জাতীয়

বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না বিএনপি : আমীর খসরু


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

বর্তমান সরকারের অধীনে ‘নির্বাচন ও সংলাপ’ কোনোটাতে বিএনপি ‍যাবে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘অন্তরে মম শহীদ জিয়া’ নামে একটি সংগঠনের উদ্যোগে ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য ও বর্তমান বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা জানান।

আমীর খসরু বলেন, ‘আমি পরিস্কার করে বলতে চাই, বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, আগামী নির্বাচনে এই রেজিমের অধীনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। শুধু তাই নয়, কোনো আলোচনায় বিএনপি যাবে না। কারণ, আমরা বিগত দিনে আলোচনাও করেছি, নির্বাচনে অংশগ্রহণও করেছি। তার ফলাফল বাংলাদেশের মানুষ পেয়েছে, বিশ্বাবাসীর কাছে এটা পরিস্কার দিনের আলোর মতো। সুতরাং এই রেজিমের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া যাবে না, আলোচনায়ও যাওয়া যাবে না।’

এ সময় খসরু বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, একমাত্র নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আলোচনা শুরু হতে পারে। যখন বাংলাদেশে নিরপেক্ষ সরকার দায়িত্ব নেবে তখন আলোচনা হতে পারে কীভাবে বাংলাদেশে নির্বাচন হবে, নির্বাচন কমিশন কীভাবে হবে এবং অন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো যেগুলো নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত তাদের কার্যক্রম কীভাবে আগামী দিনে হবে। তার আগে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই। এই অনির্বাচিত একটা সরকারকে বিদায় করে একতাবদ্ধ হয়ে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যাতে নির্বাচন হতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। যে আন্দোলনের ডাক তারেক রহমান সাহেব দিয়েছেন, বিএনপি দিয়েছে এই আন্দোলনকে সফল করার জন্য সকলকে প্রস্তুতি নিতে আমি আহ্বান রাখছি।’

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের পেছনে আওয়ামী লীগই দায়ী অভিযোগ করে আমীর খসরু বলেন, ‘এই সাম্প্রদায়িক সমস্যা সৃষ্টির পেছনে মূলত যে দলটি কাজ করছে সেটা হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আজকে (কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপে হামলা) যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে এটা দিনের আলোর মতো পরিস্কার কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। যারা এই ঘটনার শিকার তারা বলেছে। এখানে এমপির কথা বলেছে, এখানে মেয়রের কথা বলেছে, এখানে ছাত্রলীগের কথা বলেছে, তাদের সমর্থকদের কথা বলেছে। এই ঘটনাগুলো পত্র-পত্রিকায়, সোশ্যাল মিডিয়াতে এসেছে কারা জড়িত। তারপরেও তারা (সরকার) আইনের শাসনের নামে যে বেআইনি কাজগুলো করছে এবং সাধারণ নিরীহ মানুষের ওপর দায় চাঁপিয়ে তারা আজকে সবচেয়ে বড় ক্ষতি করছে যে, আগামী দিনের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে তারা বাধাগ্রস্থ করতে চাচ্ছে। কারণ তারা বিচার করছে না। গত ৯ বছরে তিন হাজারের উপরে হিন্দু সম্প্রদায় ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ হয়েছে। কোনোটার বিচার হয়নি। আজকে যে ঘটনা ঘটেছে তারা যেভাবে এগুচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে, এই ঘটনারও তারা বিচার করতে চাচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকে যারা সরকারে আছে তাদেরকে আমি সরকার বলে অভিহিত করি না, এটাকে রেজিম বলি। সরকার হয় কখন যারা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হয়, সরকার হয় কখন যখন একটা রাজনৈতিক দল সত্যিকার অর্থে সরকার পরিচালনা করে। আজকে বাংলাদেশে সত্যিকার অর্থে কোনো রাজনৈতিক দল সরকার পরিচালনা করছে না। এটা একটা রেজিম, দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী, দুর্নীতি সরকারি কর্মকর্তাসহ এদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটা রেজিম সৃষ্টি করেছে এবং এই রেজিমের মাধ্যমে দেশের মানুষের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম যেটা হচ্ছে মানুষের ধর্ম-কর্ম করার অধিকার সেটাও তারা কেড়ে নিয়েছে। ইতিমধ্যে তারা মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে, দেশের মানুষের আইনের শাসন কেড়ে নিয়েছে, বাক স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে, দেশের মানুষের সর্বস্তরের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এখন জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলে একতাবদ্ধ হয়ে এই সরকারকে সরিয়ে দিতে হবে। এ ছাড়া আর কোনো বিকল্প নাই।’

সংগঠনের উপদেষ্টা ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন রাসেলের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আহ্বায়ক আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, খোন্দকার আব্দুল হামিদ ডাবলু ও মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য নাদিয়া পাঠান পাপন প্রমুখ।