প্রধান পাতা

ধর্ষণের পর দাঁত ভেঙে ফেঁড়ে ফেলা হয় পেট!


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

টাঙ্গাইলের সখীপুরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর এক নারীকে গণধর্ষণের পর চারটি দাঁত ভেঙে ফেলা হয়েছে। এতেও ক্ষান্ত হয়নি ধর্ষকরা।

ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে যৌনাঙ্গ, পেট এবং পায়ুপথ। সারা শরীর জুড়ে রয়েছে পাশবিক নির্যাতনের ছাপ। এমন নির্যাতনের চিহ্ন দেখে চিকিৎসকও শিউরে উঠেছেন।  

গত বৃহস্পতিবার (১০ জুন) রাতে দিনা সরকার, মন্টু সরকার এবং সবদুল মিয়া নামে তিনজন হাতিবান্ধা ইউনিয়নের গ্রামে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ওই নারীর বাড়িতে যান। তারা তাকে ডেকে পাশের বনে নিয়ে ধর্ষণ ও নির্যাতন করেন। এসময় তিনজন মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। পরদিন শুক্রবার সকালে ওই নারীকে উদ্ধার করে প্রথমে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক রেহানা পারভীন জানান, ওই নারীর বয়স আনুমানিক ৪০/৪৫ হবে। তার সারা শরীরে জখম, কয়েকটি দাঁত ভেঙে ফেলা হয়েছে। যৌনাঙ্গ থেকে পেট পর্যন্ত এবং পায়ুপথ ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে।  

এসময় তিনি জানান, ১৩ বছর ধরে নির্যাতনের শিকার নারীদের পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন। এমন নির্মম নির্যাতন আগে কখনো দেখেননি।

গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটায় তাদের আদালতে পাঠানো হয়।  

এদিকে ধর্ষকদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে টাঙ্গাইলে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় জানান, সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে নাগরপুর ও মির্জাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতাররা হলেন-সখীপুরের বড়চালা গ্রামের প্রকাশ সরকারের ছেলে দিনা সরকার (৩০) ও মৃত নারায়ণ সরকারের ছেলে মন্টু সরকার (৩২)। দুই আসামিও কোচ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সম্প্রদায়ের।

পুলিশ সুপার বলেন, মামলা দায়ের হওয়ার পর গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) ওসি সাজ্জাদ হোসেনের নেতৃত্বে কয়েকজন সদস্যের সমন্বয়ে একটি চৌকস টিম ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মির্জাপুর ও নাগরপুর থেকে আসামিদের মধ্যে দুইজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে তারা আদালতে জবানবন্দি দিতে সম্মতি প্রকাশ করেছে। মামলার অপর আসামি সবদুল মিয়াকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় এ ঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।  

টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ কোচ আদিবাসী ইউনিয়ন ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে। মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ কোচ আদিবাসী ইউনিয়নের যুগ্ম-আহ্বায়ক রতন কুমার রায় ও বিশ্বজিৎ কোচ, ঘাটাইল উপজেলার শাখার সভাপতি পরিমল চন্দ্র কোচ, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অলিক মৃ, বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি জন যেত্রা প্রমুখ।

সখীপুরের গণধর্ষণের ঘটনায় দুইজন গ্রেফতার হলেও একজন এখনো গ্রেফতার হয়নি। তাকে দ্রুত গ্রেফতার এবং গণধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বক্তারা।

গত বৃহস্পতিবার (১০ জুন) টাঙ্গাইলের সখীপুরে দিবাগত রাত দেড়টার দিকে হাতীবান্ধা ইউনিয়নের বাজাইল বড়চালা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর এক নারীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। এছাড়াও ওই নারীর শরীরের বিভিন্নস্থানে কামড়ে জখম করা হয়। ভেঙে ফেলা হয় তার কয়েকটি দাঁত, ছিঁড়ে ফেলা হয় যৌনাঙ্গ, পায়ুপথ ও পেট। আহত নারীকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।  

ধর্ষণের শিকার নারীর চিকিৎসার খোঁজ খবর নিয়েছেন জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি। ওই নারীর চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তাও দিয়েছেন।

রোববার (১৩ জুন) বিকেলে আহত ওই নারী বাদী হয়ে বড়চালা গ্রামের দিনা সরকার (৩৪), মন্টু সরকার (৩২) এবং সবদুল মিয়াকে (৩৮) আসামি করে সখীপুর থানায় মামলা করেছেন।