জাতীয়

দেশব্যাপী কাল ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন, লক্ষ্য ৭৫ লাখ


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

একদিনে ৭৫ লাখ মানুষকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা দেওয়ার লক্ষ্যে আগামীকাল মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) দেশব্যাপী একটি কোডিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। দেশে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ও তুলনামূলক কম বুস্টার (তৃতীয়) ডোজ কাভারেজ বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

সোমবার (১৮ জুলাই) বিকালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি এ তথ্য জানান। এই ৭৫ লাখ টিকা বুস্টার (তৃতীয়) ও দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

জাহিদ মালেক জানান, এই ক্যাম্পেইন চলাকালে দেশের সব সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশাপাশি সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও উপজেলাসমূহের ওয়ার্ড পর্যায়েও কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। একদিনে প্রায় ৭৫ লাখ মানুষকে সুষ্ঠুভাবে ভ্যাকসিন দেওয়ার লক্ষ্যে সারা দেশে প্রায় ৬২৩টি স্থায়ী ও ১৫ হাজার ৫৫৮টি অস্থায়ী কেন্দ্রে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

উল্লেখ্য, ক্যাম্পেইনে একসঙ্গে প্রায় ৩৩ হাজার ২৪৬ জন টিকাদানকর্মী এবং ৪৯ হাজার ৮৬৯ জন স্বেচ্ছাসেবী কাজ করবেন। ক্যাম্পেইনে দ্বিতীয় ডোজ পাওয়ার ৪ মাস পার হয়েছে এরূপ ১৮ বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠীকে বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে এবং প্রথম ডোজ পাওয়ার নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও যারা দ্বিতীয় ডোজ নেননি এরূপ ১৮ বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠী দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করতে পারবেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার দেশের দুর্গম অঞ্চলসমূহে বসবাসরত পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী, ভাসমান জনগোষ্ঠী, নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠী, পরিবহন ও কলকারখানাসহ সব স্তরের শ্রমিক, গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারী, স্কুল-মাদ্রাসা-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীসহ সব বিশেষ জনগোষ্ঠীকে কোভিড-১৯ টিকার আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের টিকা নিশ্চিত করে সার্বিক সংক্রমণ হার হ্রাস করার মাধ্যমে জনজীবন ও দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যকে স্থিতিশীল করতে আমরা সফল হয়েছি। এরই ফলশ্রুতিতে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও দীর্ঘদিন পর খুলে দেওয়া হয়েছে। চলমান মহামারি নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকারের এই প্রয়াস বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হয়েছে। আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি, অচিরেই দেশের ৫-১১ বছর বয়সী শিশুদেরও কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশনের আওতায় আনা হবে। সরকার এ বিষয়ে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রাথমিক পরিকল্পনা সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। অন্যান্য বয়সসীমার জনগোষ্ঠীর মতো ৫-১১ বছর শিশুদেরও সুরক্ষা ওয়েবপোর্টাল/ অ্যাপে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে ফাইভার কোভিড-১৯ জ্যাকসিন প্রদান করা হবে।’

তিনি জানান, সুরক্ষা রেজিস্ট্রেশনের জন্য শিশুদের ডিজিটাল জন্মনিবন্ধন নাম্বারের প্রয়োজন হবে। তাই তিনি দেশের অভিভাবকদের দ্রুত শিশুর ডিজিটাল জন্মনিবন্ধন সম্পন্ন করার আহ্বান জানান।

জাহিদ মালেক বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারি নিয়ন্ত্রণে ভ্যাকসিন একটি কার্যকর সমাধান। ভ্যাকসিন কোভিড-১৯ জনিত মৃত্যুঝুঁকি কমায়। গবেষণা হতে পাওয়া তথ্যাদি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, যারা অন্তত ২ ডোজ ভ্যাকসিনের পাশাপাশি বুস্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন, তাদের অধিকাংশেরই আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হয়নি।’

তাই আগামী ১৬ জুলাই নিকটস্থ কেন্দ্র হতে বুস্টার ডোজ ও দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণের আহ্বান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আসুন চলমান কোভিড-১৯ মহামারিকে আমাদের দেশ এমনকি সমগ্র বিশ্ব থেকে দূর করতে সব নেতিবাচক চিন্তা পরিত্যাগ করি। কুসংস্কার না ছড়িয়ে দেশ ও জনগণের স্বার্থে সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে সচেষ্ট হই।’ দেশের প্রান্তিক জনগণের দোরগোড়ায় ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়ার এই মহতী উদ্যোগে সবার সহযোগিতা কামনা করেন মন্ত্রী।

দেশের ৭৬.০৫ শতাংশ মানুষ করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এছাড়া ৭০.৩ শতাংশ দ্বিতীয় এবং ১৭.৯ শতাংশকে বুস্টার (৩য়) ডোজ দেওয়া হয়েছে, যা সারা বিশ্বে সমাদৃত হয়েছে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যাকসিনের বৈশ্বিক অপ্রতুলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকার দেশের আপামর জনসাধারণকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রদানে বদ্ধপরিকর।’

তিনি জানান, বর্তমানে দেশে ৫ ধরনের (অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, সিনোফার্ম, সিনোভ্যাক এবং জনসন ও জনসন) প্রায় ২.৭৮ কোটি ডোজ টিকা মজুত রয়েছে।