জাতীয়

২৪ হাজার টাকায় নবজাতক বিক্রি, ১০ দিনে চারবার হাতবদল


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

রহিদুল ইসলামের বাড়ি নওগাঁ জেলা সদরের হাঁসাইগাড়ি এলাকায়। তার নির্দিষ্ট কোনো পেশা নেই। তবে ‘নেশা আছে’ বিয়ে করার। নানা অনিয়মের পর অবশেষে তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন।  

রহিদুলের আগের স্ত্রীর একাধিক সন্তান রয়েছে। দুই স্ত্রীর পর তিনি বিয়ে করেন জান্নাতুন নামের এক কিশোরীকে। জান্নাতুনের এখন বয়স ১৭ বছর। পরিবার নিয়ে রাজশাহী নগরীর সিলিন্দা এলাকায় ভাড়া থাকেন তিনি।

গত ১০ নভেম্বর নগরীর লক্ষ্মীপুরের কেয়ার নার্সিং হোমে ফুটফুটে মেয়ের জন্ম দেয় জান্নাতুন। কিন্তু সন্তানের মুখ দেখতে দেওয়া হয়নি তাকে। নবজাতক হাতে পেয়েই এক নার্সের কাছে বিক্রি দেন বাবা। পরে নার্সের কাছ থেকে হাত বদল হয়েছে আরও দুবার। অবশেষে ধরা পড়েছেন রহিদুল। এ ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

 

নবজাতকে মা জান্নাতুন খাতুন জানান, নার্সিং হোমে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে শিশুটির জন্ম হয়। জন্মের পর সন্তানের কথা জিজ্ঞেস করলে রহিদুল বলত, বাচ্চা অসুস্থ তাই হাসপাতালে ভর্তি আছে। এভাবে বেশ কয়েকদিন কেটে যায়। গত তিনদিন আগে রহিদুল তাকে বলেন, শিশু মারা গেছে। এ নিয়ে সন্দেহ হয় তার। নিজেদের মধ্যে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে স্থানীয়রা রহিদুলকে চাপ দিলে তিনি সন্তান বিক্রির কথা স্বীকার করেন। পরে রাজপাড়া থানা পুলিশ রহিদুলকে আটক করা হয়।

পুলিশ জানায়, শিশুটি প্রথমে নার্সের কাছ থেকে নগরীর দাসপুকুর এলাকার তরিকুল আহসান নামের এক ব্যক্তি কিনে নেন। এরপর তিনি নগরীর দাসপুকুর এলাকার গোলাম শাহিনুরের কাছে বিক্রি করেন। শিশুটির বৈধ কাগজপত্র না থাকায় শাহিনুর শিশুকে ফিরিয়ে দেন। পরে তরিকুল গোদাগাড়ীর কাঁকনহাটে নবজাতকটিকে গোদাগাড়ীর কাকনহাট এলাকার বিউটি বেগমের কাছে বিক্রি করেন। শিশুকে নিয়ে তানোরে চলে যান ওই নারী। পুলিশ প্রথমে কাঁকনহাটে ও পরে তানোরে অভিযান চালিয়ে শিশুকে উদ্ধার করে। এ সময় বিউটি বেগমকে আটক করা হয়।

পুলিশ হেফাজতে নবজাতকের বাবা রহিদুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালের বিল হয়েছিল ১৪ হাজার টাকা। কিন্তু বিল পরিশোধের মতো টাকা ছিল না তার কাছে। তাই নার্সের মাধ্যমে সন্তানকে বিক্রি করেন। তাকে ২৪ হাজার টাকা দেওয়া হয়। নার্স ৩০ হাজার টাকায় শিশুটিকে বিক্রি করে।

তবে কেয়ার নার্সিং হোমের পরিচালক গোলাম আশরাফ সরকারের দাবি, নবজাতক বেচাকেনার বিষয়টি তার জানা নেই। পরে ঘটনাটি শুনেছেন তিনি।

রাজপাড়া থানার উপপরিদর্শক কাজল কুমার নন্দী আমাদের সময়কে বলেন, রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশকে ফোন দিয়ে স্বামী রহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে নবজাতককে বিক্রির অভিযোগ করেন স্ত্রী জান্নাতুন খাতুন। রহিদুলকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে নবজাতক বিক্রির তথ্য বেরিয়ে আসে। এরপর গ্রেপ্তার করা হয় তরিকুল ইসলামকে। তাদের দুজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় বিউটি বেগমকে। তার বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয় নবজাতক।

তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে থানায় মামলা করেছেন স্ত্রী জান্নাতুন। স্বামী রহিদুল, শাহিনুর, তরিকুল ও বিউটিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নার্সিং হোমের নার্সকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

1Shares

facebook sharing button
twitter sharing button