জাতীয়

বিএনপির হাতে হারিকেন ধরিয়ে দেওয়া দরকার: প্রধানমন্ত্রী


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এখন দেশে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা হচ্ছে। তার মানে এই নয় যে, এখান থেকে লুটপাট করা হচ্ছে। এক সময় বিএনপি নেতারা হারিকেন নিয়ে আন্দোলন করতো। এখন তাদের হাতে হারিকেন ধরিয়ে দেওয়া দরকার।

সোমবার (১ আগস্ট) শোকাবহ আগস্ট মাস উপলক্ষে কৃষক লীগের কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ‌্যমে তিনি অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা স্বাধীন রাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু যখন সৃষ্টি করেন, তখন যারা আমাদের সেনাবাহিনীতে মেজর ছিলেন তাদের মেজর জেনারেল পর্যন্ত প্রমোশন হয়। এটা তো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুরই দেওয়া। অথচ কি দুর্ভাগ্য আমাদের, যাদেরকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করলেন, যাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করলেন, আমরা সন্তানরা পিতার স্নেহ থেকে বঞ্চিত হলাম, আমার মা সারাটা জীবন ত্যাগ স্বীকার করলো, সেই বাঙালিদের হাতে আমার বাবাকে জীবন দিতে হলো। মাকে জীবন দিতে হলো, ভাইকে জীবন দিতে হলো। এই প্রশ্নের উত্তর কখনও খুঁজে পাইনি। এত বড় বেইমানি, এত বড় মোনাফেকি কীভাবে করে।’

স্বাধীনতা পরবর্তী ঘটনার বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘৭৫-এর আগে বারবার অপপ্রচার চললো। কামালকে তো ব্যাংক ডাকাত বানালো। বাবার বিরুদ্ধে অপপ্রচার, আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার। শুধু বাংলাদেশে নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও অপপ্রচার চালানো হয়েছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মানুষের ধারণা ছিল কোটি কোটি লোক না খেয়ে মারা যাবে। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ যখন গড়ে তোলা হবে, যখন গোলায় খাদ্য নেই, যুদ্ধকালীন ফসল উৎপাদন হয়নি… তখন ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে মাত্র সাড়ে তিন বছরে বঙ্গবন্ধু দেশকে এগিয়ে নিয়ে যান। বাংলাদেশ পায় স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা। সেই সময় সবাই মিলে কাজ করে দেশটাকে গড়ে না তুলে প্রথম থেকে শুরু হয়ে গেলো সমালোচনা। নগদ টাকা দিয়ে কেনা খাদ্যের জাহাজ বাংলাদেশ পৌঁছাতে দিলো না আমেরিকা। উত্তরবঙ্গে যে দুর্ভিক্ষ সেটা তো সারাজীবনই ছিল। দুর্ভিক্ষ যতটা না হয়েছে তার চেয়ে বেশি হয়েছে অপপ্রচার।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাসন্তী নামের একটি মেয়েকে জাল পরিয়ে ছবি তুলে সারা বিশ্বে প্রচার করা হলো। অথচ সেই সময় ১০-১২ টাকায় শাড়ি পাওয়া যায়। একটা মাছ ধরা জালের দাম ১৫০ টাকার নিচে ছিল না। ইত্তেফাকের একজন আর উত্তরবঙ্গের এক সাংবাদিক ছবিটি তুলেছিল। তারা দুজনই মারা যান। উত্তরবঙ্গের যে মোনাজাত উদ্দিন তিনি পানিতে ডুবে মারা গিয়েছিলেন‌। আর ইত্তেফাকের যিনি, তাকে তার গাড়ির ড্রাইভারই খুন করে। এই ছবি দিয়ে অপপ্রচার করা হয়, নানা কথা। সেই সঙ্গে কিছু স্বার্থান্বেষী ছাত্রলীগ থেকে বেরিয়ে নতুন সংগঠন করে। দুই সপ্তাহব্যাপী কী কী করা হবে সেটা (পরিকল্পনা) করে সমস্ত জায়গায় লোক পাঠিয়ে তারা এই অপপ্রচারগুলো চালালো। এটাই ছিল তাদের লক্ষ্য।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘৮১ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে আমি যখন ফিরে এলাম, তখন সারা বাংলাদেশ ঘুরেছি। যে দুর্ভিক্ষের জন্য বাবাকে দোষারোপ করা হয়েছিল, দেশে আসার পর দেখি সেসব জায়গায় প্রতি বছর দুর্ভিক্ষ হয়। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ছুটে গিয়েছি সহযোগিতা করেছি‌। আমার ইচ্ছা ছিল বাসন্তীকে দেখবো; যে, আমার বাবার রক্ত, আমার মা, ভাইদের রক্ত বাসন্তীদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে পারলো কিনা। যে অপবাদ দিয়ে ১৫ আগস্ট ঘটানো হলো, দেশের কী পরিবর্তন তারা আনলো— সেটা দেখার ইচ্ছা ছিল বলে চিলমারিতে তিন মাইল কাদা-পানি ডিঙিয়ে বাসন্তীর বাড়ি গিয়েছিলাম। দেখলাম বাসন্তী ছেঁড়া কাপড় পরা। তার মা অসুস্থ। শুয়ে আছে পুরনো একটা চালার নিচে। সেটাকে ঘর বলা যায় না। মাছি ভনভন করছে। আমার বাবার রক্ত নিয়ে তো বাসন্তীদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। তাহলে কেন হত্যা করা হলো। এদেশের মানুষ শোষণ বঞ্চনার শিকার থেকে গেলো। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে চোর বানালো, ডাকাত বানালো। দেশের মানুষের জন্য কী করলো সেটাই তো বড় প্রশ্ন।’