শিক্ষা

১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস শুরু: শিক্ষামন্ত্রী


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়সহ সব পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হবে।

তিনি বলেন, দেশে করোনার সংক্রমণ দ্রুত কমে যাচ্ছে। জুলাই মাসের তুলনায় সংক্রমণ ৭০ শতাংশ কমে গেছে। শ্রেণিকক্ষে পাঠদানকালে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ সবাইকে মাস্ক পরিধান করতে হবে।

রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে বিকেল সোয়া ৩টায় উচ্চপর্যায়ের বৈঠক শুরু হয়। সভাশেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।

ডা. দীপু মনি বলেন, শুরুর দিকে ২০২১ সালে যারা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রতিদিন স্কুলে আসতে হবে। এছাড়া পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ক্লাসে আসবে।

তিনি বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর শুরুর দিন চার-পাঁচ ঘণ্টা ক্লাস হবে। পর্যায়ক্রমে ক্লাসের সংখ্যা বাড়বে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে চেকলিস্ট পূরণ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। র‌্যান্ডম স্যাম্পলিং করে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকলে বন্ধ করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হতে পারে।

স্কুলে প্রবেশের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সারিবদ্ধভাবে প্রবেশ করাতে হবে। স্কুলে আপাতত কোনো অ্যাসেম্বলি হবে না। তবে ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি বা খেলাধুলা চলবে, যাতে শারীরিক ও মানসিকভাবে ভালো অবস্থানে থাকতে পারে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সহায়তায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস চলাকালে কী কী সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে সে সম্পর্কে প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। অভিভাবকরা যখন তাদের সন্তানদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাবেন তখন তার পরিবারের কেউ কিংবা শিক্ষার্থীর করোনার উপসর্গ নেই তা নিশ্চিত করবেন। তার সন্তানের মাধ্যমে যেন অন্য কোনো শিক্ষার্থী সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা না থাকে সে ব্যাপারে সচেতন থাকবেন।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা যখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসবে তখন করোনা সম্পর্কিত যত ধরনের গাইডলাইন, স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) যা যা হালনাগাদ করা হয়েছে তার ভিত্তিতে শিক্ষক ও অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রতিদিনের শারীরিক তাপমাত্রা মাপা, কারও কোনো উপসর্গ আছে কি-না তা পরীক্ষা করা এবং শ্রেণিকক্ষে সবার মুখে মাস্ক পরা আছে কি-না তা নিয়মিত পরীক্ষা করবেন। মাস্ক ছাড়া কাউকে ক্লাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। এক্ষেত্রে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের মুখে মাস্ক পরিয়ে ক্লাসে পাঠাবেন।

সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সভাপতিত্বেবৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রী জাকির হোসেন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলমসহ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চাঁদপুর সদর উপজেলার মহামায়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন উদ্বোধন শেষে ডা. দীপু মনি বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সারাদেশে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে।

গত ২ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা দেশের সব স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। এরইমধ্যে আমি স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। সেই ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষকদের টিকাও দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যারা কর্মরত আছেন তাদের পরিবারের সদস্যদেরও টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, করোনা মহামারির কারণে গত বছরের মার্চ থেকে বন্ধ থাকা স্কুলগুলো সরকারের সর্বোচ্চ স্তরের নির্দেশনা পেয়ে পুনরায় চালু করা হবে। আমরা হঠাৎ করেই স্কুল পুনরায় খুলে দিতে পারি না। আমরা সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছি। যদি প্রধানমন্ত্রী আজ আমাদের নির্দেশ দেন আমরা আগামীকাল থেকে স্কুল পুনরায় খোলার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।

জাকির বলেন, গত দেড় বছর ধরে শিক্ষার্থীরা ক্লাসের বাইরে থাকায় বিশেষজ্ঞরা স্কুল খোলার পক্ষে।

এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় চালু করার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে শিক্ষা বিভাগ একই দিন কিছু নির্দেশিকা জারি করেছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মঙ্গলবার থেকে তাদের কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের এখতিয়ারভুক্ত বিদ্যালয় পরিদর্শন করতে বলেছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে প্রতিষ্ঠানগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (ডিএসএইচই) আঞ্চলিক পরিচালকদের স্কুল-কলেজ পুনরায় চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে বলেছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ শিক্ষক ও কর্মচারীদের টিকা দেয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সূত্র দাবি করেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী করোনা টিকা নিয়েছে।

করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এরমধ্যে কয়েকবার চেষ্টা করেও এই মহামারির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আর খোলা সম্ভব হয়নি। এ পর্যন্ত গত ১৭ মাসে দফায় দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি বাড়ানো হয়।