জাতীয়

‘চাঁদাবাজ নেতা’কে মুক্ত করতে থানা ঘেরাও করল আ.লীগ


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

চাঁদবাজি মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্যকে ছাড়িয়ে আনতে থানা ঘেরাও এবং প্রতিবাদ সভা করেছে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ। পাশাপাশি দলীয় ওই সদস্যের মুক্তির জন্য আজ সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়েছেন তারা।

সোমবার বেলা ১২টা থেকে দুপুর সোয়া ১টা পর্যন্ত কাশীপুরে এয়ারপোর্ট থানা ঘেরাও এবং মহানগরীর সদর রোডে সোহেল চত্বরে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে এই প্রতিবাদ সমাবেশ করেন দলটির মহানগরের নেতাকর্মীরা।

চাঁদবাজির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যাওয়া রিপন বিশ্বাস মহানগর আওয়ামী লীগের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এবং একই এলাকার বাসিন্দা। গতকাল রোববার রাতে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, নগরীর কাশীপুর বাজারে ব্যাটারিচালিত অবৈধ ইজিবাইক থেকে রিপন বিশ্বাসের নেতৃত্বে বিট (নির্ধারিত হারে চাঁদা) উত্তোলন করতেন তার সহযোগীরা। ওই বিট আদায় বন্ধ করতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) বরিশাল জেলা কমিটির নেতৃত্বে ‘ইজিবাইক সংগ্রাম কমিটি’ গঠন করা হয়।

কমিটির উপদেষ্টা বাসদ বরিশাল জেলার সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, ‘রিপন বিশ্বাসের নেতৃত্বে বিট দাবি করা হলে আমাদের সংগ্রাম কমিটির নেতৃত্ব সেটা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ জন্য আমাদের সদস্যদের ওপর হামলা এবং বেশ কয়েকটি ইজিবাইক ভাঙচুর করা হয়।’

এই ঘটনায় গত ৩০ মার্চ ইজিবাইক সংগ্রাম কমিটির নেতা গোলাম রসুল বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা রিপন বিশ্বাসকে প্রধান আসামি করে মহানগরের এয়ারপোর্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এতে ছয়জনের নাম উল্লেখসহ আরও ১০-১৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। ওই মামলায় রোববার রাতে প্রধান আসামি রিপন বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এদিকে, বাসদের দায়ের করা মামলায় ক্ষমতাসীন দলীয় নেতা রিপন বিশ্বাসকে গ্রেপ্তারের খবরে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে মহানগর এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আজ বেলা ১২টার দিকে রিপন বিশ্বাসকে ছাড়িয়ে আনতে এয়ারপোর্ট থানায় গিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেন দলের মহানগর ও স্থানীয় পর্যায়ের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।

এ সময় থানা থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, এজহারভুক্ত আসামি ছেড়ে দেওয়া সম্ভব নয়। রিপনকে ছেড়ে না দেওয়ায় থানা ঘেরাও করেন দলীয় নেতাকর্মীরা।

প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থানের পর হতাশ হয়ে নেতাকর্মীরা ফিরে সদর রোডস্থ জেলা ও মহানগর কার্যালয়ের সামনে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ বাবু’র নেতৃত্বে দলীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। এ সময় তারা আজকের মধ্যে রিপন বিশ্বাসকে ছেড়ে না দিলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।

প্রতিবাদ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গোলাম সরোয়ার রাজিব, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান প্রমুখ।

আওয়ামী লীগ নেতা হাসান মাহমুদ বাবু বলেন, ‘সরকার বিরোধী একটি চক্র আওয়ামী লীগের নেতাকমীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এই চক্রের কিছু নেতারা সরকার দলীয় লোকদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। রিপন বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করা ওই চক্রান্তের একটি অংশ।’

এয়ারপোর্ট থানার ইনচার্জ কমলেশ চন্দ্র হালদার বলেন, ‘চাঁদাবাজি এবং হামলার অভিযোগে মামলা হয়েছে। ওই মামলার আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছি আমরা।’

কমলেশ চন্দ্র হালদার আরও বলেন, ‘দলীয় বেশ কিছু লোকজন এসে এজাহারভুক্ত আসামিকে ছেড়ে দেওয়ার দাবি তুলেছেন। গ্রেপ্তার রিপন বিশ্বাসকে ছাড়া না ছাড়া সম্পূর্ণ আদালতের এখতিয়ার।’

উল্লেখ্য, এর আগে চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি বরিশাল বিসিকের এক নারী শ্রমিককে ইভটিজিংয়ের ঘটনায় শ্রমিকরা আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয় মহানগরের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহাগকে। পরবর্তীতে ওই ইভটিজারকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিতে মহানগরের কাউনিয়া থানাও একই কায়দায় ঘেরাও করে মহানগর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।

এতে কাজ না হওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা গোটা মহানগরী এলাকার সকল সড়ক এমনকি নৌরুটও প্রায় ৬ ঘন্টা বন্ধ করে রাখে।