আন্তর্জাতিক

স্ত্রী নিখোঁজের তথ্য লুকাতে বান্ধবীকে খুন করেন মার্কিন ধনকুবের


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

বান্ধবীকে হত্যার মামলায় মার্কিন ধনকুবের রবার্ট ডার্স্টকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। স্থানীয় সময় গত শুক্রবার দেশটির ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেসের আদালতে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ডার্স্টের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি প্রমাণিত হয়। আগামী ১৮ অক্টোবর এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করা হয়। রায়ে ৭৮ বছর বয়সী এই আবাসন ব্যবসায়ীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। খবর বার্তা সংস্থা এএফপির।

২০০০ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসের নিজ বাড়িতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সুসান বারম্যান। তিনি ডার্স্টের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এরও বেশ কিছু সময় আগে থেকে নিখোঁজ ছিলেন ডার্স্টের স্ত্রী ক্যাথলিন। পুলিশের কাছে নিখোঁজ স্ত্রীর বিষয়ে সুসান তথ্য দিতে পারেন—এমন আশঙ্কা ছিল ডার্স্টের। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি সুসানকে গুলি করে হত্যা করেছিলেন বলে আদালতে প্রমাণিত হয়েছে।

সুসানকে হত্যার আগে থেকেই নিখোঁজ ছিলেন ডার্স্টের স্ত্রী ক্যাথলিন। এখনো তাঁর সন্ধান মেলেনি। তাঁকে মৃত হিসেবেই ধরে নিয়েছে পুলিশ। স্ত্রী নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় আগে থেকেই সন্দেহের তালিকায় ছিলেন ডার্স্ট। তবে হাতে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ না থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ গঠন করেনি পুলিশ। সে সময় ধরা পড়েনি সুসানের হত্যাকারীও।

এ নিয়ে ডার্স্ট প্রথমে পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলেও পরে নাটকীয়ভাবে ঘটনা ভিন্ন দিকে মোড় নেয়। সে সময় টেলিভিশন চ্যানেল এইচবিওতে ডার্স্টের জীবনী নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি নির্মাণ করা হচ্ছিল। তাতেই ডার্স্টের গোপন কথোপকথন প্রকাশিত হয়। গোপন মাইক্রোফোনে তাঁর অপরাধের স্বীকারোক্তি শোনা যায়। ওই বক্তব্য গোপনে রেকর্ড করেছিল এইচবিও।

২০১৫ সালের মার্চে এসে ডার্স্টের জীবনী নিয়ে ওই ডকুমেন্টারির শেষ পর্ব প্রচার করা হয়। সেখানে সম্প্রচার করা হয় তাঁর অজান্তে রেকর্ড হয়ে যাওয়া ওই কথাগুলো। এর ঠিক আগমুহূর্তে মার্কিন এই ধনকুবেরকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অরলিন্স শহরের একটি হোটেল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে শুধু ক্যাথলিনের নিখোঁজ কিংবা সুসানের হত্যাকাণ্ডই নয়, এইচবিওর ডকুমেন্টারিতে উঠে আসে মরিস ব্ল্যাক নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুর সঙ্গে ডার্স্টের সংশ্লিষ্টতাও। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে তিনি ডার্স্টের প্রতিবেশী ছিলেন। তাঁকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন ডার্স্ট। আদালতকে তিনি জানান, আত্মরক্ষা করতেই সে সময় এমনটি করেছিলেন। ওই মামলায় পর অবশ্য তাঁকে নিরপরাধ ঘোষণা করা হয়েছিল।

মামলার শুনানিতে আদালতকে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি জন লেউইন বলেন, ডার্স্ট যে তিনজনকেই হত্যা করেছেন, তার সপক্ষে ‘পাহাড়সমান প্রমাণ’ রয়েছে। স্ত্রী ক্যাথলিনের ওপর যে পারিবারিক সহিংসতা চালানো হয়েছে, তার দায় তাঁকে নিতে হয়নি। এমনকি স্ত্রীর মৃত্যু জন্যও তাঁকে কখনো দায়ী করা হয়নি। ২০ বছর কেটে গেল শুধু সুসানের হত্যাকাণ্ড নিয়ে।

জন লেউইন বলেছেন, ২০ বছর ধরে ডার্স্ট মরিস ব্ল্যাকের হত্যার দায় এড়িয়ে চলেছেন। আজকের এ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনজনের খুনি এই ব্যক্তি নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন।