আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী জেনেট ইয়েলেন


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী হচ্ছেন একজন নারী। তিনি জ্যানেট ইয়েলেন। তাকেই কেবিনেটের গুরুত্বপূর্ণ এই পদে বেছে নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সোমবার (২৫ জানুয়ারি) সিনেটে ৮৪ ভোটে জ্যানেট ইয়েলেন অর্থমন্ত্রী হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। ইতিমধ্যে তিনি সিনেট ফিন্যান্স কমিটির সর্বসম্মতি ও সাবেক অর্থমন্ত্রীদেরও দ্বারা স্বীকৃতি পেয়েছেন।

এর আগে ১৯ জানুয়ারি কংগ্রেসে ভোটের মাধ্যমে চূড়ান্ত হয় তার মনোনয়নের বিষয়টি। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলো বলছে, ইয়েলেন এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করেন। ইয়েলেনকে অর্থমন্ত্রী করার মধ্য দিয়ে এই পদে ২৩১ বছর ধরে চলা লিঙ্গবৈষম্য দূর হতে যাচ্ছে। ১৭৮৯ সালের বৈশ্বিক মন্দার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে লেবার মার্কেট বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদকে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হলেও এবারই প্রথম এই পদে নারীকে মনোনয়ন দেওয়া হলো।

যুক্তরাষ্ট্রে মহামারি ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় মোকাবিলায় জো বাইডেন প্রশাসনে দায়িত্ব পালন করবেন জ্যানেট। করোনায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ও সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এক দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলারের বিশাল প্রণোদনা প্যাকেজ এনেছেন বাইডেন। সেটি বাস্তবায়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে জ্যানেটের।

বাইডেন প্রশাসনের আশা, যুক্তরাষ্ট্রে ক্রমবর্ধমান বৈষম্য দূর করে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবেন ইয়েলেন। করোনা পরিস্থিতিতে ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপ করা করের বোঝা থেকে সাধারণ নাগরিকদের বের করে এনে অর্থনীতিকে স্বাভাবিকীকরণের দায়িত্ব তার ওপর অর্পিত হচ্ছে।

৭৪ বছর বয়সী ইয়েলেনের মনিটারি পলিসি নিয়ে ২০ বছর ধরে কাজ করে আসছেন। তিনি ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী হিসেবে ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পান। ২০১৮ সালে এই পদে তার মেয়াদ বাড়াননি ট্রাম্প।

জেনেট ইয়েলেন বলেন, ‘আমাদের এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, যুক্তরাষ্ট্রে কেউ আর ক্ষুধার্ত থাকবে না। তাদের টেবিলে খাবার থাকবে। তারা গৃহহীন হবে না। আমাদের সত্যি এসব সমস্যাকে চিহ্নিত করতে হবে। এবং আমি মনে করি, এসব সমস্যার ব্যাপারে কোনো ছাড় দেয়া যাবে না।’

জ্যানেট নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইকোনোমিকসে পিএইচডি করেন। বিল ক্লিনটনের প্রশাসনে তিনি শীর্ষ অর্থনৈতিক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। তার স্বামী জর্জ অ্যাকারলফ অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ী। চিকিৎসক ও শিক্ষক পরিবারের মেয়ে জ্যানেট ইয়েলেনের নিজের পরিবারটা গড়ে উঠেছে একেবারে অর্থনীতি নিয়ে। ইয়েলেনের বেড়ে ওঠা নিউইয়র্কে শহরে। ব্রাউন ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে ডিগ্রি নেন। পিএইচডি করেন ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে। সরকারি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন ছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষকতা করেছেন তিনি।

জ্যানেট ইয়েলেনের স্বামী নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ জর্জ আকেরলফ। দুজনের পরিচয়টাও এই অর্থনীতি নিয়েই। জ্যানেট ইয়েলেন ১৯৭৭ সালে প্রথম চাকরি শুরু করেন ফেডারেল রিজার্ভে। সেখানকার আরেক কর্মী জর্জের আকেরলফের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। দুজনের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক বছরের মধ্যে বিয়ে করেন তারা। পরে দুজনই একসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে শিক্ষকতা পেশায় যোগ দেন। এই দম্পতির এক ছেলে রয়েছে। তিনিও অর্থনীতির অধ্যাপক।