আন্তর্জাতিক

নিজেকে নবী দাবি করা সেই পাকিস্তানি নারীর মৃত্যুদণ্ড


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)কে শেষ নবী না মেনে নিজেকে নবী দাবি করার অভিযোগে পাকিস্তানে সালমা তানভির নামে এক নারীর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছে আদালত।

তার আইনজীবীরা বলেছেন, সালমা যখন এসব মন্তব্য করেছিলেন তখন তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। কিন্তু প্রসিকিউশন প্রমাণ করেছে, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন না। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

এতে বলা হয়, অভিযুক্ত সালমা ২০১৩ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর তার নিজের এলাকায় লিখিত ডকুমেন্ট প্রকাশ করেন এবং তা বিতরণ করেন। এতে তিনি খতমে নবুওয়াতকে অস্বীকার করেন। নিজেকে নবী বলে ঘোষণা করেন। স্থানীয় অধিবাসীরা বিষয়টি আমলে নেয়ার পর তার বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়।

এরপর তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্বলিত ডকুমেন্ট দাখিল করে নিশতার কলোনি পুলিশ। এতে তাকে দোষী দেখানো হয়। এ নিয়ে প্রায় দেড় বছর মামলা চলে। এ সময়ে অভিযুক্ত সালমার পক্ষে প্রথম যে আবেদন করা হয়, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন।

এ ঘোষণার পর একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। তারা সালমাকে বিচারের জন্য আনফিট বা যোগ্য নন বলে ঘোষণা করে। কিন্তু মামলা চলমান অবস্থায় থাকে প্রায় দুই বছর। শেষ পর্যন্ত তার মেডিকেল চেক করে জেল কর্তৃপক্ষ। এরপর তারা আদালতকে লিখিতভাবে জানায়, সালমা বিচারের মতো সুস্থ অবস্থায় আছেন। আবার বিচারকাজ শুরু হয়। সেখানে বিবাদীপক্ষের দাবি তুলে ধরা হয় আবারও।

বলা হয়, সালমা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন ঘটনার সময়। অন্যদিকে বাদিপক্ষের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের এডভোকেট গুলাম মুস্তাফা চৌধুরী যুক্তি তুলে ধরেন- একজন অভিযুক্তকে মানসিক ভারসাম্যহীন হিসেবে বিচার শুরুর দেড় বছর পরে আবেদন দাখিল করা যেতে পারে কিনা।

তিনি প্রশ্ন রাখেন কিভাবে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন নারী একটি স্কুল পরিচালনা করেন এবং ক্লাসে শিক্ষা দেন। তিনি আরো প্রশ্ন রাখেন, কিভাবে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন নারী বেশ কয়েকবার বিদেশ সফরে গিয়েছেন? এ ছাড়া বিচার চলার সময় অভিযুক্ত সালমা তার সহায় সম্বলের অধিকার তার স্বামীর কাছে আইনি প্রক্রিয়ায় হস্তান্তর করেছেন। এডভোকেট গুলাম মুস্তাফা চৌধুরী তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

জানতে চান, একজন মানসিক ভারসাম্যহীন নারী কিভাবে তার পক্ষে দেশের শীর্ষ আদালতে আবেদন করতে পারেন এবং কিভাবে তার আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেই আবেদন অনুমোদন করেন।
বিবাদিপক্ষের আইনজীবী আবারও যুক্তি তুলে ধরেন। বলেন, তার মক্কেল ঘটনার সময়ে মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানের দণ্ডবিধির ৮৪ ধারা অনুযায়ী একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি যা কিছু করেন তা অপরাধ বলে গণ্য হবে না।

জবাবে প্রসিকিউশনের আইনজীবীরা বলেছেন, তারা মৌখিক এবং ডকুমেন্টের ভিত্তিতে অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছেন। পক্ষান্তরে অভিযুক্ত তার পক্ষে উপযুক্ত ডকুমেন্ট জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।

সালমা তার রেকর্ডেড জবানবন্দিতে বলেছেন, তিনি খতমে নবুওয়াতে বিশ্বাস করেন। কিন্তু ২০১৩ সালে হজের আগে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছিলেন। উভয়পক্ষের যুক্তি শুনে অতিরিক্ত জেলা ও সেশন জজ অভিযুক্ত সালমার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় ও ৫০ হাজার রুপি জরিমানা করেন।