জাতীয়

গরম পানির ভাপ ও নাকে সরিষার তেল নিতে বললেন প্রধানমন্ত্রী


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাফেরার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেক্ষেত্রে জনগণের সহযোগিতা দরকার। সবাইকে অনুরোধ করব মাস্কটা পরে রাখার জন্য। কারণ এটা নাক থেকে সাইনাসে আক্রমণ করে। সবাইকে মাস্ক পরে থাকতে হবে।

এছাড়া কিছু পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী সেগুলো হচ্ছে- নাকে গরম পানির ভাপ নেওয়া। যখনই কেউ একটু বেশি মানুষের সাথে মিশবে বা দোকানে যাবে, মার্কেটে যাবেন বা মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন ঘরে ফিরে একটু গরম পানি ভাপ নিবেন। এগুলো করলে ভাইরাস দুর্বল হয়ে যাবে। আর একটি কাজ অবশ্য আমি নিজে করি। সেটা হচ্ছে নাকে একটু সর্ষের তেল দেওয়া। আমি জানি এটা গ্রাম্য একটা ব্যাপার মনে হবে। আমি যখন ছোট বেলায় পুকুরে গোসল করতে যেতাম সব সময় আমার দাদি নাকে কানে আর নাভিতে সর্ষের তেল দিয়ে দিত। এটা করবেন।

বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যুতে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনার সময় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সংসদ অধিবেশনে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা করোনাভাইরাস মোটামুটি নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছিলাম। কিন্তু আবার সারাবিশ্বব্যাপী করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। হঠাৎ করে খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশেও ২৯ মার্চ ৩০ মার্চ এবং ৩১ মার্চ এমন দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে যা চিন্তাও করা যায় না।

তিনি বলেন, আমরা ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করেছি বলে মানুষের মাঝে একটা বিশ্বাস জেগে গেছে যার জন্য সবার মাঝে একটু ঢিলেঢাল ভাব ছিল যে- কিছুই যেন হবে না। আমি কিন্তু বার বার বলছিলাম ভ্যাকসিন নিলেও সাবধানে থাকতে হবে, স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা হিসাব করে দেখেছি যতগুলো বড় বিয়ের অনুষ্ঠান যারাই বিয়ে বাড়িতে গেছে ফিরে এসে তাদের অনেকেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। যারা বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে গেছেন যেমন কক্সবাজারসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে তাদের কিন্ত বেশি হচ্ছে। এই দাওয়াত-পানি খাওয়া এবং দোকানপাটে যাওয়া ঘুরাঘুরি এগুলো যেন একটু অতিরিক্ত হয়ে গিয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন বলেন, এজন্য সবাইকে বলব ঠিক প্রথমে যেভাবে করোনাভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করেছিলাম আবারও সেইভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ইতোমধ্যে কিছু নির্দেশনা আমরা দিয়েছি। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি নিয়ন্ত্রণে আনতে; সেক্ষেত্রে জনগণের সহযোগিতা দরকার। আমরা কতগুলো মানুষকে হারালাম। সবাই যদি একটু সচেতন থাকতেন তাহলে হয়তো হারাতে হত না।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের পর থেকে যখনই বাইরে আসি নাকে একটু সর্ষের তেল দিয়ে রাখি। আর গরম পানির ভাপ নেওয়া খুব কাজে লাগে। মাস্ক অবশ্যই পরে থাকতে হবে। মাস্ক যখনই পরবেন খুলার পর সেটা সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে একটু শুকাতে দেবেন আর একটা পরবেন আমি সব সময় সেটাই করি। কাপড়ের মাস্কটা ভাল হয়। তাছাড়া একটু কম লোক বা ঘরোয়াভাবে বিয়ের আয়োজন করার চেষ্টা করবেন। বাহিরের লোকের সাথে কম মেশা, গেলেও খুব অল্প সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করে ঘরে ফেরবেন। অর্থাৎ যেখানে জনসমাগমটা না হয় সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখার অনুরোধ করছি।

আলোচনায় অংশ নেন সরকারি দলের সংসদ সদস্য ফারুক খান, নুরুল ইসলাম নাহিদ, পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, আবদুস শহীদ, নুরুল ইসলাম, বিএনপির হারুনুর রশীদ, জাতীয় পার্টির মসিউর রহমান রাঙা প্রমুখ। আলোচনা শেষে সর্বসম্মতভাবে শোক প্রস্তাব সংসদ এ গৃহীত হয়।

মহামারির মধ্যেও সংবিধানের নিয়ম রক্ষায় সকাল ১১টায় বসে চলতি সংসদের দ্বাদশ অধিবেশন। সংসদ সদস্যরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে অধিবেশনে যোগ দেন। বৈঠকের শুরুতে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী চলতি অধিবেশনের সভাপতিমণ্ডলী মনোনয়ন করেন।

সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা হলেন- আব্দুল কুদ্দুস, মৃণাল কান্তি দাশ, নজরুল ইসলাম, মুজিবুল হক ও শাহাদারা মান্নান। স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের মধ্যে অগ্রবর্তীজন অধিবেশনে সভাপতিত্ব করবেন।

সভাপতিমণ্ডলীর মনোনয়নের পর কুয়েতের আদালতে নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত হওয়ায় লক্ষ্মীপুর-২ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম পাপুলের সংসদ সদস্য পদ বাতিল হওয়ার বিষয়টি জাতীয় সংসদকে অবহিত করেন স্পিকার।