জাতীয়

বউকে সরকারি চাকরি পাইয়ে দিতে জালিয়াতি


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

বউকে পরিবার কল্যাণ সহকারী পদে চাকরি পাইয়ে দিতে ঠিকানা পরিবর্তন করে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে নরসিংদীর পরিবার পরিকল্পনার পরিদর্শক আফজাল শরীফের নামে। লিখিত এবং ভাইবা পরীক্ষার পর চূড়ান্ত যাচাই-বাছাইয়ের জন্য নিজের দেওয়া ঠিকানায় পাওয়া যায়নি আফজালের স্ত্রী মনিরা আক্তারের কোনো তথ্য।

জানা যায়, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, পরিবার পরিকল্পনা সহকারী এবং আয়াসহ ১১৭টি শুন্য পদে জনবল নিয়োগের জন্য ২০২১ সালের ৩১ আগস্ট সিদ্ধান্ত নেন অধিদপ্তর। জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে আবেদন করা প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে নেওয়া হচ্ছে ভাইবা। পাশাপাশি ভাইবার উত্তীর্ণ প্রার্থীদের চূড়ান্ত যাচাই-বাছাই করছে জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বাধীন সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

আবেদনে উল্লেখিত পরিবার পরিকল্পনা সহকারী পদে কেবল পাঁচদোনা ইউনিয়নের ৫/৬ নম্বর ওয়ার্ডের (চরমাহমুদপুর, চরমাধবদী, পাকই, চরপাড়া, বাগবাড়ি, কংশাদি,পাটুয়া) গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দারাই আবেদনের যোগ্য হলেও পাঁচদোনা ইউনিয়নে নিজের বউকে চাকরি পাইয়ে দিতে স্থায়ী ঠিকানা নেহাব গোপন করে চরপাড়া দিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনার পরিদর্শক আফজাল শরীফের নামে। পরীক্ষার আবেদনে মনিরা আক্তারের ঠিকানা: চরপাড়া গ্রাম। রোল নম্বর: ১২০৩৯১৬২২। এর করে ওয়ার্ডের প্রকৃত নাগরিকদের চাকরি থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে পাঁচদোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান দৈনিক আমাদের সময়কে বলেন, ‘মনিরা আক্তার পাঁচদোনা ইউনিয়নের নেহাব গ্রামের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা ও তার বাবার বাড়ি রায়পুরা উপজেলায়। তিনি কি করে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের শুন্যপদে আবেদন করলেন তা আমাদের জানা নাই। যেসব কাগজপত্র দাখিল করা হয়েছে তা তিনি কিভাবে সংগ্রহ করেছেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমি তাকে কোনো পরিচয় পত্র দিইনি। হয়তো স্বাক্ষর জাল করে তৈরি করেছেন। নিয়োগের স্বচ্ছতা যাচাইয়ের জন্য মনিরার প্রার্থীতা বাতিল করা দরকার।’

এদিকে পাঁচদোনা ইউপি ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. নজরুল ইসলাম গাজী বলেন, ‘আমার চরপাড়া এলাকায় আফজাল তার বোন বিয়ে দিয়েছেন। বোন বিয়ে দিয়ে তিনি আমার এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে গেল কিভাবে আমার জানা নেই। আফজাল আগে থেকে জালিয়াতি করতেন। এটা তার তৃতীয় স্ত্রী। সরকারি চাকরির লোভে তিনি জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন।’

সরজমিনে তদন্তে আসা পাচঁদোনা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা শান্তি রঞ্জন দাস বলেন, ‘আমি তিন দিন চড়পাড়া ঘুরে মনিরা নামে কাউকে খুঁজে পাইনি। এখানে তাদের কোনো অস্তিত্ব নেই। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে এলাকার স্থানীয় লোকদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারছি চরপাড়া এলাকায় তারা থাকেন না। তাদের বাড়ি নেহাব গ্রামে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মনিরার স্বামী আফজাল শরীফ বলেন, ‘নেহাব গ্রামে আমাদের স্থায়ী ঠিকানা। তবে আমরা অচিরেই আবেদন করা এলাকা চরপাড়ায় বসতি গড়ব, জায়গা কেনার জন্য কথা হচ্ছে। তবুও যদি আমার স্ত্রী চাকরির অযোগ্য হয় তাহলে কর্তৃপক্ষ যা সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই চূড়ান্ত হবে।’

ঠিকানা কেন জালিয়াতির করলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঠিকানা দুটা ব্যবহার করা যায়। কর্তৃপক্ষ বাদ দিলে মেনে নেব।’

নেহাব থেকে চড়পাড়ায় আবেদন করা যায় কি না জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দিতে রাজি হননি।

নরসিংদী স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর এর উপ-পরিচালক ও নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব অরবিন্দু দাস বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ঠিকানা যাচাই-বাচাই করছি। ঠিকানা জালিয়াতি করলে তাকে আমরা বাদ দেব। আমাদের কর্মকর্তা ও মনিরার স্বামীর নামে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’