আন্তর্জাতিক

আরব সাগরে বাংলাদেশি সাম্পানওয়ালাদের গল্প


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের ব্যস্ততম ও আধুনিক নগরী কাতারের রাজধানী দোহা। এবারের ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হওয়ায় দোহায় ভিড় করছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা। তাদের পছন্দের স্থান আরব সাগরের তীরঘেষা দোহার আল কার্নিশ সমুদ্র সৈকত। ওই পর্যটকদের সাগর ভ্রমণের সুবর্ণ সুযোগ করে দিচ্ছে ঐতিহ্যবাহী কিছু সাম্পান।

মধ্যপ্রাচ্যের এসব সাম্পানের মাঝি ও সহকারীদের অধিকাংশই বাংলাদেশি প্রবাসী। কয়েক দশক ধরে বংশ পরস্পরায় তারা সাম্পান চালিয়ে আসছেন। বর্তমানে প্রায় ১২৫টির মধ্যে ১১৫টি সাম্পানই পরিচালনা করছেন বাংলাদেশিরা।

সাম্পানে বিনিয়োগ করা প্রবাসী ব্যবসায়ী নেপাল বলেন, ‘ফুটবল বিশ্বকাপকে ঘিরে কাতারে পর্যটনের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। যে কারণে করোনার পরবর্তীতে সাম্পান ব্যবসায় লাভের মুখ দেখছি আমরা। এ ছাড়া সাপ্তাহিক ছুটির দিন, বিভিন্ন জাতীয় দিবস ও ঈদের ছুটিতে এসব সাম্পানে চড়তে আসেন শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সের নাগরিক ও পর্যটকরা।’

মহামারি করোনাভাইরাসের পর পর্যটকদের কেমন সাড়া পাচ্ছেন, জানতে চাইলে বাংলাদেশি মাঝি দুলাল চন্দ্র দাস বলেন, করোনায় এ ব্যবসা দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় এবং ফুটবল বিশ্বকাপকে ঘিরে পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন ভালো আয় হচ্ছে।

সাম্পানে কর্মরত বাংলাদেশি মাঝি রহমত জানান, কাতারের অন্য খাতের চেয়ে এই নৌকা ব্যবসায় বাড়তি কোনো প্রতিযোগিতা বা ঝামেলা নেই। কাতার সরকারের পর্যটনবান্ধব নীতিমালার কারণে কোনো অতিরিক্ত ফি ছাড়াই সাধারণ লাইসেন্সে এ ব্যবসায় দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত আছেন বাংলাদেশিরা।

নানা আকারের কাঠ দিয়ে তৈরি হয় এসব সাম্পান। ওপরে ছাদ ও নিচে দুই পাশজুড়ে চেয়ার। আকৃতি অনুযায়ী ২০ থেকে ৩০ জন যাত্রী বসতে পারেন একেকটি সাম্পানে। ভেতরে রয়েছে আধুনিক শব্দযন্ত্র। পর্যটকদের পছন্দ অনুযায়ী চালকেরা গান বাজিয়ে শোনান।

যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আছে পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট। সাগর ভ্রমণের জন্য তৈরি ইঞ্জিনচালিত এসব কাঠের নৌকাকে আরবিতে বলা হয় সাফিনা অথবা মারকাব। যদিও স্থানীয় চালকেরা এগুলোকে ‘বোট’ বলে থাকেন।

ঐতিহ্যবাহী আরবের এসব সাম্পানে আনন্দ ভ্রমণে এসে অনেকেই সমুদ্রের প্রেমে মুগ্ধ হয়েছেন। সাত কিলোমিটার দীর্ঘ এই সাগর তীরে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় নানা বয়সী নাগরিক, প্রবাসী ও পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকে।