জাতীয়

দুই মিনিটেই শেষ কিলিং মিশন


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা ও আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া প্রধান চার সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে এপিবিএন পুলিশ। গতকাল শনিবার ভোর ৪টার দিকে তাদেরকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয় বলে এক সংবাদ সম্মেলনে এপিবিএন জানায়। কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া সন্ত্রাসীরা দুই মিনিটেই হত্যার মিশন শেষ করে পালিয়ে যায়। এই মিশনে অংশ নেয় ১৯ জন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী। গতকাল দুপুরে ১৪ এপিবিএন পুলিশের উখিয়া সদর দপ্তরে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এতে ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ান এপিবিএন অধিনায়ক নাইমুল হক বলেন, মুহিবুল্লাহ ক্রমশ রোহিঙ্গাদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিতি লাভ করেছেন। এছাড়া তিনি সরকারের সঙ্গে দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়ার তাকে থামিয়ে দিতে মূলত এ হত্যাকাণ্ড চালানো হয়।
তিনি বলেন, ২৯ সেপ্টেম্বর মুহিবুল্লাহকে বাসা থেকে অফিসে প্রত্যাবাসন বিষয়ে কথা আছে বলে ডেকে আনে গ্রেপ্তার মুরশিদ। তারপর বাকিদের সংকেত দিয়ে দেন তিনি। ধৃত আসামি মুরশিদ মুহিবুল্লাহকে তার অফিসে প্রথম গুলি করে। আনাছ ২ রাউন্ড ও নুর মোহাম্মদ ১টি করে গুলি করে। ঘটনাস্থলে মুহিবুল্লাহর মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে আসামিরা ভিন্ন ভিন্ন পথে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী চলে যায়। পরে সবাই সতর্ক হয়ে যান। বিভিন্নজনের ওপর দোষ চাপাতে থাকে।
নাইমুল হক বলেন, আলোচিত হত্যাকাণ্ডের পর থেকে পুলিশ সন্ত্রাসীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রাখে। এর ধারাবাহিকতায় মুহিবুল্লাহ হত্যার সাথে সরাসরি জড়িত প্রধান ৪ জন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। শনিবার ভোর ৪টায় এ হত্যায় জড়িত আজিজুল হককে ১টি ওয়ান শুটারগান ও ১ রাউন্ড কার্তুজসহ ৩ নম্বর ক্যাম্পের লোহার ব্রিজ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্য মতে ঘটনার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত আরো ৩ সন্ত্রাসীকে পৃথক অবস্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইতিপূর্বে এ হত্যা ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল সন্দেহজনক ৪ জনকে। এর মধ্যে ইলিয়াস ঘটনার সাথে জড়িত বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার তিনজন হচ্ছে কুতুপালং লম্বাশিয়া ১/ইস্ট ক্যাম্পের আবদুল মাবুদের ছেলে মো. রশিদ প্রকাশ মুরশিদ আমিন (৩৯), একই ক্যাম্পের ফজল হকের ছেলে মো. আনাছ (২৭) এবং ১/ওয়েস্ট ক্যাম্পের নুর সালামের ছেলে নুর মোহাম্মদ (২৯)।
তিনি বলেন, মুহিবুল্লাহ কিলিং মিশন বাস্তবায়ন করতে ২৭ সেপ্টেম্বর রাত ১০টায় লম্বাশিয়া ১/ইস্ট ক্যাম্পের মারকাজ পাহাড়ে গোপন মিটিং হয়। মিটিংয়ে শনিবার গ্রেপ্তার ৪ জনই উপস্থিত ছিল। ওই মিটিংয়ে কারা কিলিং মিশনে অংশ নেবে, কারা কোন পথ ব্যবহার করে গমনাগমন করবে ইত্যাদি বিষয়ে তাদের কথিত সংগঠন আরসা প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেয়।
২৯ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প-১ ইস্ট-ওয়েস্ট (ডি ব্লকে) নিজ অফিসে অবস্থান করছিলেন মুহিবুল্লাহ। এ সময় বন্দুকধারীরা গুলি করে তাকে হত্যা করেন। এখন পর্যন্ত এ হত্যা মামলায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মুহিবুল্লার উত্থান হয় ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা আগমনের বর্ষপূর্তিতে। ওই দিন লাখো রোহিঙ্গার সমাবেশ ঘটিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। সেদিন তার নেতৃত্বে ছিল ৩ থেকে ৫ লাখ রোহিঙ্গার মহাসমাবেশ। এরপর তিনি উখিয়া-টেকনাফের ৩২ রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিয়েছিলেন। রোহিঙ্গাদের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে দক্ষ মুহিবুল্লাহ ধীরে ধীরে সবার প্রিয়পাত্র হয়ে উঠেন।