জাতীয়

যে ৭ কাজ মানুষকে ধ্বংস করে


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষকে সাতটি কাজ ছেড়ে দিতে বলেছেন। যে কাজগুলো করলে মানুষ নিশ্চিত ধ্বংস হবে। জাহান্নামই হবে তার স্থান। হাদিসে পাকে এ প্রসঙ্গে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেন-

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক কাজ ছেড়ে দাও। সাহাবাগণ জানতে চাইলেন, সেগুলো কী? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন-

১. আল্লাহ তাআলার সঙ্গে কাউকে শরিক করা।

২. জাদু করা।

৩. অন্যায়ভাবে কোনো প্রাণ সংহার (কাউকে হত্যা) করা।

৪. সুদ খাওয়া।

৫. ইয়াতিমের সম্পদ গ্রাস করা।

৬. যুদ্ধ থেকে পলায়ন করা।

৭. মুমিনা নারীর প্রতি অপবাদ দেয়া। (বুখারি)

হাদিসে ঘোষিত এ বিষয়গুলো কোরআনুল কারিমের একাধিক স্থানে আল্লাহ তাআলা সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন। তাহলো- আল্লাহর সঙ্গে শিরক- শিরক অনেক বড় অপরাধ। হজরত লোকমান তার ছেলেকে শিরক না করতে নিষেধ করেন। আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে উল্লেখ করেন-

যখন লোকমান উপদেশ স্বরূপ তার ছেলেকে বলল, হে বৎস! আল্লাহর সঙ্গে শরিক করো না। নিশ্চয় আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করা মহা অন্যায়। (সুরা লোকমান: আয়াত ১৩)

জাদু করা- ইসলামে জাদু মারাত্মক অপরাধ। যারা জাদু করে আখেরাতে তাদের কোনো অংশ নেই। মহান আল্লাহ কোরআনুল কারিমে তা সুস্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন- তারা ভালোভাবেই জানে যে, যে কেউ জাদু অবলম্বন করে, তার জন্য পরকালে কোনো অংশ নেই। যার বিনিময়ে তারা আত্মবিক্রয় করেছে, তা খুবই মন্দ যদি তারা জানত। (সুরা বাকারা: আয়াত ১০২)

অন্যায়ভাবে হত্যা করা- হত্যা ইসলামে জঘন্য অপরাধ। আর মানুষ হত্যা মানবতা হত্যার শামিল। গুম খুন হত্যা এত মারাত্মক অপরাধ যে, হত্যাকারীর ওপর থেকে আল্লাহ তাআলার রহমতের ছায়া সরে যায়। যাতে মানুষ মানবতা হত্যার মতো মহা অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকে সে জন্য কেসাসের বিধান দেয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

‘স্বাধীন ব্যক্তি হত্যার বদলায় স্বাধীন ব্যক্তিকে হত্যা কর; দাসের বদলায় দাস, নারীর বদলায় নারীকে হত্যা করা। (সুরা বাকারা: আয়াত ১৭৮)

হাদিসে এসেছে, কেয়ামতের দিন মানুষের মাঝে সর্বপ্রথমে যে বিষয়ে ফয়সালা হবে; তাহলো রক্তপাত বা হত্যা। (বুখারি, মুসলিম ও মিশকাত)

সুদ খাওয়া- সুদের আদান-প্রদান ইসলামে মারাত্মক অপরাধ। সুদের সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে মানুষ জাহান্নামি হবে। সুদের কার্যক্রম পরিহার না করাকে ইসলামের সঙ্গে যুদ্ধ করার শামির বলে ঘোষণা করেছেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা। কোরআনে এসেছে-

‘যারা সুদ খায়, তারা কেয়ামতে দাঁড়াবে, যেভাবে দাঁড়াবে ঐ ব্যক্তি; যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছে, ক্রয়-বিক্রয় তো সুদের মতোই! অথচ আল্লাহ তাআলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন আর সুদ হারাম করেছেন। অতপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে (সুদ) বিরত হয়েছে, আগে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোজখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে।’ (সুরা বাকারা: আয়াত ২৭৫)

ইয়াতিমের সম্পদ দখল করা- সমাজের সবচেয়ে অসহায় হলো ইয়াতিম। তাদের সম্পদ অন্যায়ভাবে দখল করা মারাত্মক অন্যায়। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা ইয়াতিমদের প্রতি উত্তম আচরণ ও তাদের সম্পদ হেফাজত করার কথা বলেছেন। এর ব্যতিক্রম হলে ভোগ করতে হবে কঠিন পরিণতি। আল্লাহ তাআলা বলেন-

‘যারা ইয়াতিমদের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে (দখল করে) খায়, তারা নিজেদের পেটে আগুনই ভর্তি করেছে এবং অতিদ্রুত তারা জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (সুরা নিসা: আয়াত ১০)

যুদ্ধের ক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যাওয়া- ইসলামে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যাওয়া বিশ্বাসঘাতকতামূলক কাজ। ইসলামে বিশ্বাসঘাতকতা হারাম বা কবিরাহ গোনাহ। কোরআনুল কারিমে এ কাজের শাস্তি জাহান্নাম হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা যখন কাফেরদের সাথে মুখোমুখি হবে, তখন পশ্চাৎপসরণ (পলায়ন) করবে না। আর যে লোক সেদিন তাদের থেকে পশ্চাৎপসরণ করবে (পালিয় যাবে), অবশ্য যে লড়াইয়ের কৌশল পরিবর্তনকল্পে কিংবা যে নিজ সৈন্যদের কাছে আশ্রয় নিতে আসে, সে ব্যতীত অন্যরা আল্লাহর গজব সঙ্গে নিয়ে প্রত্যাবর্তন করবে। আর তার ঠিকানা হলো জাহান্নাম। বস্তুত সেটা হলো নিকৃষ্ট অবস্থান। (সুরা আনফাল: আয়াত ১৫-১৬)

মুমিনা নারীর প্রতি অপবাদ দেয়া- সতী-সাধ্বী নারীর প্রতি ব্যভিচারের অপবাদ দেয়া ইসলামে হারাম বা কবিরা গোনাহ। দুনিয়াতে অপবাদের অপরাধ প্রমাণিত হলে রয়েছে কঠিন শাস্তির ঘোষণা। আর পরকালে রয়েছে কঠিন শাস্তি। আল্লাহ তাআলা বলেন-

‘যারা সতী-সাধ্বী নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে অতপর স্বপক্ষে চারজন পুরুষ সাক্ষী উপস্থিত করে না, তাদের আশিটি বেত্রাঘাত করবে এবং কখনও (কোনো বিষয়ে) তাদের সাক্ষ্য কবুল করবে না। এরাই নাফারমান। কিন্তু যারা এরপর তওবা করে এবং সংশোধিত হয়, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম মেহেরবান।’ (সুরা নুর: আয়াত ৪-৫)