আন্তর্জাতিক

ভারতে দেশীয় ভ্যাকসিন অনুমোদনের সুপারিশ


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

ভারতে এবার দেশীয় তৈরি একটি ভ্যাকসিন জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদনের সুপারিশ করেছে দেশটির ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের অধীন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইর বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম বিবিসি একথা জানিয়েছে।

‘কোভ্যাক্সিন’ নামের এই ভ্যাকসিনটি ভারতেই তৈরি করা হয়েছে। দেশের চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণা সংস্থা আইসিএমআরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ভারত বায়োটেক এই ভ্যাকসিনটি তৈরি করেছে।

এ নিয়ে ভারতে দুটি করোনা ভ্যাকসিন জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের অনুমোদনের সুপারিশ করা হলো। তবে দেশীয় কোভ্যাক্সিনের নিয়ন্ত্রিত জরুরি ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে।

এর আগে গত শুক্রবার অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনকে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনের জন্য ছাড়পত্র দিয়েছিল ভারতের বিশেষজ্ঞ কমিটি। কমিটির ছাড়পত্রের পর দুটি ভ্যাকসিন সংক্রান্ত নথিই এখন ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে যাবে চূড়ান্ত স্বাক্ষরের জন্য।

আজ রোববার ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রক একটি সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিক ছাড়পত্র দেওয়ার কথা ঘোষণা করতে পারে।

অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনটি ভারতে তৈরি করছে সেরাম ইনস্টিটিউট। এটি ছাড়াও ভারতের নিজস্ব ভ্যাকসিন কোভ্যাক্সিন এবং ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিনও জরুরি ভিত্তিতে অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়েছিল।

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার যে ভ্যাকসিনটি ভারতে সেরাম ইনস্টিটিউট তৈরি করছে, সেটি নিরাপদ কি না, তার পরীক্ষা ভারতে এক হাজার ৬০০ মানুষের মধ্যে চালানোর কথা ছিল। কিন্তু ঠিক কতজনের শরীরে এ পরীক্ষা করা হয়েছে এবং তাতে কী তথ্য তা থেকে বেরিয়ে এসেছে, সেসব গোপন তথ্য শুধু বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছেই জমা দিয়েছে সেরাম ইনস্টিটিউট।

এত কম স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে পরীক্ষা চালানোর পরেও সেরাম ইনস্টিটিউট যে ছাড়পত্র পাওয়ার আবেদন করতে পেরেছে, তার কারণ যুক্তরাজ্যে এরই মধ্যে ভ্যাকসিনটি অনুমোদন পেয়েছে এবং সেখানে তারা ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা নিয়ে যে তথ্য যুক্তরাজ্যের ওষুধ নিয়ন্ত্রকের কাছে জমা দিয়েছে, সেই একই তথ্য তারা প্রমাণস্বরূপ ভারতেও জমা দিয়েছে।

শনিবার যে কোভ্যাক্সিন ভ্যাকসিনটির নিয়ন্ত্রিত জরুরি অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে, তার তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চলছে। মোট ২৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে তৃতীয় পর্যায়ের কার্যকারিতা পরীক্ষা (এফিকেসি ট্রায়াল) চলার কথা, কিন্তু গত সপ্তাহ পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবক নথিভুক্ত হয়েছেন ১৩ হাজারের মতো।

ভারতে অনুমোদনের জন্য আবেদন জানিয়েছ ফাইজার-বায়োএনটেকও। তারা বলেছে, তাদের ভ্যাকসিন যেন কোনো ট্রায়াল ছাড়াই ভারতে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। যুক্তি হিসেবে তারা বলছে যে তাদের ভ্যাকসিনটি এরই মধ্যে বাজারে চলে এসেছে এবং মানুষকে দেওয়াও হচ্ছে।

এদিকে শনিবার ভারতে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন দেওয়ার একটি ড্রাই রান বা মহড়া হয়েছে। এটি দ্বিতীয় দফার মহড়া। এর আগে ২৮ ও ২৯ ডিসেম্বর উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব এবং পশ্চিম- দেশের এই চার প্রান্তের চার রাজ্যে মহড়া চালানো হয়।

শনিবার প্রতিটি রাজ্যের রাজধানীতে তিনটি জায়গায় এই সার্বিক মহড়া চলেছে। দুর্গম কিছু অঞ্চলকেও মহড়ার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল। প্রতি শহরে তিনটি ভবনের প্রত্যেকটিতে ২৫ জন করে স্বাস্থ্যকর্মী ছিলেন, যারা ভ্যাকসিন গ্রহীতার ভূমিকা পালন করেন। মহড়ার তথ্য ‘কো-উইন’ নামের একটি অ্যাপে নথিবদ্ধ করা হয়। ওই অ্যাপটির মাধ্যমে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনর ব্যবস্থাপনা চালানো হবে গোটা ভারতে।

এই ড্রাই রানে পরিকাঠামো যেমন খতিয়ে দেখা হয়েছে, তেমনই যেসব স্বাস্থ্য কর্মী ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজে যুক্ত থাকবেন, তাদেরও কাজ খতিয়ে দেখা হয়।

ভ্যাকসিন পরিবহন থেকে শুরু করে রেফ্রিজারেশনে রাখা, স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা হাসপাতালে পৌঁছানো, কতজনকে একেকদিনে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে- এমন প্রতিটা খুঁটিনাটির মহড়া দেওয়া হয়েছে।