জাতীয়

চীনা টিকায় ‘ওমরাহ’ আটকে যাওয়ার শঙ্কা


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

জটিলতা পিছু ছাড়ছে না ওমরাহ যাত্রীদের। এবার চীনের তৈরি সিনোফার্ম’র টিকা নিয়ে নতুন করে সমস্যা দেখা দিয়েছে। সৌদি সরকারের অনুমোদন না থাকায় এ টিকা গ্রহণকারীদের এবার ওমরা থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পহেলা মহরম (১১ আগস্ট) থেকে সৌদি সরকার বাংলাদেশিদের জন্য ওমরাহে যাওয়ার অনুমোদন দিলেও এখন নতুন বাধা হয়ে দাড়িয়েছে চীনা ভ্যাকসিন। কারণ ওমরাহে যাওয়ার ব্যাপারে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ বিষয়ক অফিশিয়াল ওয়েব সাইট হারামাইন শারিফাইনে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ওমরাহ পালনে ইচ্ছুক সবাইকে আগে থেকেই বাধ্যতামূলকভাবে করোনাভাইরাসের দুই ডোজ টিকা নিতে হবে। সেই টিকা হতে হবে ফাইজার, মডার্না, অ্যাস্ট্রাজেনেকা অথবা জনসন এন্ড জনসনের। এসব টিকার দুটি ডোজ গ্রহণ করা ছাড়া সৌদি আরবে প্রবেশ করা যাবে না। তবে কেউ যদি চীনের তৈরি সিনোফার্মের টিকার দুটি ডোজ নিয়ে থাকেন কিংবা উল্লিখিত টিকা ছাড়া অন্য কোনো টিকা নিয়ে থাকেন, তবে তাদের ফাইজার, মডার্না, অ্যাস্ট্রাজেনেকা অথবা জনসন এন্ড জনসনের টিকার বাড়তি বুস্টার ডোজ গ্রহণ করতে হবে।
এদিকে দেশে এখন সর্বত্রই চীনের তৈরি সিনোফার্মের টিকাদান কার্যক্রম চলছে। এছাড়া কোন প্রকার ফাইজার, মডার্না, অ্যাস্ট্রাজেনেকা অথবা জনসন এন্ড জনসনের বাড়তি বুস্টার ডোজ দেওয়া হচ্ছে না। ফলে ওমরাহে গমনেচ্ছুরা চীনা টিকা নিলে ওমরাহে যেতে পারবেন না।
ওমরাহ পালন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হজ এজেন্সিস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, ‘সরকার ব্যাপক হারে সিনোফার্ম টিকা আমদানি করছে এবং দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু অন্য টিকার বুস্টার ডোজ ছাড়া সৌদি ওমরাহর অনুমোদন দিচ্ছে না। শুধু ওমরাহ নয়, আগামী বছর হজের ক্ষেত্রেও এটি বাধা হয়ে দাঁড়াবে। ফাইজার ও মডার্নার টিকা বেশিরভাগ পেয়েছেন বিদেশগামী কর্মীরা। ফলে ওমরাহর যাত্রী পাওয়া গেলেও টিকার জন্য অনেকেই আটকে যাবেন।
তিনি আরো বলেন, বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। এখনও সমাধান মেলেনি। এ জটিলতার নিরসন না হলে আগ্রহীদের ওমরাহ পালন সম্ভব হবে না। আমরা বাংলাদেশ ও সৌদি সরকারের সঙ্গে আলাপ করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হজ এজেন্সি এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর সৌদি সরকার ওমরা চালু করলেও নতুন করে সমস্যা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশে এখন মানুষ সিনোফার্ম’র টিকা দিচ্ছে। কিন্তু সৌদি সরকার ওমরা যাত্রীদের জন্য এ টিকা অনুমোদন দেয়নি। এ অবস্থায় যারা সিনোফার্মর টিকা নিয়ে ওমরা যেতে চাচ্ছেন তারা বাধার শিকার হচ্ছেন। বিষয়টি সমাধানে হজ এজেন্সি এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) তৎপর হয়ে ওঠে। এ নিয়ে গত রবিবার একটি ভার্চুয়ালি সভা হয়। ওই সভায় বাংলাদেশের ধর্মমন্ত্রী, বিমান প্রতিমন্ত্রী, উভয় মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশস্থ সৌদি রাষ্ট্রদূত, সৌদি আরবস্থ বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত, হাব নেতৃবৃন্দ ছাড়াও সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। সভায় সৌদি রাষ্ট্রদূত ওমরা যাত্রীদের জন্য সিনোফার্ম’র টিকা অনুমোদনের জন্য সরকারের কাছে চেষ্টা চালানোর আশ^াস দেন। আশা করি এ ব্যাপারে সহসা একটি সমাধান পাওয়া যাবে’।
মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘প্রতি বছর বৃহত্তর চট্টগ্রাম থেকে প্রায় ৫০ হাজার ওমরা যাত্রী হয়। হজ মওসুমে হয় প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার। কিন্তু করোনার কারণে গত দুই মওসুম হজ ও দেড় বছর ধরে ওমরা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা’।
এদিকে গত দুইবার মূল হজ ও প্রায় দেড় বছর ওমরাহ পালন বন্ধ থাকার পর এবার সৌদি সরকার ওমরাহ পালনের অনুমতি দিলেও করোনা পরিস্থিতির বিধি-নিষেধে হজ পালনে জটিলতা রয়েই যাচ্ছে। এছাড়া প্রাথমিক ঘোষণা মিললেও একবারে একই দেশ থেকে কতজন ওমরাহে যেতে পারবে এবং তাদের কি কি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে যেতে হবে সে ব্যাপারে এখনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে হজ সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলো।