জাতীয়

রাজধানীর ৬ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার, এক ব্লাড ব্যাংক বন্ধ ঘোষণা


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় ঢাকার ছয়টি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং একটি ব্লাড ব্যাংক বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। মোহাম্মদপুরে মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ারে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানে মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) আকস্মিক পরিদর্শনে সেখানে বিভিন্ন অনিয়ম ধরা পড়ায় তা বন্ধ করে দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

কেন এসব প্রতিষ্ঠানের সনদ বাদিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে নোটিশও দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও প্রাইভেট ক্লিনিক শাখার মেডিকেল অফিসার ডা. মো. মাহমুদউল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ার, মোহাম্মদপুর, ঢাকায় অবস্থিত ছয়টি প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং একটি ব্লাড ব্যাংকসহ মোট সাতটি প্রতিষ্ঠানে গত ২৮ জুলাই আকস্মিক পরিদর্শনে নানা অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়। প্রাপ্ত অনিয়মের ভিত্তিতে মহাপরিচালকের অনুমোদন সাপেক্ষে সাতটি প্রতিষ্ঠানকে সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয় এবং কেন তাদের লাইসেন্স বাতিল হবে না মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়।

প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- প্রাইম অর্থোপেডিক ও জেনারেল হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ঢাকা হেলথকেয়ার হসপিটাল, রিমেডি কেয়ার লিমিটেড, লাইফ কেয়ার জেনারেল হসপিটাল, যমুনা জেনারেল হসপিটাল, রয়াল মাল্টিকেয়ার স্পেশালিটি হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং রাজধানী ব্লাড ব্যাংক অ্যান্ড ট্রান্সফিউশন সেন্টার।

প্রাইম অর্থোপেডিক ও জেনারেল হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো হলো- বিএমডিসি সনদ প্রাপ্ত কোনো চিকিৎসক কর্মরত পাওয়া যায়নি, পর্যাপ্ত সংখ্যক নার্স কর্মরত পাওয়া যায়নি, ল্যাব টেকনোলজিস্ট পাওয়া যায়নি, রোগীদের কাছ থেকে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্য রাখার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

ঢাকা হেলথকেয়ার হসপিটালের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো হলো- পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক ও নার্স কর্মরত পাওয়া যায়নি, প্রয়োজন ছাড়া শুধুমাত্র ব্যবসায়িক স্বার্থে আইসিইউতে রোগী রেখে অনৈতিক প্র্যাকটিসের প্রমাণ, রোগীদের কাছ থেকে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্য রাখার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

রিমেডি কেয়ার লিমিটেডের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ- হালনাগাদ লাইসেন্স ছাড়াই ক্লিনিকটি অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছে, আইসিইউ সর্বস্ব হাসপাতাল বানিয়ে শুধুমাত্র ব্যবসায়িক উদ্দেশে দালালের সহায়তায় হাসপাতালটি পরিচালিত হচ্ছে, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সংক্রমণ রোধে ব্যবস্থা (আইপিসি) খুবই অসন্তোষজনক।

লাইফ কেয়ার জেনারেল হসপিটালের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ- পরিদর্শনকালে হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক ও নার্স কর্মরত পাওয়া যায়নি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সংক্রমণ রোধ ব্যবস্থা (আইপিসি) খুবই অসন্তোষজনক।

যমুনা জেনারেল হসপিটালের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো হলো- একই আইসিইউতে একইসঙ্গে কোভিড এবং নন-কোভিড রোগীর চিকিৎসা করা হচ্ছে, সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে অক্সিজেন বিল করা হচ্ছে, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সংক্রমণ রোধে ব্যবস্থা (আইপিসি) খুবই অসন্তোষজনক।

রয়াল মাল্টিকেয়ার স্পেশালটি হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ- পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক ও নার্স কর্মরত পাওয়া যায়নি, বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্য রাখা হচ্ছে, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সংক্রমণ রোধে ব্যবস্থা (আইপিসি) খুবই অসন্তোষজনক।

রাজধানী ব্লাড ব্যাংক অ্যান্ড ট্রান্সফিউশন সেন্টারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ- বিএমডিসি সনদ প্রাপ্ত কোনো এমবিবিএস চিকিৎসক কর্মরত পাওয়া যায়নি, নার্স, ব্লাড কালেকশন টেকনোলজিস্ট এবং ল্যাব এটেন্ডেন্ট পাওয়া যায়নি।

এর আগে গত ২ আগস্ট নানা অনিয়মের অভিযোগে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান প্রাভা হেলথের কার্যক্রম সাময়িক বন্ধের নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তাদের বিরুদ্ধে সেবা কার্যক্রমে অতিরিক্ত ফি আদায় ও সেবার নিম্নমানসহ বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম খুঁজে পাওয়ার কথা জানানো হয়।

এরপর গত ৩ আগস্ট অনুমোদন ছাড়াই করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া এবং চিকিৎসা দিতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের অনিয়মসহ সরকারকে তথ্য না দেওয়ার অভিযোগে রাজধানীর উত্তরার তিনটি হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। হাসপাতাল তিনটি হলো— আল আশরাফ জেনারেল হাসপাতাল, রেডিকেল হাসপাতাল লিমিটেডে ও শিনশিন জাপান হাসপাতাল। এর মধ্যে রেডিকেল হাসপাতাল লিমিটেডের সব চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অন্য দুইটি হাসপাতালের কোভিড-১৯ সংক্রমিতদের চিকিৎসা বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তিন হাসপাতালের লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না— সে বিষয়েও কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে কর্তৃপক্ষকে।