জাতীয়

দাম কমেছে চাল-মাংসের বেড়েছে চিনি-পেঁয়াজের


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

ঈদের পর রাজধানীর বাজারে নতুন বোরো চালের আমদানি বাড়ায় পাইকারি ও খুচরায় দাম কমেছে। এতে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে ভোক্তারা। চিকন চালের দাম অবশ্য এখনো বাড়তি। এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে মাংসের দামও। তবে বেড়েই চলেছে পেঁয়াজ ও চিনির দাম। রাজধানীর কারওয়ানবাজার, হাতিরপুল ও যাত্রাবাড়ীর ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।

ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে নতুন চাল উঠতে শুরু করেছে। ঈদের আগে খুচরা দরে ৪৮ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া মোটা চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৪ টাকায়। মাঝারি ও সরু চালের দামও কমেছে। বিআর আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২ টাকা কেজি দরে, যা আগে ছিল ৫৪-৫৫ টাকা। হাতিরঝিল বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, সরু চালের দামও কমেছে, ৬৫-৬৮ থেকে এখন ৬০ টাকা পর্যন্ত নেমেছে। মিনিকেট এখন ৫৫-৫৬ এবং নাজিরশাইল পাওয়া যাচ্ছে ৬২-৬৫ টাকা কেজি দরে। খুচরা ব্যবসায়ী মো. জুয়েল বলেন, ‘ঈদের পর থেকেই দাম কমতে শুরু করেছে। তবে অনেক দোকানে পুরনো চাল রয়ে যাওয়ায় আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।’

কারওয়ানবাজারের পাইকারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রনি রাইস এজেন্সির ব্যবসায়ী মো. মনিরুল ইসলাম জনি বলেন, ‘বাজারে এখন নতুন চালের সরবরাহ বাড়ছে। তাই দাম কমতে শুরু করেছে। বিভিন্ন কোম্পানি ও মানভেদে বস্তায় (৫০ কেজি) ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত দাম নেমেছে। বাজরে নতুন করে কারসাজি না হলে এবং সরবরাহ ঠিকঠাক থাকলে চালের দাম আরও কমবে বলে আশা করছি।’

চাল কিনতে আসা মো. ইসরাফিল আলম বলেন, ‘চাল সব থেকে দরকারি পণ্য হওয়ায় এর দাম কমলে স্বাভাবিকভাবেই স্বস্তি ফিরে পাই। কিন্তু সব দোকানে দাম কমেনি। পুরনো চাল দেখিয়ে এখনো বেশি দামেই চাল বিক্রি করছেন অনেক ব্যবসায়ী। তা ছাড়া চিকন চালের দাম কিছুটা কমলেও তা এখনো অনেকের নাগালের বাইরে রয়েছে। নতুন চাল ওঠার পরও যদি দাম এত চড়া থাকে, তা হলে আর কমবে কবে?’

এদিকে ঈদ ঘিরে বেশি দামে বিক্রি হওয়া মুরগি, গরু ও খাসির মাংসের দামও কমেছে। রাজধানীর খুচরা বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়, ঈদের আগে যা সর্বোচ্চ ১৬৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে দাম কমে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায়, ঈদের বাজারে যা ছিল ২৯০ থেকে ৩২০ টাকা। তবে লাল লেয়ারের দাম অপরিবর্তিত, প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকাতেই। কারওয়ানবাজারের মুরগি বিক্রেতা মো. হাসান বলেন, ‘ঈদের পর মাংসের চাহিদা কমে যাওয়ায় দামও কমে গেছে। তবে সরবরাহ কম থাকায় লেয়ার মুরগির দাম এখনো কমেনি। সোনালির দামেই বিক্রি হওয়ায় ক্রেতারা লেয়ার মুরগি কিনছেন কম। তবে কয়েক দিনের মধ্যে সব ধরনের মুরগির দামই কমবে বলে আশা করছি।’

গরুর মাংসের দামও কমেছে। রাজধানীর বেশিরভাগ দোকানেই বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকা কেজি দরে। ঈদের বাজারে তা উঠেছিল ৬২০ টাকা পর্যন্ত। কোথাও কোথাও আবার ৬৪০ টাকাতেও বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে ৯৫০ টাকায় গিয়ে ঠেকা খাসির মাংস কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, রোজার ঈদের আগ মুহূর্তে গরু ও খাসির মাংসের চাহিদা কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ায় এ সময় দাম বাড়তি থাকে। ঈদের পর দাম আবার কমেও আসে। এবারও দাম বেড়ে তা আবার কমেছে। তবে এর থেকে আর কমার সম্ভাবনা নেই।’

এদিকে ঈদের পর বাজারে বেড়েছে পেঁয়াজ ও চিনির দাম। কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে দেশি পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়, আগে যা ছিল ৪০ টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, আড়তেই দাম বেড়ে গেছে। খোঁজ নিলে শ্যামবাজারের আড়ত আজমীর ভা-ারের ব্যবসায়ী তপু সেন বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে সরবরাহে টান পড়েছে। তাই কেজিতে ১-২ টাকা দাম বেড়েছে। চলতি সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ ৩৪ থেকে ৩৬ টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে পাইকারিতে।’

ঈদের আগে এমনিতেই চড়া থাকে চিনির দাম। কিন্তু ঈদ শেষ হলেও দাম কমেনি। উল্টো অনেক এলাকার দোকানে দাম কেজিতে ২ টাকা বেশি রাখা হচ্ছে। ঈদের আগে দাম বেড়ে খোলা চিনির কেজি বিক্রি হয় ৭০-৭২ টাকা পর্যন্ত। এখনো একই দামে বিক্রি হচ্ছে পণ্যটি। কোথাও কোথাও তা রাখা হচ্ছে ৭৫-৭৬ টাকা পর্যন্ত।

এদিকে সবজির বাজার আগের মতোই চড়া রয়েছে। বেশিরভাগ সবজির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে। বাজারে বেগুনের কেজি ৪০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি, উচ্চে, পেঁপে ও কচুরলতির কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। ঝিঙের কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। পটোল ও ঢেঁড়সের কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা। এ ছাড়া পাকা টমেটোর কেজি ৩০ থেকে ৪৫ টাকা এবং শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে। লাউয়ের পিস আগের মতোই ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা পর্যন্ত।