জাতীয়

‘মেরে ফেললে মরদেহটা দেন, মাটি দেব’


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

গত কয়েক বছরে দেশে অনেক গুম ও নিখোঁজ হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আজ শনিবার প্রেসক্লাবে মায়ের ডাক আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেখানে কথা বলেন ওই সব স্ত্রী ও মায়েরা যাদের কাছের মানুষ আজও নিখোঁজ।

এসময় কথা বলেন নাসিমা আক্তার স্মৃতি নামে এক স্ত্রী। কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীকে মেরে ফেললে তার মরদেহটা দেন, আমরা মাটি দেব। আমরা একটু মিলাদ পড়াতে চাই। আর বেঁচে থাকলে সেই তথ্যটা আমাদের দেন তিনি কোথায় আছেন।’

নাসিমা আক্তার বলেন, ‘মায়েদের চোখের পানি নিয়ে এমপি-মন্ত্রীরা উপহাস করে, হাসে। তারা বলে আমাদের স্বামীরা বিয়ে করে অন্য কোথাও চলে গেছেন। দেশে নাকি গুম নেই।’

স্মৃতি বলেন, ‘আমাদের কথা কি প্রধানমন্ত্রীর কানে পৌঁছায় না, আমাদের জন্য কি কারও মন কাঁদে না। আমরা প্রতিমুহূর্তে মরে যাচ্ছি। আমরা জীবন্ত লাশ হয়ে বেঁচে আছি। আমাদের মুখে কখনো হাসি আসে না।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের ঘরে কোনো অনুষ্ঠান হয় না। আমার বাচ্চারা জিজ্ঞেস করে, সবার তো বাবা আছে আমাদের বাবা নেই কেন। আমি উত্তর দিতে পারি না।’

গত ২০১৯ সালের ১৯ জুন কাঠ ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন বাতেনকে নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে র‌্যাব-৪ তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ আছেন।

বাতেনের স্ত্রী বলেন, ‘আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর আমি দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি। র‌্যাবের বিরুদ্ধে থানায় জিডি পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। তিন বছর পর এসে পুলিশ প্রশ্ন করে, আমার স্বামী গুম হয়েছে এটা সত্য না মিথ্যে?’

‘এসব শোনার পর প্রশাসনের ওপর, পুলিশের ওপর, আইনের ওপর আস্থা থাকে না। এ দেশে কোনো আইন নেই, কোনো শাসন নেই। আমরা র‌্যাবের কাছে আজ জিম্মি’ যোগ করেন তিনি।

রাজধানীর বংশাল এলাকা থেকে গুম হওয়া পারভেজের স্ত্রী ফারজানা বলেন, ‘আমার স্বামীকে গুম করার পর এখন আমাদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। নিয়মিত আমাদের বাসায় পুলিশ আসে। কিছুদিন আগের এক আওয়ামী লীগের নেতাসহ পোশাক পরিহিত একজন এবং পোশাক ছাড়া বেশ কয়েকজন পুলিশ রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমাদের বাসায় আসে।’

তিনি বলেন, ‘আমি বাসায় ছিলাম না। আমার শাশুড়িকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে শাশুড়ির ফোন থেকে আমাকে কল দেয় পুলিশ। আমাকে থানায় দেখা করতে বলে। আমি যেতে অস্বীকার করলে আমাকে রেস্টুরেন্টে দেখা করতে বলে।’

ফারজানা বলেন, ‘পুলিশ আমার শাশুড়িকে বলেন যে, আপনার ছেলের বউ আপনার কাছ থেকে ছেলেকে আলাদা করে রেখেছে। সে জানে আপনার ছেলে কোথায় আছে। এভাবে আমাদের মানসিক নির্যাতন করছে পুলিশ।’

সাদা কাগজে স্বাক্ষর করাসহ গুমের শিকার পরিবারগুলোকে সম্প্রতি নানাভাবে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে। তবে ভুক্তভোগী পরিবার ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।