চট্টগ্রাম

করোনা রোধে সকল সংস্থাকে এক প্লাটফর্মে আসার আহবান চসিক মেয়রের


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে  সরকারি বেসরকারি সকল সংস্থাকে  এক প্লাটফর্মে আসতে হবে উল্লেখ করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন,  বর্তমানে  চট্টগ্রামে আইসিইউ ও অক্সিজেনের সংকট নেই । তবে করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ পরিস্থিতি হলে তার জন্য আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে।

আজ ৩০ জুন বুধবার  নগরীর টাইগারপাসস্থ  চসিক কার্যালয়ে নগরীর সকল এলাকায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ মোকাবেলা ও ভ্যাকসিন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে গঠিত কমিটির আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

চসিক মেয়র আরও বলেন, করোনা ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ মোকাবেলায়  সরকারের থেকে জারিকৃত বিধি বিধান পালনে চসিকের সকল কাউন্সিলরকে মাঠে থাকতে হবে যাতে মহানগরের কোন ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়।

যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় জন্য স্বাস্থ্য বিভাগকে সহযোগিতা করা হবে জানিয়ে রেজাউল করিম বলেন, এই কঠোর লকডাউনের সময় সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হলে তাদেরকে জরিমানা ও আইনের আওতায় না এনে বুঝিয়ে ঘরে ফিরিয়ে দিতে হবে। মানুষ এখন করোনাকে আগের মতো ভয় পাচ্ছে , গ্রামের মানুষও এখন মাস্ক পরিধান করছে। ২০১৯ সালের  শেষের দিকে হাসপাতালে রোগী ফেলে ডাক্তার পালিয়ে যেত, অসুস্থ বাবা মাকে ফেলে ছেলে মেয়ে পালিয়ে যেত এখন কিন্তু সেরকম পরিস্থিতি নেই।

করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে অক্সিজেন সরবরাহ করবে এস আলম গ্রুপ ও মোস্তাফা হাকিম গ্রুপ উল্লেখ করে সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, করোনা মোকাবিলায় সরকারি হাসপাতালগুলো  প্রস্তুত আছে। কিন্তু মানুষ সচেতন না হলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কষ্টকর হবে। চট্টগ্রামে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে মোট ১০৭টি আইসিইউ বেড আছে। এগুলোর অর্ধেকে রোগী ভর্তি আছে, বাকিগুলো খালি। সরকারি হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা আছে।

আগামী জুলাই মাসে চট্টগ্রামে ভ্যাকসিন কার্যক্রম পুনরায় চালু হবে জানিয়ে তিনি বলেন,  সংক্রমণ বাড়লেও অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না, মাস্ক ছাড়াই ঘর থেকে বের হচ্ছেন । শিশু থেকে বয়স্ক যে কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে তাকে দ্রুত চিকিৎসার আওতায় আনতে হবে। দেরি করলেই বিপদ।

এবার গ্রামাঞ্চলে আক্রান্তের হার তুলনামূলক বেশি দেখা যাচ্ছে বলে সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, লকডাউন সফল করার জন্য প্রথম ভূমিকা রাখতে হবে সাধারণ জনগণকে। তারা যেন অকারণে ঘর থেকে বের না হয়। জরুরি কাজে বের হলেও তা যেন স্বল্প সময়ের জন্য হয়। দ্বিতীয়ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত মনিটরিং এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জরুরি পরিষেবাসমূহ লকডাউনের আওতায় নেই।

স্বাস্থ্য দপ্তর, চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক, ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন, করোনা কমিটি কার্যকরী পদক্ষেপ নিলে করোনা নিয়ন্ত্রণে আসবে। কিন্তু কোন মুহুর্তে স্বাস্থ্য বিধিকে অমান্য করা যাবে না । লকডাউনে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আনতে মানুষকে সচেতন করতে হবে।

তিনি বলেন, সলিড লকডাউনের মাধ্যমে ভারত সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এনেছে। আমাদেরও সে পথে হাঁটতে হবে। অকারণে বের হলেই বড় অংকের  জরিমানা এবং প্রয়োজনে জেলে পাঠাতে হবে।

ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন, প্রথমেই মানুষকে বুঝতে হবে লকডাউন কি। সাধারণ মানুষ তা না বুঝলে জোর করে লকডাউন সফল হবে না। লকডাউন কি? এই ধারণা সৃষ্টি করতে হলে এই কাজের সাথে জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করতে হবে। এখানে জনপ্রতিনিধি বলতে ওয়ার্ড কাউন্সিলর, মহল্লার সর্দার এদেরকেই সম্পৃক্ত করতে হবে।

এ অনুষ্ঠান সভাপতিত্ব করেন চসিক জেনারেল হাসপাতালে প্রধান চিকিৎসক ডা.সেলিম আক্তার। এ আলোচনা সভায় চট্টগ্রামে সার্বিক চিত্র তুলে ধরে স্ল্যাইট ভিজুয়াল করেন  ডা. মো. সরওয়ার আলম।

ডা মো. সরওয়ার আলম বলেন,‘সেবার সংক্রমণ মাইল্ড-মোডারেট ছিল, যার কারণে তারা হাসপাতাল পর্যন্ত আসতো না। কিন্তু এবারে যেহেতু সবই সিভিয়ার কেস, জটিলতা বেড়ে গেলেতো আর বাসায় রাখার উপায় নেই। ফলশ্রুতিতে নারীরা হাসপাতালে বেশি ভর্তি হচ্ছে। যেহেতু সবমিলিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি, সেখানে নারী মৃত্যু বেশি হচ্ছে।এছাড়া  শিশু ও তরুণ সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

এ অনুষ্ঠানে নগরীর সরকারি সকল দপ্তরের প্রধান ও প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।