চট্টগ্রাম

এসেছিলেন শাটলে চড়ে, ফিরেও গেছেন যুদ্ধ শেষে


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

১৯৮১ সাল থেকে পথচলা শুরু করে এখনও শিক্ষার্থীদের নিত্যসঙ্গী হিসেবে চলমান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাটল ট্রেন। শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন আসা যাওয়ার সময় বগির দেওয়ালে ‘ড্রাম’ চাপড়িয়ে উচ্চস্বরে গান গেয়ে সারা বগি মাতিয়ে রাখেন।

এই বগিতেই গান গাইতে গাইতে শিল্পী হয়ে উঠেছেন অনেকে। তাদের মধ্যে আছেন দেশের অন্যতম তারকা শিল্পী নকীব খান, পার্থ বড়ুয়া, এসআই টুটুলসহ আরও অনেকে। শুধু গান নয়, এই ট্রেনকে ঘিরে গড়ে ওঠেছে হাজারও গল্পকথা, অনেক প্রেম কাহিনী।

শাটল ট্রেন আর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় একসূত্রে গাঁথা। এই শাটল ট্রেনকে কেন্দ্র করেই রচিত হয় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাসি-কান্না, প্রেম-ভালোবাসা ও আনন্দ-বেদনার মহাকাব্য। এমন স্মৃতির অংশ হতে পরিবার নিয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা এসেছিলেন চবি ক্যাম্পাসে শাটলে চড়ে, ফিরেও গেছেন যুদ্ধ শেষে।

চবির ছয়টি ইউনিট ও উপ-ইউনিটে চার হাজার ৯২৬টি আসনের জন্য এবার আবেদন করেছেন এক লাখ ৮৩ হাজার ৮৬৩ জন শিক্ষার্থী। সে হিসাবে প্রতি আসনের বিপরীতে লড়বেন ৩৭ জন শিক্ষার্থী।

বুধবার (২৭ অক্টোবর) ‘বি’ ইউনিটের দুই পর্বের (সকাল-বিকেল) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম শিফটে পরীক্ষা সকাল ১১টায় শুরু হয়ে শেষ হয় বেলা ১২টায়। এই ইউনিটে ১ হাজার ২২১টি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছেন ৪২ হাজার ৬৬৮ জন শিক্ষার্থী।

চবি ক্যাম্পাস চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে। তাই ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা যানজটমুক্ত পরিবেশে নির্বিঘ্নে ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়া করতে বেছে নেন শাটল ট্রেন।

পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে বিশেষ শাটল ট্রেনের ব্যবস্থা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।  ৫ নভেম্বর পর্যন্ত এই বিশেষ শাটল সার্ভিস চলবে। নগরীর বটতলী রেলস্টেশন থেকে যথাক্রমে সকাল ৬টায়, সাড়ে ৬টায়, সাড়ে ৭টা, ৮টা ১৫ মিনিটে, ৮টা ৪৫ মিনিটে, ১১টা ৪০ মিনিটে, দুপুর ১২ টায়, সাড়ে ১২টায়, বিকেল ৩টায়, ৪টায় এবং রাত সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন থেকে যথাক্রমে সকাল ৭টা ৫ মিনিটে, সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে, সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে, সকাল ৯টা ২০ মিনিটে, সকাল ১০টায়, দুপুর ১টায়, দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে, বিকেল ৩টায়, বিকেল ৫টায়, বিকেল সাড়ে ৫টা এবং রাত ৯টা ১০ মিনিটে নগরীর বটতলীর উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে।  

এ দুই উপ-ইউনিটের ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে চারুকলা ইনস্টিটিউট (১৫ নভেম্বর), নাট্যকলা বিভাগ (১৬ নভেম্বর), সংগীত বিভাগ (১৮ নভেম্বর) এবং ফিজিক্যাল অ্যাডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগ (২০ ও ২১ নভেম্বর)।

সব ট্রেনই ঝাউতলা, ষোলশহর, ক্যান্টনমেন্ট, চৌধুরীহাট, ফতেয়াবাদ স্টেশনে কিছুক্ষণ থেমে বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে যাচ্ছে। প্রতিটি ট্রেন বটতলী রেল স্টেশন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে আসতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় লাগছে।

২৮ অক্টোবরও অনুষ্ঠিত হবে ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা। ২৯ অক্টোবর ‘সি’ ইউনিট, ৩০ ও ৩১ অক্টোবর ‘ডি’ ইউনিট এবং ১ ও ২ নভেম্বর ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া ৫ নভেম্বর উপ-ইউনিট ‘বি-১’ ও ‘ডি-১’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে ক্যাম্পাসে পুলিশ, র‌্যাব, ডিবি, ডিএসবিসহ পাঁচ থেকে সাত শতাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।  

জালিয়াতি ঠেকাতে ডিজিএফআই, এনএসআইসহ গোয়েন্দা সংস্থাসহ ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে রয়েছে। এছাড়াও শাটল ট্রেনসহ স্টেশনগুলোতে রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনী নিয়োজিত আছে। যদি কোনও ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীকে র‌্যাগ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও শিক্ষার্থী জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন চবি প্রক্টর ড. রবিউল হোসাইন ভূঁইয়া।