চট্টগ্রাম

মেগাপ্রকল্পের স্বপ্ন চট্টগ্রাম ওয়াসার


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

পানি উৎপাদনের সর্ববৃহৎ একটি প্রকল্প নিয়ে এগুচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এটিই হবে ওয়াসার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রকল্প। এটির উৎপাদন ধরা হয়েছে দৈনিক ৯০ কোটি লিটার। প্রকল্পটির মাধ্যমে মেঘনা নদী থেকে পানি উত্তোলন করে প্রথম পর্যায়ে মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরীতে ও সীতাকুণ্ড  এলাকায় এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে চট্টগ্রাম শহরে পানি সরবরাহ দেওয়া হবে। প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে ওয়াসাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ওয়াসা প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য আইডব্লিউএম’কে (ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং) দায়িত্ব দিয়েছে।
ওয়াসা সূত্র জানায়, ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রাম ওয়াসার বর্তমানে পানি উৎপাদন ক্ষমতা দৈনিক ৫০ কোটি লিটার। কিন্তু বর্তমানে উৎপাদন করতে পারে ৪০ থেকে ৪৩ কোটি লিটার। ওয়াসার বর্তমানে সবচেয়ে বড় দুইটি প্রকল্প হচ্ছে শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার-১ ও ২। এ দুইটি প্রকল্পের পানির ধারণ ক্ষমতা দৈনিক ২৮ কোটি লিটার। কিন্তু এবার সবকিছু ছাপিয়ে ওয়াসা সর্ববৃহৎ এই প্রকল্পটি গ্রহণ করতে যাচ্ছে। প্রকল্পের মাধ্যমে চাঁদপুর সদরের পুরাতন বড় স্টেশন এলাকায় পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মোহনাকে পানি উত্তোলনের বিকল্প স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। সেখান থেকে পানি নিয়ে আসতে পাইপলাইন বসাতে প্রাথমিক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে দুটি পথ নির্ধারণ করেছে ওয়াসা। এর মধ্যে চাঁদপুর, কুমিল্লার লাকসাম, চৌদ্দগ্রাম, ফেনী, মিরসরাই, সীতাকুণ্ড হয়ে চট্টগ্রাম শহর পর্যন্ত একটি লাইন। এটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৩২ কিলোমিটার। অপরটি হচ্ছে চাঁদপুর, কুমিল্লার লাকসাম, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ, ফেনী, মিরসরাই, সীতাকুণ্ড হয়ে চট্টগ্রাম শহর। এটির দৈর্ঘ্য ১২৬ কিলোমিটার। বর্তমানে ২টি লাইনের স্থানের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ করছে আইডব্লিউএম। প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে দৈনিক ৪৫ কোটি লিটার এবং দ্বিতীয় পর্যায়েও সমান সংখ্যক উৎপাদন নির্ধারণ করে প্রকল্প প্রণয়নে কাজ চলছে। প্রথম পর্যায়ের প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হচ্ছে ১২ থেকে ১৩ হাজার কোটি টাকা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, ‘চট্টগ্রাম ওয়াসা আগামী ৩০ থেকে ৪০ বছর সামনে রেখে কাজ করছে। বর্তমানে হালদা ও কর্ণফুলী নদী থেকে পানি উত্তোলন করে চট্টগ্রাম শহরে সরবরাহ করে ওয়াসা। আগামীতে কোনো কারণে এ দুটি নদীতে সমস্যা দেখা দিলে শহরে পানি সরবরাহে ব্যাপক বিঘ্ন ঘটতে পারে। তাছাড়া
মিরসরাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরীকে ঘিরে শহরের পরিধি ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। সীতাকুণ্ড ও মিরসরাইতে প্রচুর বসতি ও শিল্প কারখানা হবে। তাই এসব এলাকায় প্রচুর পানির চাহিদা হবে। তাই বিষয়টি মাথায় রেখে ওয়াসা মেঘনা নদী থেকে পানি আনতে একটি প্রকল্প গ্রহণ করছে। এজন্য দৈনিক ৯০ কোটি লিটার পানি উৎপাদন ক্ষমতার প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ করছে আইডব্লিউএম। প্রথম পর্যায়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হচ্ছে ১২ থেকে ১৩ হাজার কোটি টাকা।’
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ বলেন, ‘ওয়াসার ইতিহাসে সর্ববৃহৎ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে স্টাডির কাজ চলছে। খুব সহসা এ কাজ শেষ হলে প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করবে ওয়াসা। প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ে মিরসরাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরী ও সীতাকুণ্ড এলাকায় পানি সরবরাহ এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে চট্টগ্রাম শহরেও পানি নিয়ে আসা হবে।’
প্রসঙ্গত মিরসরাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরী ও সীতাকুণ্ড এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উভয় পাশে রপ্তানিমুখী অনেক শিল্পকারখানা গড়ে উঠছে। বন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার সুবিধার কারণে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা মহাসড়কের পাশের এই এলাকাকে প্রাধান্য দিচ্ছে। নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠার জন্য বিনিয়োগকারীরা জায়গা কিনে কাজ করছে। তবে এসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানি সংকট রয়েছে। সংকট নিরসনে চট্টগ্রাম ওয়াসা সরকারের উচ্চ মহলের নির্দেশে এ প্রকল্প গ্রহণ করেছে।