের পরিবর্তন) মানচিত্র, সমুদ্রপৃষ্ঠে পানির তাপমাত্রা, সমুদ্রপৃষ্ঠে পানির গড় উচ্চতার বিচ্যুতি ও বঙ্গোপসাগরের দীর্ঘ ৪০ বছরের ঘূর্ণিঝড়ের বৈশিষ্ট্য বিশ্নেষণ করে দেখা গেছে, ঘূর্ণিঝড়টি নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম উপকূলের ওপর দিয়ে বাংলাদেশের স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে।

তিনি বলেন, এটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ও মিয়ানমার উপকূলেও আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ঝড়টি খুবই শক্তিশালী ঝড়ে পরিণত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, যদি এটি প্রকৃতপক্ষেই চট্টগ্রাম উপকূলে আঘাত হানে, তবে ঘূর্ণিঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৬৬ থেকে ২২০ কিলোমিটার। সেই সঙ্গে ১৫ থেকে ২০ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় শক্তিশালী হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে মোস্তফা কামাল বলেন, ২৬ মে ভরা পূর্ণিমা। ফলে চন্দ্র, সূর্য ও পৃথিবী একই অক্ষে অবস্থান করবে। চন্দ্র ও সূর্যের মিলিত অভিকর্ষে ওই দিন উপকূলীয় এলাকায় প্রাকৃতিক নিয়মেই দুই থেকে তিন ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হবে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে যার সঙ্গে যুক্ত হবে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উঁচু জলোচ্ছ্বাস।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান জানান, শতভাগ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। রোববার পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক জরুরি সভায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বাঁধ মনিটরিংসহ জরুরি কাজের জন্য পর্যাপ্ত জিও ব্যাগ প্রস্তুত রয়েছে। মাঠপর্যায়ে সব কর্মকর্তার উপস্থিতি নিশ্চিত করার নির্দেশনা দিয়েছেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম।