জাতীয়

ফাঁসির ৮ আসামি হাইকোর্টে খালাস


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

নোয়াখালী শহরের ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মচারীকে হত্যা মামলায় মত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ আসামির মধ্যে ৮ জনকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। বাকি চারজনের মধ্যে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল এবং একজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ কমিয়ে ১০ বছরের সাজা দিয়েছেন।

সোমবার (৩ জানুয়ারি) বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চ ডেথ রেফারেন্স, জেল আপিল ও আপিল শুনানি শেষে এ রায় দেন।  

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান। আসামিদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন, আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা, আজাহার উল্লাহ ভুঁইয়া ও মোহাদ্দেসুল ইসলাম টুটুল। পলাতক আসামিদের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী সাধন কুমার বণিক।

পরে আইনজীবী আজাহার উল্লাহ ভুঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, আদালত ১২ জনের মধ্যে ৮ জনকে খালাস দিয়েছেন। অনতিবিলম্বে তাদের মুক্তি দিতে বলেছেন। ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তি বিবেচনায় নিয়ে ৩ আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন। আরেকজন আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কমিয়ে ১০ বছরের দণ্ড দিয়েছেন। তবে তিনজন পলাতক রয়েছেন। তাদের আত্মসমর্পণ অথবা গ্রেফতার করতে বলা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মহামান্য হাইকোর্ট রায় ঘোষণার সময় উষ্মা প্রকাশ করেছেন যে, আইন ও সাক্ষ্য-প্রমাণ যথাযথভাবে বিবেচনায় না নিয়ে খেয়ালিভাবে (বিচারিক আদালত) এ রায় দিয়েছেন, যেটা উচিত নয়। আরও সাবধানতার সঙ্গে সাক্ষ্য-প্রমাণ পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে এবং আইনকে যথাযথভাবে বিবেচনায় রেখে এ ধরনের মামলাগুলো নিষ্পত্তির জন্য উচ্চ আদালত তাগিদ দিয়েছেন। যে তিন আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখা হয়েছে তারা হলেন-  কামরুল হাসান প্রকাশ ওরফে সোহাগ, রাশেদ ড্রাইভার ও কামাল হোসেন প্রকাশ এলজি কামাল। এছাড়া আবদুস সবুরকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

হাইকোর্টে খালাস পাওয়া আসামিরা হলেন- মোফাজ্জেল হোসেন, তোফাজ্জল হোসেন, সামছুদ্দিন, সাহাব উদ্দিন, জাফর হোসেন, আলী আকবর, নাসির উদ্দিন ও আবু ইউছুফ।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান বলেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।

নোয়াখালী শহরের ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মচারীকে হত্যা মামলায় ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ ১২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন নোয়াখালীর দ্বিতীয় অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ এন এম মোরশেদ খান। আর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে ১০ আসামিকে।  

নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামি হাইকোর্টে আপিল করেন।

২০০৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাতে নোয়াখালী শহরের জামে মসজিদ মোড় এলাকার মোবাইল ফোনের দোকান বন্ধ করে দুই ভাই ফিরোজ কবির, সামছুল কবির এবং দোকান কর্মচারী সুমন পাল বাসায় ফিরছিলেন। পথে নাপিতের পোল এলাকায় তারা ডাকাতের কবলে পড়েন। ডাকাতেরা তিনজনকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে সড়কের পাশে ফেলে দেন। সঙ্গে থাকা মুঠোফোন, প্রি-পেইড কার্ডসহ ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট করা হয়। আশপাশের লোকজন তাদের উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক সুমন পালকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত ফিরোজ কবির ও সামছুল কবিরকে ঢাকায় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ফিরোজ কবির।

পরে ২০০৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ফিরোজ কবিরের বাবা আবু বকর ছিদ্দিক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা ও ডাকাতির অভিযোগে সুধারাম থানায় মামলা করেন।