চট্টগ্রাম

চান্দগাঁও আবাসিক : ১৪ বছরেও ঘুচেনি দুঃখ


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা। সিডিএ ১৯৬৩ সালে ৭৫৯টি প্লট নিয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। ১৯৭৭-১৯৭৮ সালের দিকে চসিককে এটি হস্তান্তর করে সিডিএ। বর্তমানে বছরে প্রায় তিন কোটি টাকা হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করলেও বিনিময়ে কোন সেবা পান না বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

গতকাল বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বি-ব্লকের ১৫টি মূল সড়কের মধ্যে এক থেকে চার নং রোডের বেহাল দশা। সড়কগুলো একনজর দেখে যে কেউ বলবে, গত এক যুগেও সড়কে একটি ইটও পড়েনি। বৃষ্টি হলে বাসিন্দাদের কি পরিমাণ দুর্ভোগ পোহাতে হয়, তা অনেকটা এক পলক দেখে অনুমান করা যায়।

চার নম্বর সড়ক ধরে কিছুটা সামনের দিকে আগালে দেখা যায়, একতলা বাড়ির অর্ধেকের বেশি এখন রাস্তার নিচে। রাস্তাগুলো উঁচু করা হলেও এখনো কাঁচা। যেন শহর থেকে অনেক দূরে এক অজপাড়াগাঁ’র রাস্তা। সামান্য বৃষ্টি হলেই বাড়ে মানুষের ভোগান্তি। এছাড়া, ময়লা-আবর্জনা জমে সবগুলো নালা ও ড্রেনে পানি চলাচল বন্ধ। মশা-মাছির উপদ্রব তো আছেই। এসব ড্রেনে অনেক বছর কোন পরিচ্ছন্ন কর্মীর হাত লাগেনি। তাই সামান্য বৃষ্টিতেই শুরু হয় জলাবদ্ধতা। এই রোডের অধিকাংশ বাড়ির সামনে ‘বাড়ি ভাড়ার নোটিশ’ ঝুলানো রয়েছে। বাড়িওয়ালাদের মাসের পর মাস বাড়ি ভাড়ার নোটিশ ঝুললেও ভাড়া হয় না। ‘হবেই বা কেন? টাকা দিয়ে কে এত দুর্ভোগ কিনে নিবে!’ এমনটায় জানালেন আবাসিকের চার নং রোডের এক বাড়িওয়ালা।

সর্বশেষ গত ১৪ বছরে চসিকে তিন মেয়র এসেছেন। তবুও দুঃখ ঘুচেনি চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার প্রায় ২৫ হাজার বাসিন্দার। আবাসিকের অন্যতম তিন সমস্যা হলো- সড়ক সংস্কার, জলাবদ্ধতা নিরসন ও এলইডি বাতি স্থাপনের জন্য একাধিকবার ধর্ণা দিয়েও কোন সুফল মিলেনি তাদের।  চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতির সভাপতি এডভোকেট জিয়াউদ্দিন আহাম্মদ বলেন, ১৯৭৯ সালে চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় প্রথম ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছিল। তখন এখানে বাড়ি ছিল একতলা, এখন সেই জায়গায় বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে ছয় তলা, আট তলা। তখন পানির প্রবাহ ছিল এক রকম। এখন বাড়ি বেড়েছে, জনসংখ্যাও বেড়েছে। ফলে পানির প্রবাহও বেড়েছে আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। আগের ড্রেনগুলো সংস্কার করে বড় করার জন্য আমরা সিটি কর্পোরেশনে বহুবার চিঠি দিয়েছে। তারা করবে করবে করে এখনো করেনি। এদিকে, আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ড্রেনের পানি খালে যেতে না পারায় প্রতি বছর বর্ষায় আমাদের জলাবদ্ধতা সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টিতে হাঁটু পানি জমে যায়। এছাড়াও, সড়কে আলোর স্বল্পতা থাকায় এলইডি লাইট স্থাপনের দাবি করে আসলেও এখনো কোন সুফল মিলেনি।

সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. ইসমাইল বলেন, কর্পোরেশন প্রতিবছর আমাদের কাছ থেকে প্রায় তিন কোটি টাকা হোল্ডিং ট্যাক্স পাচ্ছে। কিন্তু আমরা চসিক থেকে কোন সেবা পাচ্ছি না। আজ ১৪ বছর ধরে বি-ব্লকের এক থেকে চার নম্বর রোড মেরামতের জন্য বলে যাচ্ছি, কিন্তু কোন ফল পাচ্ছি না। মেয়র পরিবর্তন হয়, কিন্তু আমাদের ভাগ্য পরিবর্তন হয় না।

সমিতির সদস্য মো. আরিফ আহমেদ বলেন, ড্রেন দখল করে অনেকগুলো স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এসব স্থাপনা অপসারণ করা না হলে জলাবদ্ধতা থেকে আবাসিকের বাসিন্দারা মুক্তি পাবে না।

৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. এসরারুল হক এসরাল জানান, আবাসিকের ২, ৩, ও ৪ নম্বর সড়ক মেরামতের ব্যাপারে আমাকেও জানানো হয়েছে। আমি মেয়র মহোদয়কে বিষয়টি জানিয়েছি। নতুন বরাদ্দ পেলে সড়কগুলো মেরামত করা হবে। এছাড়া, ছোট ড্রেনগুলো মেরামত করা হবে।