আন্তর্জাতিক

টিকা না নেওয়া মানুষেরা ‘ভ্যারিয়েন্ট কারখানা’, বিশেষজ্ঞদের হুঁশিয়ারি


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

করোনাভাইরাসের টিকা না নেওয়া মানুষেরা শুধু যে নিজের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করছেন তা নয়, করোনায় আক্রান্ত হলে তারা সবার জন্যই ঝুঁকি হয়ে যান। কারণ করোনাভাইরাস ভ্যারিয়েন্টের জন্ম হয় শুধু আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরেই। যুক্তরাষ্ট্রের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা এমনটাই দাবি করেছেন।

ভ্যান্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল সেন্টারের সংক্রামক রোগ শাখার অধ্যাপক উইলিয়াম শ্যাফনার শুক্রবার সিএনএনকে বলেন, টিকা না নেওয়া মানুষেরা ভ্যারিয়েন্ট কারখানা। টিকা না নেওয়া যত বেশি মানুষ থাকবেন ভাইরাসের বংশবৃদ্ধির সুযোগ তত বাড়বে।

তিনি আরও বলেন, যখন বংশবৃদ্ধি ঘটে তখন ধরনও পাল্টায়। এই প্রক্রিয়ায় এমন ভ্যারিয়েন্ট চলে আসতে পারে যা এখনকার সবগুলোর চেয়ে বেশি ভয়ঙ্কর।

সব ভাইরাসও ধরন পাল্টায়। শুধু করোনাভাইরাসই ধরন পাল্টাচ্ছে এমন না। এটিও বদলাচ্ছে এবং খাপ খাইয়ে নিচ্ছে। বেশিরভাগ পরিবর্তন তেমন গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় এতে ভাইরাস দুর্বলও হয়ে পড়ে। কিন্তু কখনও ভাইরাসের মিউটেশন তাকে সুবিধা দেয়, আগের চেয়ে বেশি সংক্রামক বা কার্যকরভাবে প্রতিলিপি তৈরি কিংবা হোস্টকে ভয়াবহভাবে আক্রান্ত করতে পারে।

এমন সুবিধা পাওয়া ভাইরাস অন্য ধরনগুলোকে পেছনে ফেলে বেশিরভাগ মানুষকে আক্রান্ত করে। কোনও আক্রান্ত ব্যক্তি দ্বারা অন্যকে সংক্রমিত করেন তখন তার দেহ মিউট্যান্ট সংস্করণও যায়। যখন ভাইরাসের কোনও মিউট্যান্ট এমন সাফল্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পায় তখন তা ভ্যারিয়েন্টে পরিণত হয়। কিন্তু এটিকে প্রতিলিপি তৈরি করতে হয়। আর এক্ষেত্রে টিকা না নেওয়া মানুষেরা সেই সুযোগ তৈরি করে দেন।

জনস হপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের মাইক্রোবায়োলজিস্ট ও ইমিউনোলজিস্ট অ্যান্ড্রিউ পেকোজ বলেন, ভাইরাসে যখন মিউটেশন হয় তখন আক্রান্ত ব্যক্তি জনসাধারণের মধ্যে তা ছড়াতে ভূমিকা রাখেন। প্রত্যেকবার ভাইরাসের পরিবর্তনের সময় আরও বেশি মিউটেশন যুক্ত হয়। এখন আমরা সেই ভাইরাস দেখতে পাচ্ছি যা আগেরচেয়ে অনেক দ্রুত কার্যকরভাবে ছড়াচ্ছে।

যেসব ভাইরাসে ছড়ায় না সেগুলো মিউট্যাট করতে পারে না। আলফা ভ্যারিয়েন্ট প্রথমে যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হয়। দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া যায় বেটা ভ্যারিয়েন্ট। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট প্রথম শনাক্ত হয় ভারতে। যুক্তরাষ্ট্রেও কয়েকটি ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। এরমধ্যে এপসিলন ক্যালিফোর্নিয়ায় এবং ইটা নিউ ইয়র্কে।

গত মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে বলেছিল, আমরা ভাইরাসকে যত ছড়াতে দিচ্ছে ততই তা পরিবর্তনের সুযোগ পাচ্ছে।

পেসকজ বলেন, প্রত্যেকবার যখন জনগণের মধ্যে ভাইরাস ছড়ায় তখন সেখানে ইমিউনিটি অর্জনকারী, টিকা নেওয়া এবং টিকা না নেওয়া মানুষেরা থাকে। ফলে ভাইরাস ছড়ানোর সুযোগ থাকে।

ইমিউনিটি অর্জন করা কোনও মানুষকে যদি ভাইরাস আক্রমণ করে তবে তা ব্যর্থ হতে পারে বা সফল হতে পারে অথবা হালকা কিংবা উপসর্গহীন সংক্রমণ ছড়াতে পারে। এক্ষেত্রে ইমিউন ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়ায় প্রতিলিপি তৈরি করে।

বিষয়টি ব্যাংক ডাকাতের মতো যাকে ধরিয়ে দেওয়ার পোস্টার সর্বত্রই সাঁটানো রয়েছে। যে ভাইরাস যথেচ্ছভাবে পরিবর্তিত হতে পারে তা ইমিউন ব্যবস্থা কাছে কম দৃশ্যমান হবে।

টিকা না নেওয়া মানুষেরা শুধু যে ছড়ানোর সুযোগ দিচ্ছেন তা নয়, এর ফলে ভাইরাস বদলানোরও সুযোগ পাচ্ছে।

বোস্টন কলেজের পেডিয়াট্রিসিয়ান ও ইমিউনোলজিস্ট ড. ফিলিপি ল্যান্ড্রিগান বলেন, এজন্য একজন মানুষের দেহে ভাইরাসে একটি মিউটেশনই যথেষ্ট।