জাতীয়

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে কেন বিতর্কিত করেন, প্রশ্ন হাইকোর্টের


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নথি জালিয়াতির ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। ওই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় এক আসামির জামিন চাইতে গেলে আদালত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে বিতর্কিত না করার ব্যাপারে সতর্ক করে আদালত বলেন, এ ধরনের অপরাধকে নমনীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার সুযোগ নেই।

মঙ্গলবার (০৮ জুন) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ আসামির আইনজীবীর উদ্দেশে এমন মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নথি জালিয়াতির মামলায় ওই কার্যালয়ের বরখাস্তকৃত কর্মচারী ফাতেমা খাতুনের জামিন আবেদনের শুনানি হয় আজ। তার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোমতাজউদ্দিন আহমেদ মেহেদী।

শুনানিকালে আইনজীবীকে উদ্দেশ করে হাইকোর্ট বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর অফিসকে কেন বিতর্কিত করেন? রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ এই অফিসকে কেন প্রশ্নের সম্মুখীন করেন? আপনার (আইনজীবী) কাছে এ ধরনের অপরাধ ছোট মনে হতে পারে; কিন্তু এটাকে নমনীয় দৃষ্টিকোন থেকে দেখার সুযোগ নাই।’

এ সময় আইনজীবী আদালতকে বলেন, ‘এক বছরের বেশি সময় ধরে আসামি জেলে আছেন। তিনি অসুস্থ।’এ পর্যায়ে হাইকোর্ট বলেন, ‘জেলখানায় গেলেই কি সবাই অসুস্থ হয়ে যায়? আমাদের কিছুই করার নাই।’

আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘তিনি এজাহারের তিন নম্বর আসামি। ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রয়েছে। গত বছরের ১০ মে থেকে কারাগারে। জামিন মঞ্জুরের আবেদন করছি।’ এরপর হাইকোর্ট বলেন, ‘জামিন দেয়া হবে না। শুধু রুল নিতে পারেন।’ পরে হাইকোর্ট আসামির জামিন প্রশ্নে রুল জারি করেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নথি বের করে জালিয়াতির মাধ্যমে তার (প্রধানমন্ত্রীর) সিদ্ধান্ত বদলে দেয়ার অভিযোগে মামলা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৭ মোহাম্মদ রফিকুল আলম বাদী হয়ে ২০২০ সালের ৫ মে তিনজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা তরিকুল ইসলাম মমিন, কর্মচারী ফাতেমা খাতুনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। অভিযোগপত্রে অপর আসামিরা হলেন- নাজিম উদ্দীন, রুবেল, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফরহাদ হোসেন ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস-এর সাবেক কোষাধ্যক্ষ অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদ।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম এনামুল হক, বুয়েটের প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফ এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস-এর সাবেক কোষাধ্যক্ষ অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নাম প্রস্তাব করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি সার সংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়।

এই নথি প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করার পর তিনি অধ্যাপক ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন। পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নথিটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর প্রস্তুতি পর্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমার কাছে এলে তিনি এম আবদুস সালাম আজাদ অনুমোদন পাননি-গোপনীয় এ তথ্য ফোনে ছাত্রলীগ নেতা তরিকুলকে জানিয়ে দেন। এরপরেই তরিকুলের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২০ সালের ১ মার্চ নথিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে কৌশলে বের করে ৪ নং গেটের সামনে আসামি ফরহাদের হাতে তুলে দেন ফাতেমা। এ কাজের জন্য ফাতেমাকে আসামিরা ১০ হাজার করে বিকাশে মোট ২০ হাজার টাকা দেয়।

অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়, এরপরেই সেই নথিতে আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া টিক চিহ্নটি ‘টেম্পারিং’ করে সেখানে ক্রস চিহ্ন দেয়। একইভাবে অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফের নামের পাশেও ক্রস চিহ্ন দিয়ে এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেয়। পরে আসামিরা ২০২০ সালের ৩ মার্চ তারিখে নথিটি রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠায়।