জাতীয়

বানরের ওপর ট্রায়ালের ফল জমা দিতে চায় বঙ্গভ্যাক্স


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

বানরের ওপর বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড উদ্ভাবিত করোনার টিকা বঙ্গভ্যাক্সের ট্রায়ালের ফল বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের (বিএমআরসি) কাছে জমা দিতে চায় এ সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানটির গবেষক দল।

তারা বলছেন, বানরের ওপর বঙ্গভ্যাক্সের ট্রায়াল বাংলাদেশের ইতিহাসে বিজ্ঞান গবেষণায় এক নতুন মাইলফলক। এ ট্রায়ালটি গত ১ আগস্ট থেকে শুরু করা হয়েছে। সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে ট্রায়াল সম্পন্ন করে প্রাপ্ত ফল আগামী অক্টোবরের শুরুতে বিএমআরসিতে জমা দেওয়া হবে। হিউম্যান ট্রায়ালের ইথিক্যাল ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন করা হবে। দ্রুত অনুমতি দেওয়া হলে আড়াই মাসের হিউম্যান ট্রায়াল করে ডিসেম্বরের মধ্যে বাজারে টিকা আনা সম্ভব বলে মনে করে গবেষক দল।

গতকাল বৃহস্পতিবার গ্লোব বায়োটেকের কোয়ালিটি অ্যান্ড রেগুলেটরি অপারেশনসের ব্যবস্থাপক ও গবেষক দলের অন্যতম সদস্য মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, বানরের ওপর বঙ্গভ্যাক্সের ট্রায়ালের সন্তোষজনক ফল পাওয়া যাচ্ছে, সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ সফলভাবে বানরের ওপর এই ট্রায়াল সম্পন্ন করার ইচ্ছা আছে। আশা করি, অক্টোবরের শুরুতে বানরের ওপর করা বঙ্গভ্যাক্সের ট্রায়ালের ফল বিএমআরসিতে জমা দেওয়া যাবে। তিনি বলেন, এ পর্যায়েও হিউম্যান ট্রায়ালের জন্য বিএমআরসি ক্লিনিক্যাল ক্লিয়ারেন্স দিলে হিউম্যান ট্রায়াল শুরু হতে পারে।

এই গবেষক দাবি করেন, বানরের ওপর বঙ্গভ্যাক্সের ট্রায়াল বাংলাদেশের ইতিহাসে বিজ্ঞান গবেষণায় এক নতুন মাইলফলক। এর আগে ইঁদুর ও গিনিপিকের ওপর ট্রায়াল হয়েছে। মানুষ ও বানরের জেনেটিক্যাল পার্থক্য মাত্র দুই শতাংশ। এটা এমনিতেই মানবদেহে প্রয়োগ করা যায়।

গত ২২ জুন গ্লোব বায়োটেককে চিঠি দিয়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আগে বানর অথবা শিম্পাঞ্জির ওপর টিকার ট্রায়াল করতে বলে বিএমআরসি। বানরগুলো ধরতে গিয়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের তোপের মুখে পড়েছিলেন গ্লোব বায়োটেকের কর্মকর্তারা।

গবেষক দলের সদস্য মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, বানরের ওপর বঙ্গভ্যাক্সের পরীক্ষার জন্য বিদেশে চেষ্টা চলছে। ভারত বলছে জিটুজি পদ্ধতিতে আবেদন করতে বলায় সংশ্লিষ্ট বিভাগে চিঠি দেওয়া হয়েছে। উন্নত বিশ্বের দেশগুলো বলছে এমআরএনএ টিকার বানরে ওপর পরীক্ষার দরকার নেই। বিএমআরসি বলছে করা লাগবে।

তিনি বলেন, ভারতে কোভ্যাক্সিনের ট্রায়াল হয়েছিল বানরের ওপর। বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে মহারাষ্ট্রের জঙ্গল থেকে বানর সংগ্রহ করে তারা ট্রায়াল করেছিল।

গ্লোব বায়োটেকের তথ্যমতে, ইথিক্যাল ক্লিয়ারেন্সের জন্য বিএমআরসির কাছে টিকার ফেজ-১ ও ফেজ-২ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রটোকল গত ১৭ জানুয়ারি জমা দেওয়া হয়।

ইথিক্যাল কমিটি প্রটোকল পর্যালোচনা করে শতাধিক বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দেয়। পরে ৯ ফেব্রুয়ারি বিএমআরসি এ বিষয়ে একটি চিঠি দেয়। পরে সেসব প্রশ্নের জবাবসহ সংশোধিত প্রটোকল ও প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বিএমআরসিতে জমা দেয় গ্লোব। তার চার মাস পর গত ২২ জুন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আগে বানর অথবা শিম্পাঞ্জির ওপর টিকাটির ট্রায়াল করতে বলে বিএমআরসি।

মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমরা বিএমআরসির সহযোগিতা পাইনি। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের নৈতিক অনুমোদন না দিয়ে বানরের শরীরে ট্রায়ালের জন্য শর্ত জুড়ে দেওয়ার অর্থ হচ্ছে, এই টিকা যাতে উৎপাদন করতে বা অনুমোদন পেতে আরও অনেক সময় লাগে। এটি যেন আলোর মুখ না দেখে। যদি বানরের শরীরে প্রয়োগের প্রয়োজন হতো, তবে বিএমআরসি আরও চার মাস আগে এসব জানাতে পারত।’