জাতীয়

লঞ্চটিতে ছিল না অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, নেওয়া হয়েছিল বেশি যাত্রী


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৩৯ মৃত্যুর ঘটনায় অভিযান-১০ লঞ্চটি ধারণক্ষমতার বেশি যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে বরগুনার উদ্দেশে রওনা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। যাত্রীরা জানান, একই সঙ্গে লঞ্চের ভেতরে অগ্নিনির্বাপণের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। অগ্নিনির্বাপণের জন্য গ্যাস সিলিন্ডার থাকলেও সেগুলো ছিল বিকল।

বিআইডব্লিউটিএ থেকে জানানো হয় ৩১০ যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে বরগুনা যাচ্ছিল লঞ্চটি। আর যাত্রীরা বলছেন প্রায় ১ হাজারের মতো যাত্রী ছিল লঞ্চে। কর্তৃপক্ষের দাবি লঞ্চটির ধারণক্ষমতা ৯০০ জন।

লঞ্চ থেকে প্রাণে বেঁচে ফিরে আসা যাত্রী সাদিক জানান, লঞ্চটি ঢাকা থেকে ছাড়ার পরপরই লঞ্চের ফ্লোর গরম হতে থাকে। এ সময় লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি যাত্রীরা জানালেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বরং যাত্রীদের নিবৃত্ত করে কম্বল বিছিয়ে দিয়েছিল ফ্লোরে। এরপর ক্রমান্বয়ে গরম হতে থাকলেও শীতের তীব্রতার কারণে তা টের পায়নি যাত্রীরা। তবে শুরুতে যখন লঞ্চটি গরম হচ্ছিল তখন ব্যবস্থা নিলে হয়তো এত প্রাণহানি দেখতে হতো না।

আরেক যাত্রী মোশারফ বলেন, ‘আমি ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে বরগুনা যাচ্ছিলাম। লঞ্চে দেরিতে আসার কারণে কেবিন না পাওয়ায় নিচ তলার ডেকে অবস্থান নিয়েছিলাম। যখন গরম হতে শুরু করে তখন সেখান থেকে সরে গিয়ে লঞ্চের সম্মুখভাগে যাই। এরপর মাঝখানে একবার ঘুমিয়ে পড়ি। হঠাৎ মানুষের চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায়। এরপর শুনতে পাই বিস্ফোরণে লঞ্চে আগুন লেগেছে তাৎক্ষণিক লাফিয়ে নদীতে পড়ে তীরে সাঁতরে উঠি। এরপর স্থানীয়দের মাধ্যমে স্বজনদের খবর দিলে তারা গিয়ে আমাকে নিয়ে আসে।’

সূত্র জানায়, ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে আগুন লাগা এমভি অভিযান-১০ লঞ্চটি বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে ছাড়ার সময় ৩১০ যাত্রীর ঘোষণা দেয়। তবে এর দ্বিগুণেরও বেশি যাত্রী ছিল লঞ্চটিতে।

জানা গেছে, নৌপথে দক্ষিণাঞ্চলের ঢাকা-বরগুনা রুটের যাত্রী পরিবহনে বছর দু-এক আগে চালু হয় বিলাসবহুল এমভি অভিযান-১০ লঞ্চ। বরিশালসহ, বরগুনার, বেতাগী কাঁকচিড়া ঘাটে যাত্রী আনা-নেওয়া করত নৌযানটি। মাত্র দিন ১৫ আগে মেরামতের কাজ হয় জলযানটিতে। এরপর চারটি ট্রিপ সম্পন্ন করে ৯০০ যাত্রী ধারণক্ষমতার লঞ্চটি।

অভিযান-১০ লঞ্চে চলাচলকারী বেশির ভাগ যাত্রী বরগুনা জেলা ও এর আশপাশের এলাকার। আগুনের ঘটনায় হতাহতের বেশির ভাগই বরগুনা জেলার বলে জানান স্বজনরা।

এ বিষয়ে লঞ্চ মালিক হাম জালালের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। বরগুনা পাবলিক পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক মো. হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, ‘লঞ্চটি এর আগেও একবার চরে উঠিয়ে দিয়েছিল। আমার মনে হয় লঞ্চ কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এতগুলো নিরীহ প্রাণ একসঙ্গে মারা গেল।