জাতীয়

তলিয়ে যেতে পারে সিলেটের বিদ্যুৎকেন্দ্র


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

সিলেটে বিদ্যুৎকেন্দ্র তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা, কাজ করছে সেনাবাহিনী স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় সিলেটের বেশকিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে সিলেটের কুমারগাঁওয়ের বিদ্যুতের গ্রিড লাইনের সাব স্টেশনে। এতে পুরো সিলেট ও সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় সিলেটের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) ও বিদ্যুৎ বিভাগ।

শুক্রবার (১৭ জুন) দুপুর থেকে কুমারগাঁও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের চারপাশে বালির বস্তা দিয়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করেন সিলেট সেনানিবাসের সেনা সদস্যরা। এছাড়া সিলেট সিটি করপোরেশনের সাকার মেশিন দিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ঢুকে পড়া পানি শুকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

ঘটনাস্থল থেকে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে কুমারগাঁও সাব স্টেশন তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। এটি তলিয়ে গেলে পুরো সিলেট বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়বে। এতে যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। তাই আমরা এই কেন্দ্রটি চালু রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি। যাতে অন্তত নগরের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে। সিটি করপোরেশন, সেনাবাহিনী ও বিদ্যুৎ বিভাগ একসঙ্গে মিলে এই কেন্দ্র সচল রাখার চেষ্টা করছি।’

মেয়র বলেন, ‘এ মুহূর্তে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি কুমারগাঁও বিদ্যুৎ স্টেশনকে। আর ৫-৬ ইঞ্চি পানি বাড়লে এই কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে। এই কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন না হলে গোটা সিলেট বিভাগের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে। এমনটি হলে কার্যত সিলেট বন্যার ক্ষতির পাশাপাশি বড় ধরনের সংকটে পড়বে।’

বিদ্যুৎ বিভাগের সিলেট অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল কাদির বিকেলে বলেন, ‘বুধবার (১৫ জুন) রাতেই কুমারগাঁও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে পানি ঢুকে পড়েছে। আর চার ইঞ্চি পানি বাড়লেই এই কেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হবে। এরই মধ্যে ভয়াবহ বন্যার কারণে সুনামগঞ্জ, ছাতক, কোম্পানীগঞ্জসহ কয়েকটি এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কুমারগাঁও উপকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেলে পুরো সিলেট বিদ্যুৎহীন হয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি কেন্দ্রটি সচল রাখার। বালির বস্তা দিয়ে কেন্দ্রের চারপাশে বাঁধ দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রে ঢুকে পড়া পানি সেচে সরানোর চেষ্টা করছে সিসিক। সেনাবাহিনী ও সিটি করপোরেশন আমাদের এ কাজে সহযোগিতা করছে।’

শুক্রবার দুপুরে কুমারগাঁও সাব স্টেশন পরিদর্শনে যান সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান। তিনি বলেন, বন্যায় সিলেটের সবগুলো উপজেলাই বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। অনেক এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। সিলেট নগরে যাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখা যায় আমরা সেই চেষ্টা করছি।

এদিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের গণসংযোগ বিভাগ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সিলেটের কুমারগাঁও বিদ্যুৎ স্টেশন এলাকা বন্যাকবলিত হওয়া ঠেকাতে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সার্বিক পরিস্থিতি অবলোকন করে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণে সিলেট জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর সহায়তা নেন। শুক্রবার দুপুর থেকে সেখানে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজ চলছে।

কুমারগাঁও বিদ্যুৎ স্টেশন থেকে ন্যাশনাল পাওয়ার গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এখানে সরবরাহ বন্ধ হলে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহে সংকট দেখা দেবে। পাশাপাশি সিলেট অঞ্চল পুরোটা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দেবে। এরই মধ্যে একাংশ বন্যাকবলিত হওয়ায় সিলেট নগরের একাংশ ও সুনামগঞ্জ জেলা বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে।

বিদ্যুৎ স্টেশনের সংশ্লিষ্টরা জানান, যেসব যন্ত্রপাতি রয়েছে, সেগুলো বন্যাকবলিত হয়ে পড়লে পুনরায় মেরামত সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এজন্য কোনোভাবে যেন পানি না ঢুকে পড়ে সে ব্যবস্থা করার কাজ চলছে।