প্রধান পাতা

চাঞ্চল্যকর চুমকি হত্যা মামলায় স্বামী ও শাশুড়ী অভিযুক্ত


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

পটিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দীর্ঘ দেড় ঘন্টা শুনানি শেষে চাঞ্চল্যকর চুমকি হত্যা মামলায় ১০ জুলাই সোমবার স্বামী খোরশেদ আলম জুয়েল ও শ্বাশুড়ী হোসনেরা বেগম কে  ৩০২ ধারায় অভিযুক্ত করে মামলা গ্রহন করেছেন পটিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট তররাহুম আহমদের আদালত।

ইতোপূর্বে বিজ্ঞ বিচারক বিশ্বেশ্বর সিংহের নির্দেশে কুসুমপুরা ইউনিয়নের চাঞ্চল্যকর জুবায়ের  মোস্তফা চুমকি হত্যা মামলাটি  ৪র্থ দফা তদন্ত শেষে প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন ২ নম্বর আসামী হোসনেরা বেগমের সাথে এয়াকুবের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় আসামী এয়াকুব প্রায় সময জুয়েলের বাসায় যাতায়ত করতো।বাদীর মেয়ে ভিকটিম চুমকি ও ননদ জেরিন ২ নং আসামী এয়াকুব কে নির্মানাধীন ভবনের ছাদে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় আড্ডা দিতে দেখেছে বলে তদন্তে বেরিয়ে আসে। বিষয়টি ভিকটিম মোবাইল ফোনে বিদেশে শ্বশুড়কে জানালে বিরোধের সৃষ্টি হয়।উক্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে ভিকটিমকে বিগত ১৪/১১/১৮ ইং তারিখে দুপুর ১২ টা হতে ১ ঘটিকা সময়ের মধ্যে সাধারণ ও গুরুতর আঘাত করে প্রাণে হত্যা করে। এছাড়া মায়ের কৃতকর্ম ডাকা দিতে পুত্র জুয়েল তার স্ত্রী জোবায়ের মোস্তফা চুমকি কে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে এ হত্যাকান্ডকে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে বলে আদালতে
দাখিলি প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে।


এতে বাদী গোলাম মোস্তফা নারাজি প্রদান করিলে বিজ্ঞ আদালত দুই দফা শুনানি শেষে  স্বাক্ষ্য গ্রহন সহ সার্বিক দিক বিবেচনায় নিয়ে  মা ও ছেলের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় মামালটি আমলে নিয়ে চট্রগ্রাম জেলা জজ আদালতে প্রেরনের নির্দেশ দিয়েছেন বলে সূত্রে প্রকাশ। এতে সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনা বিজ্ঞ পিপি বদিউল আলম, এডভোকেট ফোরকান উদ্দিন, জসিম উদ্দিন,  সুমন শীল, আশীষ শীল, আজগর আলী, ও মাইনুল ইসলাম সুমন বিবাদী পক্ষে ছিলেন এডভোকেট নুর মিয়া, ফখরুদ্দিন কায়সার।


জানা যায়, গত ১৪ নভেম্বর ১৮ইং পটিয়া উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের বিনিনিহারা গ্রামে বোয়ালখালী উপজেলার গোলাম মোস্তফা মেম্বারের একমাত্র কন্যা জোবায়ের  মোস্তফা চুমকি (২১) কে হত্যা করে গলায় ফাঁস দিয়ে লাগিয়ে লাশ ফ্যানে ঝুলিয়ে হত্যার পর আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে তার পিতা থানায় অভিযোগ করেন। এতে ঘটনাটি হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড না হওয়ায় তিনি পটিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৮ নভেম্বর ১৮ইং একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালতে বিষয়টির শুনানী শেষে ১ কার্যদিবসের মধ্যে মামলাটি গ্রহণ করে আদালতকে অবহিত করার জন্য ওসি পটিয়াকে নির্দেশ দেন বিজ্ঞ বিচারক। আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক ১৮ নভেম্বরই এ মামলাটি পটিয়া থানায় হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়। পরে পটিয়া থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা রেজাউল করিম মজুমদার এ মামলার ফাইনাল রিপোর্ট আদালতে দাখিল করলে এতে না- রাজী দেন বাদী গোলাম মোস্তফা। উভয় পক্ষের আইনজীবীদের শুনানী শেষে ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ইংরেজি বিজ্ঞ আদালত তা অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডি’তে প্রেরণের নির্দেশ দেন বলে পটিয়া আদালতের পিপি বদিউল আলম জানান। হত্যাকাণ্ডের সাত মাস পর ২১ জুন ২০১৯ ইংরেজী আদালতের নির্দেশে পটিয়ার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাব্বির রহমান সানির উপস্থিতিতে ময়না তদন্তের জন্য কুসুমপুরা ইউনিয়নের বিনিনিহারা গ্রামের কবর থেকে লাশটি উত্তোলন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নুরুল হাকিম। চুমকির শ্বশুর বাড়ির কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়। দীর্ঘ ১ বছর ৬ মাস পর ১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ইংরেজি তারিখে আদালতে সিআইডি স্বামীকে অভিযুক্ত করে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করে। গত ২১ অক্টোবর ২০২০ইং সিআইডির তদন্তের রিরুদ্ধে ২য় দফায় নারাজি দাখিল করেন মামলার বাদী গোলাম মোস্তফা মেম্বার। শুনানী শেষে উক্ত মামলা তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন বিজ্ঞ আদালত। পিবিআই এর তদন্তকারী কর্মকর্তা কাজী এনায়েত করিম দাখিলকৃত প্রতিবেদনে স্বামী খোরশেদ আলম জুয়েল এবং শাশুড়ি হোসনে বেগমকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে ও মামলার বাদী গোলাম মোস্তফা ২০ শে অক্টোবর ২১ইং নারাজী দিলে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি ৪র্থ বারের মত চুমকিকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে কিনা সে বিষয়ে  অধিকতর তদন্তের জন্য পটিয়া সার্কেলের তৎকালিন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিক রহমানকে নির্দেশ দেন। তিনি তদন্ত শেষে ২৭/০৪/২৩ ইং আদালতে  তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। গত সোমবার এ প্রতিবেদনের শুনানী শেষে
মামলাটি অবশেষে হত্যা মামলা হিসেবে গৃহিত  হয়।বিজ্ঞ আদালত তা বিচারের জন্য চট্রগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে  প্রেরনের নির্দেশ দিয়েছেন বলে পিপি বদিউল আলম নিশ্চিত করেন।