লাইফ স্টাইল

ময়লার স্তূপে জীবিকার সন্ধানে ওরা


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

বগুড়া সদর উপজেলার হাড্ডিপট্টি রেললাইন সংলগ্ন এলাকায় বসবাস করে ওরা। জরিপ, বৃষ্টি, মিষ্টি, বৈশাখী, জলিল, সজিব, আমিন, নাদিম ও শাওন; কারো বয়স পাঁচ, আবার কেউ কেউ পেরিয়েছে ১০।

স্থানীয় একটি প্রাইমারি স্কুলে পড়লেও অভাবী ঘরের সন্তান ওরা। সার্বক্ষণিক তাদের তাড়িয়ে বেড়ায় অভাব। মা-বাবার সামান্য আয়ে ঠিকভাবে দু’মুঠো খাবার জোটে না।
সকাল হলেই তাই পলিথিনের বস্তা নিয়ে ছুটতে হয়। ময়লার ভাগাড় কিংবা ডাস্টবিনে ফেলে রাখা আবর্জনার স্তূপে দেখা মেলে ওদের। দলবেঁধে এসব স্থান থেকে কাগজ, প্লাস্টিক ও কাচের কৌটা, বোতল, কার্টন, লোহার টুকরোসহ হাড়গোড় কুড়ায় ওরা। সেসঙ্গে ডাস্টবিনের পাশে একসঙ্গে খেলা করে।

পরিচ্ছন্নকর্মীদের ভ্যান নিয়ে আসার অপেক্ষা করে। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে তাদের খোঁজাখুঁজি। এরপর বিকেলে বস্তা ভরে চলে যায় মহাজনের ঘরে। ওজন মেপে বিক্রি করে ওরা। এ থেকে ২০-৫০ টাকা যা পায়, তাই আয়। সেই টাকা নিয়ে ঘরে ফেরে তারা। আয়ের সিংহভাগ তুলে দেয় মা-বাবার হাতে। বাকিটা নিজেরা খরচ করে।

মিষ্টি জানায়, তার বয়স ১২ বছর। বাবার নাম রফিকুল ও মায়ের নাম ফাতেমা। প্রথম শ্রেণিতে পড়ে মিষ্টি। কিন্তু করোনার জন্য স্কুলে যেতে পারছে না সে। তার  মা ঝিয়ের কাজ করেন। বাবা শহরে রিকশাচালান। সেও মা-বাবার সঙ্গে রেলস্টেশন এলাকায় ঝুপড়ি ঘরে থাকে।  

এসব শিশুদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন কাকডাকা ভোরে ময়লার ভাগাড়ে ছুটতে হয় ওদের। সেখান থেকে প্রচুর দুর্গন্ধ আসে। কিন্তু কিছুই যেন করার নেই তাদের। মাঝেমধ্যে অনেকে তাদের খাবার ও টাকা দিয়ে যায় বলে জানায় তারা।

বগুড়া সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সামির হোসেন মিশু বলেন, শিশুশ্রম কোনোভাবেই আমাদের কাম্য নয়। অভাবের তাড়নায় অনেক শিশুই ময়লার ভাগার বা ডাস্টবিনে ফেলে রাখা আবর্জনার স্তূপে কাগজ, প্লাস্টিক ও কাচের কৌটা, বোতল, কার্টন, লোহার টুকরো কুড়ায়। এটি তাদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতি। এতে যেকোনো ধরনের সংক্রমণ ব্যাধি ও ইনফেকশন হতে পারে। আমাদের সমাজে অনেক শিশুকে ভিক্ষা করতেও দেখা যায়। সেক্ষেত্রে খতিয়ে দেখা উচিত তাদের দিয়ে কেউ জোরপূর্বক এমন কাজ করায় কিনা।

তিনি বলেন, শিশুশ্রম বা সব ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ থেকে সামাজিকভাবে এসব শিশুদের সুরক্ষা করতে হবে। যদি তাদের পরিবারে অভিভাবক থাকে তাদের সঙ্গে কথা বলে এদের পুনর্বাসন করতে হবে। প্রয়োজনে শিশুপল্লিতে তাদের থাকার ব্যবস্থাসহ শিক্ষাদান শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে।