চট্টগ্রাম

মাইক্রোবাসকে ট্রেনের ধাক্কা, নিহত ১১


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে লেভেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ১১ আরোহী জন প্রাণ হারিয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৫ জন।

শুক্রবার (২৯ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, মাইক্রোবাসে ১৩ যাত্রী ছিলেন। তারা খৈয়াছড়া ঝরনা দেখে ফেরার সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতীর ধাক্কায় ১১ যাত্রী ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আহত ৫ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার দুপুরে মিরসরাই বড়তাকিয়া এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ১১ আরোহী নিহত হন। গুরুতর আহত হন অন্তত পাঁচজন। হতাহত সবাই আর অ্যান্ড জে কোচিং সেন্টারে ছাত্র-শিক্ষক। তাঁদের সবার বাড়ি খন্দকিয়া গ্রামে। তাঁরা মিরসরাইয়ে ঝরনা দেখতে যাচ্ছিলেন।

স্থানীয় বাসিন্দা ডা. মোহাম্মদ ইউসুফ মিঞা বলেন, ‘নিহত সবাই স্কুল-কলেজের ছাত্র। পাশাপাশি তারা গ্রামে কোচিং সেন্টার চালায়। এলাকার মেধাবী এতগুলো ছেলে একসঙ্গে চলে যাওয়া মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। এই শূন্যতা কীভাবে পূরণ হবে বুঝতে পারছি না।’

বিকেলে খন্দকিয়া গ্রামের যুগীর হাট এলাকায় ঢুকতেই দেখা যায়, রাস্তায় ২০০ থেকে ৩০০ মানুষ, কেউ একা দাঁড়িয়ে, কেউবা জটলা করে নিজেদের মধ্যে কথা বলছেন। সবাই বিষাদগ্রস্ত। এখানে বাজারের পাশে কোচিং সেন্টারটি অবস্থিত। এলাকার আশপাশের শিক্ষার্থীরা সেখানে কোচিং করে। দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে কোচিং সেন্টারের চারজন শিক্ষক রয়েছেন।

যুগীর হাট বাজারে আবদুর রহিম নামের এক ব্যক্তি বলেন, দুর্ঘটনাটির কথা শোনার পর থেকে তিনি কান্না ধরতে রাখতে পারছেন না। রহিমের মুখ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে রিকশাচালক মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘আমি শোনার পর চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। সবাই এলাকার ছেলে। তাদের পরিবারের কী হবে। মা-বাবা কীভাবে নিজেদের সান্ত্বনা দেবে।’

যুগীর হাট বাজার থেকে প্রায় ৫০০ মিটার উত্তরে সাবরেজিস্ট্রারের বাড়ি। এর শেষ প্রান্তে মাইক্রোবাসচালক গোলাম মোস্তফা নিরুর (২৬) বাড়ি। বাড়ির ভেতর ঢোকার মুখে রাস্তার ওপর দাঁড়ানো শতাধিক মানুষ। বাড়ি থেকে ভেসে আসে কান্নার শব্দ। ঘরের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, গোলাম মোস্তফার স্ত্রী রুপা আক্তার বুক ফেটে কাঁদছেন। তাঁকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন ১০ থেকে ১৫ জন নারী। একজন বলেন, পাঁচ বছর আগে বিয়ে হয় গোলাম মোস্তফার। তাঁদের রুহি আক্তার নামের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।

মোস্তফার বাবা মো. ইউসুফ বলেন, রুহি কাকে বাবা ডাকবে?

সেখানে ১০ মিনিট অবস্থান করতে না করতে বাড়তে থাকে মানুষের ভিড়। প্রতিবেশী মিনু আক্তার বলেন, প্রতিবেশীদের সঙ্গে মোস্তফার ভালো সম্পর্ক ছিল। এখন তাঁর পরিবারের কী হবে।

মোস্তফার বাড়ি থেকে প্রায় এক হাজার মিটার দক্ষিণে কলেজছাত্র জিয়াউল হকের বাড়ি। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের মেঝেতে বসে বিলাপ করছেন তাঁর মা শাহনাজ আক্তার। বলছেন, ছেলেকে তাঁর বুকে ফিরিয়ে দিতে। সেই বাড়ির সামনেও ভিড়। কেউ আসছেন পরিবারটিকে সান্ত্বনা দিতে, আর কেউ আসছেন হতাহতদের খবরাখবর নিতে।