চট্টগ্রাম

সংক্রমণের তীব্রতা এখন সীতাকুণ্ড-মিরসরাইয়ে


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

চট্টগ্রামে করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি হচ্ছে। প্রতিদিনই বাড়ছে সংক্রমণের সংখ্যা। রোগী শনাক্ত ও মৃত্যু দুটোই এখন ঊর্ধ্বমুখী। সংক্রমণের বর্ধিত হার নগর ছাড়িয়ে গ্রামাঞ্চলে পৌঁছেছে। এরমধ্যে ফটিকছড়ি উপজেলাকে ইতিমধ্যেই লকডাউনের আওতায়ও আনা হয়েছে। এবার নতুন করে চিন্তা বাড়াচ্ছে আরও দুই উপজেলা সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই। বিগত এক সপ্তাহে এ দুই উপজেলায় সংক্রমণের হারও তুলনামূলক বৃদ্ধি পেয়েছে।
সংক্রমণের তীব্রতা নিয়ে উদ্বিগ্ন খোদ স্বাস্থ্য বিভাগও। যদিও আজ থেকে শুরু হওয়া লকডাউনে কিছুটা হলেও সংক্রমণের তীব্রতা কমে আসবে, এমন আশাবাদ স্বাস্থ্য বিভাগের। স্বাস্থ্যবিধি এবং সরকারি দেয়া বিধি নিষেধ না মানলে চলমান করোনা পরিস্থিতি সামনে ভয়াবহ পর্যায়ে চলে যেতে পারে এমন আশঙ্কাও করছেন স্বাস্থ্য বিভাগসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। 
তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের উপজেলা পর্যায়ে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে সীতাকু- উপজেলা। দ্বিতীয় পর্যায়ে পার্শ্বর্র্ত মিরসরাই উপজেলা। ১৪ উপজেলায় রোগী শনাক্তের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৫৮ শতাংশই রোগী পাওয়া যায় সীতাকুণ্ডে ও মিরসরাইতে। শুধু গেল একদিনেই নয়, গেল এক সপ্তাহের চিত্রে দেখা যায়- দুই উপজেলাতে রোগী পাওয়া যায় ২২৫ জন। এরমধ্যে সীতাকুণ্ডে ১২৭ জন আর মিরসরাইয়ে ৯৮ জন। যা ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী ছাড়া অন্য উপজেলাগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যাও।
স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গেল এক সপ্তাহের চিত্রে দক্ষিণ চট্টগ্রামের তুলনায় উত্তর চট্টগ্রামেই সংক্রমণ হার বেশি। এরমধ্যে অতীতের চার উপজেলার সঙ্গে এবার যুক্ত হয়েছে নতুন দুই উপজেলা। যা বর্তমানে মাথাব্যথার কারণ হিসেবে দাঁড়িয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগের।
ইতোমধ্যে দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আজ সোমবার থেকে কঠোর বিধি-নিষেধ দিয়ে লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে। যদিও গেল সপ্তাহ থেকেই চট্টগ্রামের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয় প্রশাসন বিধি-নিষেধ আরোপ করেন। একইসাথে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ফটিকছড়ি উপজেলাকে লকডাউনের আওতায়ও আনা হয়। লকডাউনের আওতায় আসা ফটিকছড়ি গেল দুইদিনের পরিস্থিতি পূর্বের চেয়ে কিছুটা স্বস্তিও দেখছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগ। তবে নতুন করে উদ্বেগ হয়ে দাঁড়িয়েছে নতুন দুই উপজেলাকে নিয়ে।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, গেল ঈদের পর থেকেই উপজেলা পর্যায়ে সংক্রমণ বেড়েছে। এতদিন চারটি উপজেলাতেই করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি পাওয়া গেছে। এরমধ্যে গত কিছুদিন ধরে নতুন আরও দুটি উপজেলায় পজিটিভ রোগীর সংখ্যা বেশি শনাক্ত হচ্ছে। অর্থাৎ উপজেলার মধ্যে এ ছয়টি উপজেলাতেই এখন শনাক্তের সংখ্যাটা একটু বেশি। মূলত এসব উপজেলায় মানুষের অবাধ চলাফেরা বেশি রয়েছে। এখন থেকে যদি সচেতন না হয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে অবস্থিত হওয়ায় অবাধেই মানুষের চলাফেরা বেশি সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই উপজেলাতে। পাশাপাশি যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ হওয়াতেও ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, রাঙ্গুনিয়া ও রাউজানে মানুষের অবাধ যাতায়াত রয়েছে। এছাড়া সামাজিক দূরত্ব কিংবা স্বাস্থ্যবিধি না মানাতেও দ্রুতই সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে আলোচ্য এসব এলাকাজুড়ে।
তাই সংক্রমণ রোধে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে প্রশাসনকে আরও বেশি কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া বলেন, স্বাস্থ্যবিধি এবং সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধ না মানলে চলমান করোনা পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক পর্যায়ে চলে যেতে পারে। তাই সকলকেই মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করতে হবে।